কংগ্রেস-তৃণমূল তরজায় উত্তপ্ত চিড়িয়াখানা চত্বর

দুই ইউনিয়নের শক্তি প্রদর্শনের মাসুল দিয়ে অশান্ত হল চিড়িয়াখানা চত্বর। শনিবার দুপুরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দুই কর্মী ইউনিয়নের এই ‘লড়াইয়ে’ কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে যায় চিড়িয়াখানার গেটও। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হস্তক্ষেপে টিকিট কাউন্টার খোলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০০:৪৫
Share:

(বাঁ দিকে) চলছে আইএনটিইউসির বিক্ষোভ। (ডান দিকে) গেট খুলতে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ।—নিজস্ব চিত্র।

দুই ইউনিয়নের শক্তি প্রদর্শনের মাসুল দিয়ে অশান্ত হল চিড়িয়াখানা চত্বর। শনিবার দুপুরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দুই কর্মী ইউনিয়নের এই ‘লড়াইয়ে’ কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে যায় চিড়িয়াখানার গেটও। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হস্তক্ষেপে টিকিট কাউন্টার খোলে। তবে ইউনিয়নবাজির এই দাপটে চিড়িয়াখানর মতো একটি জায়গার উপযুক্ত পরিমণ্ডল দূষিত হল কেন, সে প্রশ্নে কর্তৃপক্ষ বা ইউনিয়ন কারও কাছেই কোনও স্পষ্ট জবাব নেই।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত এ দিন দুপুর ১২টার কিছু আগে। আলিপুর চিড়িয়াখানার ঠিক পাশে মঞ্চ তৈরি করে, ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সভা করে তৃণমূলের আইএনটিটিইউসি। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেস প্রভাবিত আইএনটিইউসি চিড়িয়াখানা চত্বরে তোলাবাজি ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। একই সময়ে রাস্তার ওপারে ফুটপাথে একজোট হয়ে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন আইএনটিইউসি-র কর্মীরা।

আলিপুর চিড়িয়াখানায় বর্তমানে আইএনটিইউসি-র ইউনিয়ন সক্রিয় রয়েছে। ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রাকেশকুমার সিংহের পাল্টা অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের কিছু দুষ্কৃতী তাঁর দলের কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র এবং চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করছিল। তিনি বলেন, “তৃণমূল যদি ইউনিয়নে আসতে চায়, তবে তারা পদ্ধতি মেনে রেজিস্ট্রেশন করে লড়ে আসুক। এই ভাবে আমাদের দলের লোককে নিজের দলে টানার প্রতিবাদে নেমেছি আমরা।”

Advertisement

অভিযোগটি অস্বীকার করে আইএনটিটিইউসি। বরং আইএনটিইউসি-র কর্মীরাই তোলাবাজি ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

মন্ত্রী বলেন, “ইউনিয়নের নামে আইএনটিইউসি চিড়িয়াখানা দখল করে হকার, পার্কিং, নিরাপত্তারক্ষী সকলের থেকে তোলা তুলছে বলেও অভিযোগ আছে। আমরা কোনও সমাজবিরোধীকে প্রশ্রয় দেব না।” ভয় দেখিয়ে আইএনটিটিইউসি-তে যোগ দিতে জোর করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “গণতন্ত্রে যে যার সঙ্গে চলতে চাইবে, সে সেই দলেরই। ভয় দেখানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

চিড়িয়াখানায় পশুপাখিদের ঠিক মতো যত্ন হচ্ছে না বলেও এ দিন অভিযোগ তোলেন মন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা কানাইলাল ঘোষ বলেন, “পশুপাখিদের খাওয়ানোর সময়ে আমাদের কর্মীরা বা আমি নিজে উপস্থিত থাকি। অনিয়ম নিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। কীসের ভিত্তিতে মন্ত্রী এই অভিযোগ করেছেন, তা না জেনে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

সকালে চিড়িয়াখানা খোলা হলেও মিটিংয়ের সময়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে, চিড়িয়াখানায় ঢুকতে না পেরে বেশ কিছু ক্ষণ হয়রানির শিকার হতে হয় বহু দর্শককে। পরে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সাড়ে ১২টার কিছু পরে ফের টিকিট কাউন্টার খোলে। কিন্তু ইউনিয়ন নিয়ে দুই দলের তরজার জন্য টিকিট কাউন্টার বন্ধ হবে কেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। কানাইলালবাবুর বক্তব্য, এ কাজ নিয়ম মাফিক হয়নি। চিড়িয়াখানা নিরাপত্তার দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে। কেন তারা গেট বন্ধ করল, তা জানতে চাওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement