ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
চার হাজার সরা আঁকেন লক্ষ্মণ পাল
খোপেদার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল কুমোরটুলিতে, সে-ও প্রায় অনেকানেক ভিতরে। তাঁর কথায়— ‘স্যায় নকশাল সময়ে এইচি আর আজ এত বছর হল, কোথাও তো সরা তৈরি হয় দেখলাম না। তবে আপনি প্রদীপ পালের ওখানে যেতে পারেন, ওরা যদি কিছু করে।’ কুমোরটুলি এখন শুনশান। নিদ্রামগ্ন সারমেয় ও সদা জাগ্রত কাক্কেশ্বর কুচকুচের দল। সরা দেখতে পাওয়া গেল কয়েকটি দোকানে। না, শুধু মা-লক্ষ্মীর ছবি আঁকা সরা নয়, সপরিবার জগজ্জননী দুর্গা এবং রাধাকৃষ্ণ সরাও রয়েছে। অল্পবিস্তর মানুষজন আসছেন সরা কিনতে। কুমোরটুলি মূলত ব্যস্ত মা-লক্ষ্মীর শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জায়। তারই মধ্যে প্রদীপ রুদ্রপালের ঘর পাওয়া গেল। কথা বলতে যেতেই এক প্রখর ব্যক্তিত্বময়ী মহিলার আবির্ভাব। তিনি বললেন, ‘আমি মীনাক্ষী পাল, ওঁর মেয়ে। বাবার বদলে আমিই দেখাশোনা করি। আগে দেড়শো-দু’শো সরা বানানো হত, এখন বাজার খুব খারাপ। একদম বাঁধা কাস্টোমার। গোটা ষাটেক সরা বানাই। তিনশো-সাড়ে তিনশো টাকা দাম। আমরা ছবি আঁকি না, সরার ওপর মা-লক্ষ্মীর ছোট ঠাকুর বসিয়ে দিই। বহু পরিবার, যাঁরা এই সরা পুজো করছেন বহু বছর ধরে, তাঁরাই এসে নিয়ে যান। যদিও মূল সরা আসে ঘাটাল থেকে, তার ওপরেই আমাদের শিল্পীরা কাজ করে।’ কথা শেষ করে ট্রাম রাস্তার দিকে এগোতেই বাঁ হাতে মিলল অমরনাথ ঘোষ অ্যান্ড সন্স-এর দোকান। সেখানে একপাশে সরা বিক্রি করছিলেন কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি প্রতি বছরই সরা নিয়ে এই দোকানেই বসে বেচাকেনা করেন, গত দুই পুরুষ যাবৎ। তিনি বললেন, ‘দেখুন, ষাট-পঁয়ষট্টি বছর ধরে আমরা সরা বানাই। দত্তপুকুর থেকে এই সরা তৈরি করে আনি। পাইকারি আর খুচরো মিলিয়ে প্রায় চার হাজার সরা তৈরি করি। আমার শিল্পী হচ্ছেন লক্ষ্মণ পাল। ফাল্গুন মাস থেকে তিনি সরা আঁকতে শুরু করেন। ওঁর স্ট্যান্ডার্ডের আর্টিস্ট এখন নেই বললেই চলে। একার হাতে এই চার হাজার সরা আঁকেন। কিন্তু ওঁর যোগ্যতার কোনও মূল্য হয় না। বেশির ভাগ সরা আমাদের ওই এলাকা থেকেই কলকাতায় আসে।’ পণ্ডিত অর্জুনদেব শর্মার কথায়: সরা হিন্দু এবং বৌদ্ধ— এই দুই মতবাদেই পূজিত হয়। সরা ছাড়াও বিভিন্ন ঘরে দেখা গেল প্রায় বালিকার মতো মা-লক্ষ্মীর প্রতিমা। সত্যিই তো, মা-লক্ষ্মী তো আমাদের ঘরেরই লক্ষ্মী-মা।
জল জঙ্গল
বিপদ বুঝলে বা উত্তেজিত হলে ঝুঁটি আরও খাড়া হয়ে যায়। আর তখনই দেখা যায় ঝুঁটির বাহার। দেহের উপরের পালক উজ্জ্বল বাদামি, বুকের দিকটা সাদা। এ হল দুধরাজ বা এশিয়ান প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচারের গল্প। এমন নানা পাখির কথা রয়েছে প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে প্রকাশিত নতুন পত্রিকা ‘জল জঙ্গল’-এ (সম্পা: হিরণ্ময় মাইতি)। প্রথম সংখ্যাটিই বিশেষ পাখি সংখ্যা। রয়েছে নীল গলা ফিদ্দা, মোহন চূড়া, বার্ন সোয়ালো, সোনাবউ, বসন্তবৌরীর ছবি ও কথা। রয়েছে বাংলার কয়েকটি সাপ, বেশ কিছু পতঙ্গ আর রকমারি প্রজাপতির কথা। হেনরি আইল্যান্ড নিয়ে আছে একটি বিশেষ লেখা।
নাট্যোৎসব
শিশু-কিশোর অ্যাকাডেমি-র উদ্যোগে এ বার শহরে জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব। কলকাতায় নাট্যোৎসব কোনও নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু ছোটদের জন্য এমন উৎসব এই শহরে সম্ভবত প্রথম। ৩০ অক্টোবর শিশির মঞ্চে শুরু হবে উৎসব। অ্যাকাডেমি আয়োজিত কর্মশালার ছেলেমেয়েদের অভিনীত নাটক ‘জব্দ হলেন রাজামশাই’ (কাহিনি: দীপান্বিতা রায়, পরি: দেবেশ চট্টোপাধ্যায়) দিয়েই হবে উদ্বোধন (সঙ্গে মহড়ার ছবি)। আট দিনের উৎসবে মঞ্চস্থ হবে পনেরোটি নাটক। বিহার, অসম, মণিপুর, কেরল, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িশা থেকে আসছে ছোটদের নাটকের দল। অংশ নেবে কলকাতা ও শহরতলির খুদেরাও। উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে শিশু-কিশোর নাট্যের চালচিত্র শীর্ষক প্রদর্শনীর। প্রকাশিত হবে সংগ্রহযোগ্য একটি সংকলন গ্রন্থ, সমারোহ। উদ্বোধনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। থাকবেন মাননীয় সাংসদ এবং অ্যাকাডেমির সভাপতি অর্পিতা ঘোষ।
জন্মদিনে
আব্বাসউদ্দিন স্মরণ সমিতি গত পঁচিশ বছর ধরে লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী আব্বাসউদ্দিনের জন্মদিন পালন করে আসছে। এ বছরও ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর (রোজ ৫টা থেকে) দুই বাংলার শিল্পী সমন্বয়ে আব্বাসউদ্দিনকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে, উপদূতাবাস প্রাঙ্গণে। অন্য দিকে ৩০ অক্টোবর লোকগানের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দিনেন্দ্র চৌধুরীর জন্মদিন। ১ নভেম্বর সাড়ে ছটায় এলগিন রোডের ‘বৈতানিক’-এ বাংলা নাটক ডটকম-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠান ‘স্মরণে-বরণে দিনেন্দ্র চৌধুরী’, পরিকল্পনায় তপন রায়।
বাখতিন
রুশ-ভারত গবেষক অকাল প্রয়াত কেশবচন্দ্র চক্রবর্তী বাখতিন চর্চা করেছিলেন। তপোধীর ভট্টাচার্য, দেবেশ রায়ও বাখতিন চর্চা করেছেন। চিরঞ্জীব বসু ‘বাখতিন বাখতিন’ নামে একটি নাটক রচনা করে সেই চর্চাকে অন্য মাত্রা দিলেন। এ বার সে নাটকই মঞ্চস্থ হতে চলেছে। কোরাস-এর পক্ষে নাটকটি পরিচালনা করছেন গৌতম সরকার। মঞ্চ: হিরণ মিত্র। বাইশ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীর এ নাটকে মুখ্য ভূমিকায় বিন্দিয়া ঘোষ ও শ্যামল চক্রবর্তী। প্রথম উপস্থাপনা রবীন্দ্রসদনে ৬ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ছটায়। কোরাস নাট্যগোষ্ঠীর আগের প্রযোজনাটি ‘বন্ধ-এর দশ দিন’। সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের গল্প নিয়ে নাটক, আর তাতে তিনটি চরিত্রে অভিনয় করবেন রজতাভ দত্ত। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা অমিতাভ দত্ত। ৩০ অক্টোবর অ্যাকাডেমিতে দুপুর তিনটেয়।
থিয়েটারের গান
উনিশ শতকের মধ্যকাল। সমকালীন বাবু-থিয়েটারে বীতশ্রদ্ধ মধুসূদনের আক্ষেপ ‘অলীক কুনাট্য রঙ্গে’। যযাতির আখ্যান ঘিরে লিখলেন ‘শর্মিষ্ঠা’। সংলাপের সঙ্গে গানে মঞ্চ মাতালেন তিনি। বান্ধব যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের সুরারোপে গীত হল ‘উদয় হইল সখি সরস বসন্ত’। সে পরম্পরায় দীনবন্ধু মিত্রের ‘কী হেরিলাম আ মরি’ (কমলে কামিনী), জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মানময়ী’ নাট্যের অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরীর গান ‘শুনলেম নাকি নিদারুণ মানে’, অমৃতলাল বসুর ‘বৌমা’ নাট্যের ‘তপত কচুরি ঘিয়েতে ভাজে’, বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষাপটে বাজেয়াপ্ত গিরিশচন্দ্রের নাট্য ‘সিরাজদ্দৌলা’র ‘আসছে ঐ নবাব বাহাদুর’, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘দুর্গাদাস’ নাট্যের ‘যদি এসেছ এসেছ এসেছ বঁধু হে’— এমনতর দশখানা ভিন্ন স্বাদের ‘থিয়েটারের গান’ প্রকাশ পেল পেরিনিয়াল রেকর্ডসের সিডি-তে। গেয়েছেন মঞ্চগানের গবেষক-শিল্পী দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
কল্পনির্ঝর
সারা বছর কলকাতা অপেক্ষা করে থাকে ‘কল্পনির্ঝর ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিকশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর জন্যে। কারণ, স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্রের এমন উৎসব শুধু এ শহরেই হয়। এ বারের ত্রয়োদশ উৎসবেও বাছাই করা ছবির জমায়েত। যেমন শর্ট ফিকশন-এ খ্যাত বুসান ফেস্টিভ্যাল থেকে একগুচ্ছ পুরস্কৃত কোরিয়ার ছবি তো বটেই, সঙ্গে বার্লিন ফেস্টিভ্যালেরও অ্যানিমেশন ছবি। ‘অন্যান্য উৎসব থেকেও চমৎকার সব ছবি আসছে, এতটাই পরিচিতি এখন এ উৎসবের।’ জানালেন রাজু রামন, উৎসব-অধিকর্তা, ‘বরং ভারতীয় ছবি সে তুলনায় কম, আরও বেশি থাকলে ভাল লাগত।’ ভারতীয় ছবি নিয়ে প্রতিযোগিতা ও তার প্যাটন পুরস্কারও এ-উৎসবে। ২-৬ নভেম্বর, ম্যাক্সমুলার ভবনে। উদ্বোধন করবেন রঞ্জিত মল্লিক। উদ্যোগে কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন ও গ্যেটে ইনস্টিটিউট, সঙ্গে অ্যাডলাইফ ক্যারিং মাইন্ডস। স্থিরচিত্রটি ইরানের অ্যানিমেশন ছবি ‘ইয়ুখারি’র, অনুচ্চকিত রাজনৈতিক ভাষ্য সংবলিত এ-ছবি তিন মিনিটের।
আসুন হাসুন
এলোমেলো সময়, কাজ-লক্ষ্যপূরণ-দায়িত্বের চাপে হাঁসফাঁস জীবন। এ কথা বলতে পণ্ডিতদের দরকার পড়ে না: প্রাণখোলা হাসির শব্দ ক্রমশ কমছে, বাড়ছে অবসাদ, বিষণ্ণতা। বিজ্ঞান বলে, মন-মুখ খোলা হাসি শরীরকে স্বস্তি দেয়, ফুসফুসকে অক্সিজেন, হৃদ্যন্ত্রকে আরাম। ‘লোক হাসানো’ তাই অতি মহৎ কাজ, যা করে আসছেন বাংলা টেলিভিশন জগতের স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানরা। গোমড়ামুখোদের হাসাতে তাঁরা জোট বেঁধে গড়েছেন নথিভুক্ত সমিতি ‘রসমঞ্চ’, স্লোগান: আসুন হাসুন। ৩১ অক্টোবর শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সভাঘরে সব রসশিল্পী এক মঞ্চে, উপলক্ষ রসমঞ্চের পঞ্চম বার্ষিক সমাবর্তন। থাকবেন সাহিত্যিক ভগীরথ মিশ্র, ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। আর অবশ্যই থাকবে শিল্পীদের বাচিক কৌতুক-নকশা।
কুর্নিশ
পুলক-পল্টু-টুনি-টুটু— না, এঁদের কাউকে চেনবার কথা নয়। ওঁরা তা প্রত্যাশাও করেন না। প্রত্যাশা না রেখেই ‘কুর্নিশ’ কাজ করছে স্বজনহারা পথশিশুদের জন্য। গতকাল, রবিবার সত্তর জন শিশুকে নিয়ে কুর্নিশ ফেয়ারলি থেকে বেলুড় জলবিহারের আয়োজন করেছিল। মধ্যাহ্নভোজে ছিল পোলাও-মাছ-মাংস, বিকেলে কেক-কফি-চিপ্স। দুপুর ১-৭টা জলের ওপর লঞ্চে অজস্র শিশুর কলকাকলি। যেন একটা গাছভর্তি শয়ে শয়ে পাখি। গান-গল্প-হইহুল্লোড়। ২০০৭ থেকে ওঁরা এই কাজই করেন। পুজোয় শিশুরা পেয়েছে নতুন জামা। কলকাতা পুরসভা ওঁদের সাহায্য করে। করেন রাজ্যের দু’-এক জন মন্ত্রীও। শরতের আলো-ঝলমলে নীল আকাশের নীচে শিশুদের হাসিটুকু দেখার জন্যই সারা বছরের দৌড়াদৌড়ি পরিশ্রম সার্থক— ওদের কুর্নিশ।
সেই সময়
‘ইলিউশন ও রিয়েলিটি-র দ্বন্দ্বে পড়ে গেলে যেমন হতে পারে একজন সংবেদনশীল মানুষের, ঠিক তেমন একজনকে নিয়েই ছবিটা।’ নিজের নতুন ছবি ‘অ্যাবি সেন’ নিয়ে বলছিলেন অতনু ঘোষ। অংশুমানের ছবি, তখন তেইশ, রূপকথা নয়, এক ফালি রোদ-এর পরে বড় পর্দায় এটি পঞ্চম কাহিনিচিত্র তাঁর। সায়েন্স ফিকশন ফিল্মের একটা আবরণ আছে এ ছবিতে, মূল চরিত্রটি চলাফেরা করে এই সময় থেকে আশির দশকে। ‘ফলে ওই সময়ের কলকাতাটাকে তুলে আনতে হয়েছে ছবিতে, ডিটেলস সাজিয়েছি সে ভাবেই। লাল দোতলা বাস, মেট্রো তৈরির সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, দুধের ডিপো, এমন অনেক কিছু।’ (সঙ্গে ছবির একটি দৃশ্যে সে সময়কার টিভির অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত ক্যামেরা এবং সেট) ‘তবে এ সবই বাতাবরণ, আদতে মানবিক আবেদনের ওপর দাঁড়িয়ে ছবিটা’, জানান পরিচালক। কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে ৩০ অক্টোবর।
নিবেদিতা
ভারতীয় দেশী জিনিসের প্রতি তাঁহার গভীর অনুরাগ ছিল। একবার তিনি আমাকে তাঁহার সহিত প্রত্যুষেই দেখা করিতে বলেন।... দেশী বলিয়া আমাকে কিছু নূতন খেজুরগুড়ও খাইতে হল। তিনি কোথায় একটি আধ-পয়সা দামের কালো মাটির প্রদীপ পাইয়াছিলেন। তাহার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হইয়া তাহা যত্নপূর্বক রাখিয়া দিয়াছিলেন।’— ভগিনী নিবেদিতা সম্পর্কে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় যেমন লিখেছেন, তেমনই লিখেছেন জগদীশচন্দ্র বসু দীনেশচন্দ্র সেন যদুনাথ সরকার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত’র মতো আরও অনেকে। গিরিশচন্দ্র ঘোষ ‘তপোবল’ নাটকটি উৎসর্গই করেছিলেন ‘পবিত্রা নিবেদিতা’কে, তখন তিনি প্রয়াত। বাঙালি মনস্বীদের এ সব রচনা থেকে জানা যায় তাঁকে সমকাল কী ভাবে মূল্যায়ন করেছে, বিশেষত বাঙালি সমাজ। সেই প্রাসঙ্গিকতা থেকেই সূত্রধর উদ্যোগী নিবেদিতা প্রসঙ্গে প্রকাশ করতে। নান্দীমুখ-এ স্বামী শিবপ্রদানন্দ লিখেছেন ‘‘ভারতবর্ষ তার ভাব-বৈচিত্র্যের মধ্যেও ভগিনী নিবেদিতার মনস্বিতা-নির্মিত রাজপথ অবলম্বন করে দেশ ও সমাজ পুনর্গঠনের কাজে বহুলাংশে অগ্রসর হয়েছে...।’’ নিবেদিতা সহ লেখকদের প্রতিকৃতি এঁকেছেন কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত। বইটি প্রকাশ করবেন রাধারমণ চক্রবর্তী, ২৯ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় বিবেকানন্দ সোসাইটির সভাকক্ষে। ‘ভগিনী নিবেদিতা স্মারক বক্তৃতা’ দেবেন তরুণ গোস্বামী, বিষয়: ‘জাতীয়তাবাদী বিবেকানন্দ’, সভামুখ্য স্বামী শিবপ্রদানন্দ। যুগ্ম উদ্যোগে বিবেকানন্দ সোসাইটির সঙ্গে সূত্রধর।
নতুন ছেলে
অনেকগুলো অডিশন নেওয়ার পরও মনঃপূত হচ্ছিল না কাউকেই। ড্রামা আর অ্যাক্টিং স্কুলের সব ছেলে, কিন্তু আমার ছবিতে কেচো-র চরিত্রে কাউকেই মানাচ্ছিল না। আসলে বস্তির জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত না হলে এ চরিত্র করা খুব শক্ত।’ বলছিলেন পাভেল। তাঁর ‘বাবার নাম গান্ধীজি’ ক’দিন আগেই হইচই ফেলেছিল কলকাতায়, নবীন এই পরিচালককে নিয়ে রীতিমতো কৌতূহলী দর্শক। বাংলা ছবির চিত্রনাট্যকার হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, পাশাপাশি তথ্যচিত্রও তৈরি করেছেন পাভেল— দেবব্রত বিশ্বাস আর নবারুণ ভট্টাচার্যকে নিয়ে। ‘বাবার নাম গান্ধীজি’ করার সময় তাঁর মনের মধ্যে ছিল সেই গরিব খুদে বাচ্চাগুলো, লেখাপড়াটা আলো এনে দেবে যাদের জীবনে। কেচো তেমনই এক কমবয়সি, পাভেলের ছবির মূল চরিত্র। খুঁজতে-খুঁজতে শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেলেন সুরজিৎকে (সঙ্গের ছবিতে), ধাপার বস্তিতে বেড়ে-ওঠা তার বয়ঃসন্ধি, কেচো-র জন্য একেবারে আদর্শ। ‘ড্রিম বয় বলতে যা বোঝায়, সুরজিৎ আমার ছবিতে একেবারে তাই। ওর বস্তির জীবন কেচো-কে রক্তমাংসের করে তুলল, চরিত্রটায় নানান রঙ আর শেড্স এনে দিল। প্রথম দিকে একটু লাজুক ছিল, কম কথা বলত, আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এল, ওর তিন বন্ধুকেও নিয়েছিলাম ছবিতে।’ এ পর্যন্ত বলার পর পাভেল প্রায় অবাক করে দিয়ে আনন্দের খবরটি জানালেন ‘সুরজিতের ছবি তৈরির খুঁটিনাটি নিয়ে আগ্রহ উৎসাহ ক্রমশই বাড়ছে। ভাবছি আমার আগামী ছবিতে ওকে সহপরিচালক করে নেব।’