পড়ে রয়েছে গাছ। —নিজস্ব চিত্র।
রবীন্দ্র সরোবরে পড়ে আছে এক বছর আগে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ। প্রক্রিয়াগত জটিলতার ফাঁসে আটকে গিয়েছে গাছ সরানোর কাজ। কবে গাছগুলি সরানো হবে তার কোনও স্পষ্ট ঈঙ্গিত মেলেনি। অসুবিধায় পড়েছেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। ব্যাহত হচ্ছে রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়ন।
কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-র এক আধিকারিক জানান, রাজ্য বন দফতরের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত সরোবরের কোনও গাছ সরানো যায় না। তাই গাছগুলি সরোবরেই পড়ে আছে। গাছের গুঁড়ি কেটে মাঠে রাখা আছে। কেআইটি কর্তৃপক্ষ কিছু দিন আগেও রাজ্যের ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে এই গাছ সরানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কয়েকটি গাছ সরানোও হয়েছিল। এর জন্য কেআইটি অর্থও দিয়েছিল। পরে আরও কয়েকটি গাছ সরানোর জন্য চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি বলে কেআইটি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
রবীন্দ্র সরোবরের নানা জায়গায় গাছের গুঁড়ি এবং ডালপালা ডাঁই করে রাখা রয়েছে। কেআইটির এক আধিকারিক জানান, সরোবরের যে কোনও গাছ সরাতে বা কাটতেও বন দফতরের অনুমতির প্রয়োজন। অনেক সময় কোনও গাছ বিপজ্জনক হয়ে পড়লে সেগুলি জরুরি ভিত্তিতে কেটে ফেলা হয়। তবে, সেক্ষেত্রেও আগে কিংবা পরে বন দফতরের অনুমতি নিতে হয়। ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছগুলি বন দফতরের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত সরানো যায় না। এ ছাড়াও, কেআইটির গাছ রাখার নিজস্ব কোনও জায়গা নেই। ঝড়ে গাছ পড়ে গেলে বনদফতরের অনুমতি নিয়ে গাছ কেটে দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করতে হয়। গত এক বছরে যে গাছগুলি পড়েছে সেগুলির বিপজ্জনক অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। কেটে ফেলা অংশও উদ্যানেই রাখা আছে। এ বছর এখনও বড় ঝড় আসেনি। পড়ে থাকা গাছগুলি সরানো না হলে বড় ঝড় এলে সমস্যা আরও বাড়বে বলে কেআইটি কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা।
ইতস্তত গাছের ডাল পড়ে থাকার ফলে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের হাঁটতে অসুবিধা হয়। কেআইটি কর্তৃপক্ষ জানান, ডালপালা ভেঙে পড়লে রাস্তা পরিষ্কার করতে সময় লাগে।
তাই প্রাতর্ভ্রমণকারীদের অসুবিধা হতে পারে।
ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, আয়লা এবং কালবৈশাখীর পরে গাছ সরানো হয়েছিল। বন দফতরকে জানিয়ে এই কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু বাকি গাছগুলি সরানোর ব্যাপারে এখনও বনদফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ফলে আটকে রয়েছে কাজ। কেআইটি কর্তৃপক্ষকে বন দফতরের অনুমতি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
রাজ্য বন দফতরের কনজারভেটর (আর্বান ফরেস্ট্রি) নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, “নিয়মানুযায়ী, বন দফতরের অনুমতি ছাড়া ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা অন্যান্য সংস্থা গাছ সরাতে পারে না। বিপজ্জনক কোনও গাছ দ্রুত সরানো যেতে পারে। তার পরে গাছ সরানোর ব্যাপারে বন দফতরের অনুমতির প্রয়োজন। আগের বার নিশ্চয়ই অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। এ বার অনুমতি চাওয়া হয়েছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখব।”