চোরেদের দাপটে সর্বদাই ত্রস্ত সল্টলেকবাসী। এ বার চোরেদের হাত থেকে রেহাই পেল না ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল)-এর মতো সংস্থাও। গত এক মাসে সল্টলেকের তিন জায়গায় সংস্থার কেব্ল চুরির জন্য বহু ব্লক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি অফিসে পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সংস্থার আর্থিক ক্ষতি ও ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এই কাণ্ড।
জুলাই মাসে বিএসএনএল-এর ল্যান্ডফোন পরিষেবা বন্ধ হওয়ার একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে কর্তৃপক্ষের কাছে। তদন্তে নেমে আধিকারিকেরা দেখেন, সিজিও কমপ্লেক্সের কাছে একটি জায়গা থেকে হ্যাক্সো দিয়ে প্রচুর কেব্ল কেটে নিয়ে গিয়েছে চোরের দল। সেই মাসেই সিটি সেন্টারের কাছে ফের একই ঘটনা ঘটে। দেখা যায়, যেখানে কেব্লের তার কাটা হয়েছে, সেখানে রয়েছে একটি হ্যাক্সোও।
তিন নম্বর চুরির ঘটনাটি ঘটে এফ ডি ব্লকে। এর জেরে গোটা দশেক ব্লকে মুখ থুবড়ে পড়ে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা। এমনকী, কয়েকটি সরকারি অফিস থেকেও বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিষেবা বন্ধ হওয়ার অভিযোগ জমা পড়ে।
অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সল্টলেক পুলিশ। বিএসএনএল-এর এক আধিকারিক জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’লক্ষ টাকার ১৩৫ মিটার কেব্ল চুরি গিয়েছে। এর জেরে বহু গ্রাহককে পরিষেবা দেওয়া যায়নি। তিনটি ক্ষেত্রেই চুরি হয়েছে জয়েন্ট চেম্বার থেকে (যেখানে দু’টি কেব্ল জোড়া দেওয়া হয়)।
তদন্তকারীদের মতে, সাধারণ দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে এত পরিমাণ কেব্ল চুরি করে পালানোর সাহস দেখাবে না। সে কারণে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের কেব্ল সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা।
বিএসএনএল-র সল্টলেক ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার নিলয় দত্ত বলেন, ‘‘তিন-তিন বার বিপুল পরিমাণে কেব্ল চুরি হওয়ায় সল্টলেকের বহু জায়গায় পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।’’ বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, এই চুরি সাধারণ চোরের কাজ নয় বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, মাটি খুঁড়ে জয়েন্ট চেম্বার থেকে কেব্ল কাটা এবং সেগুলি নিয়ে পালানো যে-সে লোকের কাজ হতে পারে না। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।