ছিনতাইয়ের চার চক্রী গ্রেফতার

তাদের দেখা হয়েছিল পুরীর সমুদ্রতটে। মাস তিনেক আগে। তখনই ঠিক হয় দল গড়ার কথা। যে দল কি না গোটা কলকাতা জুড়ে ছিনতাই করে বেড়াবে। বৃহস্পতিবার ছ’জনের ওই দলেরই চার সদস্য ধরা পড়ল। ধৃতদের নাম রাজীব দাস, স্বপন দাস, শেখ ওয়াসিম এবং শেখ আসলাম। পুলিশ জানায়, মোটর সাইকেলে চড়ে মূলত মহিলাদের গলার হার ছিনতাই করত দলটি। এ পর্যন্ত তারা অন্তত ৯টি অপরাধ করেছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:০০
Share:

তাদের দেখা হয়েছিল পুরীর সমুদ্রতটে। মাস তিনেক আগে। তখনই ঠিক হয় দল গড়ার কথা। যে দল কি না গোটা কলকাতা জুড়ে ছিনতাই করে বেড়াবে। বৃহস্পতিবার ছ’জনের ওই দলেরই চার সদস্য ধরা পড়ল। ধৃতদের নাম রাজীব দাস, স্বপন দাস, শেখ ওয়াসিম এবং শেখ আসলাম। পুলিশ জানায়, মোটর সাইকেলে চড়ে মূলত মহিলাদের গলার হার ছিনতাই করত দলটি। এ পর্যন্ত তারা অন্তত ৯টি অপরাধ করেছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, গত দু’মাসে শহরে প্রায় ৪০টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। এই চার জন ধরা পড়ায় ছিনতাই কিছুটা কমবে বলে আশা পুলিশের।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই দলে তিন জন দক্ষিণ শহরতলির, দু’জন উত্তর কলকাতার বাসিন্দা। পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা দক্ষিণ কলকাতায় সাতটি ছিনতাই করেছে। উত্তরে করেছে দু’টি। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, সাধারণত একটি ছিনতাইকারী দল নির্দিষ্ট কোনও প্রান্তের হয় এবং নির্দিষ্ট তল্লাট জুড়ে তাদের দাপট থাকে। কিন্তু একই দলের শহরের দু’প্রান্তেই দাপাদাপির এমন নজির সাম্প্রতিক অতীতে তেমন নেই।

পুলিশ সূত্রে খবর, রাজীব ও স্বপন দলের দুই চাঁই। রাজীবের বাড়ি ঠাকুরপুকুরে আর স্বপনের বরাহনগরে। সমাজবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে বছর ছয়েক আগেও রাজীবকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, মাস তিনেক আগে রাজীব তার বন্ধুদের সঙ্গে এবং স্বপন আবার তার বন্ধুদের সঙ্গে পুরী বেড়াতে যায়। সেখানেই তাদের আলাপ। সেই সময়ে তারা সকলেই ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের ব্যবসায় যুক্ত ছিল। পুরীতেই অন্যদের রাজীব প্রস্তাব দেয়, অপরাধ জগতে প্রবেশ করলে সহজে মোটা টাকা রোজগার করা যাবে। রাজীব বলে, এমন দল গড়তে হবে যাতে শহরের দু’প্রান্তের ছেলেরাই থাকবে। ফলে শহর জুড়ে অপরাধ করা যাবে। সেই মতো উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ওই দু’দল যুবকদের তৈরি নতুন দলটি মাঠে নামে। উত্তরে স্বপন ও দক্ষিণে রাজীব নেতৃত্ব দিত। ভোরের আলো ফোটার পরেই ‘শিকার’ চিহ্নিত করে কাজ হাসিল করার জন্য তক্কে তক্কে থাকত তারা। দু’টি মোটর সাইকেলে থাকত চার জন। এ ভাবেই নেতাজিনগর, সার্ভে পার্ক, হরিদেবপুর, সিঁথি, কাশীপুরে ছিনতাই করা হয় বলে দাবি পুলিশের।

লালবাজারের ছিনতাই দমন শাখার অতিরিক্ত ওসি চিত্রদীপ পাণ্ডের নেতৃত্বে গোয়েন্দাদের একটি দল নেতাজিনগর ও সার্ভে পার্কের দু’টি ছিনতাইয়ের তদন্ত করতে নেমে দুষ্কৃতীদের ব্যবহৃত একটি মোটরবাইকের শেষ চারটি নম্বর পান। তার ভিত্তিতে শ’দুয়েক বিভিন্ন গাড়ির নম্বর জোগাড় হয়। মোটরবাইকগুলি আলাদা করে মালিকদের নাম খুঁজতে শুরু করেন গোয়েন্দারা। তখনই রাজীবের নাম উঠে আসে। তার উপর নজরদারি শুরু হয়। শেষে খোঁজ মেলে আরও তিন জনের। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে দু’টি মোটর বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে ছিনতাই হওয়া কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি। দলের বাকিদের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন