অভিজিত্‌ অপসারণে আচার্যকে আর্জি সূর্যকান্তের

ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক-শিক্ষিকারা তো উপাচার্য অভিজিত্‌ চক্রবর্তীর ইস্তফার দাবিতে অনড় আছেনই। এ বার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ঠিক মুখে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে আচার্য-রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৩
Share:

ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক-শিক্ষিকারা তো উপাচার্য অভিজিত্‌ চক্রবর্তীর ইস্তফার দাবিতে অনড় আছেনই। এ বার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ঠিক মুখে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে আচার্য-রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও।

Advertisement

অনেক টানাপড়েনের পরে আচার্যের হস্তক্ষেপে যাদবপুরের সমাবর্তন ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরেই হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু তাতে জট পুরোপুরি কাটেনি। কারণ, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধেও শিক্ষক সংগঠন জুটা সমাবর্তন বয়কটের সিদ্ধান্তে অটল।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে সূর্যবাবুর লেখা চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আঘাত বলেই মনে করছেন শিক্ষকদের অনেকে। এর আগে অনেক শিক্ষক, এমেরিটাস অধ্যাপক এবং পড়ুয়ারা অভিজিত্‌বাবুকে স্থায়ী উপাচার্য না-করার জন্য আচার্যের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তবু কার্যত রাজ্য সরকারের চাপে অভিজিত্‌বাবুকেই স্থায়ী উপাচার্য করা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলের অভিযোগ।

Advertisement

কেন অভিজিত্‌বাবুর ইস্তফা চান সূর্যবাবু? রাজ্যপালকে সূর্যবাবু লিখেছেন, “অভিজিত্‌বাবু যাদবপুরের সুনাম স্থায়ী ভাবে নষ্ট করেছেন। যদি তিনি নিজেই পদত্যাগ করতেন, তাঁর পক্ষে সেটা সম্মানজনক হতো। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ওঁকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।” সূর্যবাবু আগেও অভিজিত্‌বাবুর পদত্যাগ চেয়েছেন। এ বার আচার্যকে লেখা চিঠিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের তিনটি ধারায় অপসারণ চেয়েছেন তিনি। সেই সব ধারা বলছে: ক্ষমতার অপব্যবহার, পদে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি করা, আর্থিক নয়ছয়, যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন না-করা ইত্যাদি কারণে উপাচার্যকে সরিয়ে দিতে পারেন আচার্য।

সূর্যবাবুর চিঠির ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হলে উপাচার্য ফোন কেটে দেন। এসএমএসেরও জবাব দেননি। আর শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, “সূর্যবাবুরা খোদ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছেন। তিনি যে অভিজিত্‌বাবুর পদত্যাগ চাইবেন, তাতে আশ্চর্যের কী আছে! তবে কাউকে সরানো যে এত সহজ নয়, তা সূর্যবাবুও জানেন।”

পার্থবাবুর দল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা এ দিনই উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়ে জানায়, সমাবর্তন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তার জন্য তারা সব রকম সহযোগিতা করবে। স্মারকলিপির সঙ্গে ১০০ শিক্ষকের সই জমা দেওয়া হয়েছে বলে ওয়েবকুপা-র দাবি। জুটা-র সিদ্ধান্তের নিন্দাও করেছে ওয়েবকুপা। অসহযোগিতার জন্য জুটা-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন উপাচার্যও। তাঁর কথায়, “নীতিহীনতায় ভুগলেই একটি সংগঠন ব্যক্তিগত আক্রমণের পথ ধরে। কিন্তু এ ভাবে শিক্ষক আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার অধিকার কারও নেই।” সমাবর্তনে যোগদান সব শিক্ষকের দায়িত্ব বলে উপাচার্যের মত। বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য জুটা-কে তিনি অনুরোধ করবেন না জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য।

সূর্যবাবুর চিঠি নিয়ে জুটা কিছু বলতে চায়নি। তবে অভিজিত্‌বাবুর অপসারণের দাবিতে এ দিন যাদবপুরে সভা করে তারা। ওই সংগঠন বলেছে, সমাবর্তন বয়কটের সঙ্গে সঙ্গে ২৩ তারিখ বিকেলে অবস্থানেও বসবে তারা। আর ওয়েবকুপা-র বক্তব্য, অভিজিত্‌বাবুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন