অঙ্কন: অশোক মল্লিক।
ভরদুপুরে রাস্তা দিয়ে ছুটছেন এক জন জ্বলন্ত মানুষ। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে তাঁর গোটা শরীরে। আশেপাশে তখন যে ক’জন লোক ছিলেন, ভয়ে কেউ সাহস করেননি এগোনোর। শেষে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে এক রকম ঝাঁপিয়ে পড়েই ওই ব্যক্তিকে বাঁচালেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পাঁচ পুলিশ অফিসার। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার মদন মিত্র লেনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন পুলিশকর্মীরাই। উদ্ধার করতে গিয়ে পুড়ে যান দুই পুলিশ অফিসারও। তাঁদেরও প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জেনেছে, ওই ব্যক্তির নাম প্রশান্ত ঘোষ। তাঁর একটি চায়ের দোকান রয়েছে। এ দিন দুপুরে নিজের বাড়িতে রান্নাঘরে ঢুকে আচমকাই তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। ওই অবস্থাতেই বাইরে বেরিয়ে পড়েন। তার পরে চিৎকার করতে করতে বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ছুটতে শুরু করেন। জ্বলন্ত অবস্থায় প্রশান্তবাবুকে ছুটতে দেখে হকচকিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। নিজেরা কেউ এগোতে সাহস না পেলেও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ওসির মোবাইলে ফোন করে এক ব্যক্তি নিজের পরিচয় দিয়ে খবরটি দেন।
ওসি দেবব্রত সরকার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান। ওই পুলিশকর্মীরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা বাসিন্দাদের কাছ থেকে একটি কাপড় চেয়ে সেটা দিয়ে ওই ব্যক্তির দু’টি হাত চেপে ধরেন। ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় আগুন নিভে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, সম্পূর্ণ পুড়ে ঝলসে গিয়েছিলেন প্রশান্তবাবু। দেহের চামড়া ফেটে গিয়ে রক্ত পড়ছিল। শুধু মাথার চুলগুলো অক্ষত ছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীন। পাশাপাশি, প্রচুর মদ্যপানও করতেন তিনি। পুলিশের অনুমান, সেই থেকেই এই কাণ্ড।