কলকাতাতেও কুয়ো খুঁড়েই চলে নির্মাণকাজ

কলকাতা পুর এলাকায় বহুতল তৈরিতে পাতকুয়োর ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়। তবে তা ব্যবহারে নিরাপত্তার দিকটা দেখতে হবে নির্মাণকারী সংস্থাকেই। এমনই কথা জানালেন পুরসভার বিল্ডিং দফতরের একাধিক ইঞ্জিনিয়ার। দমদমে পাতকুয়োয় পড়ে এক কর্মীর মৃত্যুকে ঘিরে এ দিন কলকাতা শহরের বিল্ডিং নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৪ ০১:৪৪
Share:

কলকাতা পুর এলাকায় বহুতল তৈরিতে পাতকুয়োর ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়। তবে তা ব্যবহারে নিরাপত্তার দিকটা দেখতে হবে নির্মাণকারী সংস্থাকেই। এমনই কথা জানালেন পুরসভার বিল্ডিং দফতরের একাধিক ইঞ্জিনিয়ার। দমদমে পাতকুয়োয় পড়ে এক কর্মীর মৃত্যুকে ঘিরে এ দিন কলকাতা শহরের বিল্ডিং নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় অজস্র বহুতল তৈরি হচ্ছে। পুর আইন অনুযায়ী বিল্ডিং শুরু করার আগে পুরসভার অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদনের অন্যতম শর্তই হল, ওই বিল্ডিং নির্মাণে জল ব্যবহারের জন্য টাকা (ওয়েট ওয়ার্ক চার্জ) দিতে হবে সংশ্লিষ্ট নির্মাণকারী সংস্থাকে। কিন্তু কোথা থেকে মিলবে ওই জল?

এ ব্যাপারে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক পদস্থ অফিসার জানান, বিল্ডিং নিয়মে বলা হয়েছে যেখানে পুরসভার সরবরাহ করা জলের লাইন রয়েছে, সেখানে ওই জল ব্যবহার করতে পারবে নির্মাণকারী সংস্থা। এর জন্য একটা চার্জও দিতে হবে। তবে যে এলাকায় পুরসভার জলের লাইন যায় না বা জলের চাপ কম সেখানে জলের অন্য ব্যবস্থা করে নিতে পারে প্রোমোটার বা নির্মাণ সংস্থা। এমনকী পাতকুয়োও ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্য ওই কুয়ো ব্যবহারে নিরাপত্তার ব্যাপারটা দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

Advertisement

যদিও পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক ডিজি বলেন, “আইনে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও, আমরা অবশ্য পাতকুয়োর ব্যবহার না-করার পরামর্শ দিই।” আসলে পাতকুয়োয় সবসময় একটা বিপদের আশঙ্কা থেকে যায় বলে মনে করেন ওই অফিসার। তাই পাইপ লাইনের জলের বিকল্প হিসেবে ট্যাঙ্কের মাধ্যমে জল কেনার কথাও বলা হয়।

কিন্তু বাস্তবে কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকায় বহুতল নির্মাণে পাতকুয়োর ব্যবহারই বেশি। এ ব্যাপারে পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, নির্মাণকারী সংস্থা পাতকুয়ো ব্যবহার বেশি পছন্দ করে। কিন্তু কেন?

ওই অফিসারের কথায়, “এখানে ২০ ফুট গভীরে জল মেলে। তাই পাতকুয়ো করে বিল্ডিংয়ের প্রয়োজনীয় জল তোলে। পরে ওই পাতকুয়ো ভেঙে সেপটিক ট্যাঙ্ক বা জলের ট্যাঙ্ক করতে সুবিধে হয়। ” এ ছাড়া আরও একটি সুবিধে রয়েছে পাতকুয়ো ব্যবহারে। তিনি জানান, কুয়ো হলেই পাম্পের সাহায্যে অনায়াসে নির্মাণ কাজের জল তোলা যায়। এতে কাজের গতিও বাড়ে।

তবে পাতকুয়োয় নিরাপত্তার ব্যাপারটা নিয়ে ততটা সতর্ক নয় নির্মাণকারী সংস্থা, মনে করেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। তাঁদের মতে, মাঝে মধ্যে কুয়োর লোক পড়ে গেলে হইচই হয়। কিছু দিন কেটে গেলেই সব চুপচাপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন