খুদে পড়ুয়া এ বার রক্তাক্ত সহপাঠীর মায়ের আঘাতে

স্কুল শেষের পরে সবে কম্পাউন্ডে পা রেখেছিল বছর নয়েকের ছেলেটা। অভিযোগ, তখনই তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল এক সহপাঠী! আর পিছন থেকে ছেলেটির মাথায় এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করলেন সেই সহপাঠীর মা। এর পর চুল থেকে পিন খুলে নিয়ে তা দিয়ে ছেলেটির আঙুলেও খুঁচিয়ে দেন বলে অভিযোগ! স্কুলের ভিতরেই আচমকা এই হামলা হওয়ায় প্রথমে হকচকিয়ে যায় শিশুটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এজেসি বসু রোডের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চত্বরে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৯
Share:

আক্রান্ত সেই ছাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুল শেষের পরে সবে কম্পাউন্ডে পা রেখেছিল বছর নয়েকের ছেলেটা। অভিযোগ, তখনই তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল এক সহপাঠী! আর পিছন থেকে ছেলেটির মাথায় এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করলেন সেই সহপাঠীর মা। এর পর চুল থেকে পিন খুলে নিয়ে তা দিয়ে ছেলেটির আঙুলেও খুঁচিয়ে দেন বলে অভিযোগ! স্কুলের ভিতরেই আচমকা এই হামলা হওয়ায় প্রথমে হকচকিয়ে যায় শিশুটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এজেসি বসু রোডের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চত্বরে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বুধবারই লেকটাউনের একটি শিশুর উপরে তার গৃহশিক্ষিকার অমানবিক মারধর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। লেকটাউনের ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। পুলিশ বলছে, এ দিনের ঘটনার সূত্রপাত ক্লাসে গোলমাল করা নিয়ে। আহত ছাত্রটি ক্লাস মনিটর। সে শিক্ষিকার কাছে অভিযুক্ত মহিলার ছেলের বিরুদ্ধে ক্লাসে দুষ্টুমি করার নালিশ জানিয়েছিল। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মহিলা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি। এ দিনের ঘটনায় অভিযুক্তের হদিস পেলেও রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি।

কী হয়েছিল এ দিন?

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আচমকা এমন আক্রমণে প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে চিৎকার জুড়ে দেয় শিশুটি। এর পরেই ওই মহিলার হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানায় সে। ইতিমধ্যে ছেলেকে নিতে স্কুলে পৌঁছন ওই ছেলেটির বাবা। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিক্ষকেরা তাঁকে স্কুলের ভিতর তাঁর ছেলের কাছে নিয়ে যান। ছেলেটির বাবা বলেন, “স্কুলে ঢোকার সময় আমি দেখলাম আমার ছেলের সেই সহপাঠী ও তার মা কম্পাউন্ডেই দাঁড়িয়ে। তবে, শিক্ষকদের কাছ থেকে সব শুনে ফিরে এসে আর দেখতে পাইনি তাঁদের।” এর পর প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেলেটিকে বাড়ি নিয়ে যান তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যায় শিশুটির পরিবার পার্ক স্ট্রিট থানায় তার সহপাঠীর মা শাবানা ইকলাখের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। শিশুটির বাঁ হাতে ও ডান হাতের আঙুলে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তবে অভিযুক্ত মহিলা হওয়ায় রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। এক পুলিশকর্তা বলেন, “সূর্যাস্তের পর মহিলাদের গ্রেফতার করার উপরে আইনি নিষেধ আছে।”

আক্রান্ত শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, গত শনিবার তাকে ক্লাসের মনিটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কেউ দুষ্টুমি করলে তার নাম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জানাতে। অভিযুক্তের ছেলের নামে প্রতিদিনই নালিশ করত মনিটর ছেলেটি। বুধবারেও মনিটর ছেলেটি একই অভিযোগ জানিয়েছিল শিক্ষিকার কাছে। এর পর বিকেলে অভিযুক্তের স্বামী শিশুটির বাবাকে ফোন করে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।

শিশুটির বক্তব্য, এ দিন স্কুল ছুটির পর সে যখন স্কুল থেকে বেরোচ্ছিল, তখন ওই সহপাঠী তার ব্যাগ ধরে আটকায়। বলে, তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। এই সময় সে দৌড়ে পালাতে গেলে সহপাঠী তার ব্যাগ টেনে ধরে। এই সময় অভিযুক্ত মহিলা এসে শিশুটিকে পিছন থেকে আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। তার পর পিন দিয়ে আঙুলে খুঁচিয়ে দেন। শিশুটির বাবা জানান, এ দিন তাঁরই ছেলেকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তাঁর পৌঁছতে দেরি হয়। তার মধ্যেই ওই ঘটনা ঘটে।

স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় স্কুলের কয়েক জন প্রতিনিধি আহত ছাত্রের বাড়ি যান। স্কুল সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের স্কুলে ডেকে পাঠানো হতে পারে। ওই স্কুলের সিইও অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি পরিচালন সমিতিতে আলোচনা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন