জমে ওঠেনি বাজার, শঙ্কায় ওয়েলিংটনের শীতবস্ত্র-বিক্রেতারা

এক দিকে, খামখেয়ালি শীত। অন্য দিকে, বদলে যাওয়া রুচি। এই দুইয়ের ধাক্কায় ওয়েলিংটন স্কোয়্যারে শীতবস্ত্রের বাজার এ বার মন্দা। কপালে ভাঁজ বিক্রেতাদের। এমন চললে এই মরশুমি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে বলে জানালেন অনেক বিক্রেতাই। প্রতি বছরের মতো এ বারেও ওয়েলিংটন স্কোয়্যারে বিক্রেতারা এলেও শীতবস্ত্রের ক্রেতার সংখ্যা নেহাতই কম। তাই ভরা মরশুমেও দোকানে থরে থরে রয়ে গিয়েছে কাশ্মীরি শাল, জ্যাকেট, পুলওভার থেকে কার্ডিগান।

Advertisement

বিভূতিসুন্দর ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৭
Share:

বিকিকিনি কম। নিজস্বী তুলে কাটছে সময়। ছবি: সুমন বল্লভ।

এক দিকে, খামখেয়ালি শীত। অন্য দিকে, বদলে যাওয়া রুচি। এই দুইয়ের ধাক্কায় ওয়েলিংটন স্কোয়্যারে শীতবস্ত্রের বাজার এ বার মন্দা। কপালে ভাঁজ বিক্রেতাদের। এমন চললে এই মরশুমি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে বলে জানালেন অনেক বিক্রেতাই।

Advertisement

প্রতি বছরের মতো এ বারেও ওয়েলিংটন স্কোয়্যারে বিক্রেতারা এলেও শীতবস্ত্রের ক্রেতার সংখ্যা নেহাতই কম। তাই ভরা মরশুমেও দোকানে থরে থরে রয়ে গিয়েছে কাশ্মীরি শাল, জ্যাকেট, পুলওভার থেকে কার্ডিগান।

অন্য রাজ্য থেকে ওয়েলিংটনে আসা বিক্রেতাদের দাবি, কলকাতায় শীতের মেয়াদ কমছে। আগে নভেম্বর থেকে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত পুরোদমে চলত বেচাকেনা। এখন জানুয়ারির মাঝামাঝিও বেচাকেনায় ভাটা। ক্রেতার সংখ্যা হাতে গোনা। তাঁদের অনেকেই আবার দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে সিমলা থেকে এসে ওয়েলিংটনে দোকান দিচ্ছেন দোলমা। তিনি বললেন, “শীতের মেয়াদ কমায় বিক্রিও কমেছে। মাঝে সপ্তাহ দু’য়েক শীতের দাপট বাড়ায় বিক্রি খানিকটা বেড়ে ছিল। তবে গত ১৫ বছরে বেচাকেনার এমন দুর্দশা দেখিনি। আগে দিনে কম করে তিন থেকে চার হাজার টাকার জিনিস বিক্রি হত। ডিসেম্বরের শুরু থেকে ব্যবসা জমে উঠত। এমন চললে এখানে আসব কেন?” প্রায় ২৫ বছর ধরে হিমাচলপ্রদেশ থেকে ওয়েলিংটনে আসছেন দাওয়া শিরিন। তাঁর বক্তব্য: “গত বছরও ঠিক সময় শীত না পড়ায় ব্যবসা খুব একটা ভাল হয়নি। এ বছর ব্যবসার হাল আরও খারাপ।”

তবে শুধু শীতের খামখেয়ালিপনা নয়, বদলে গিয়েছে ক্রেতাদের রুচিও। এক সময়ে শীতের মরশুমে ওয়েলিংটনের শীতবস্ত্র উষ্ণতা জুগিয়েছে মধ্যবিত্ত বাঙালিকে। আজ সেই মধ্যবিত্ত বাঙালির একাংশের পছন্দ নানা ব্র্যান্ডের পোশাক। ফলে ভিড়টা অনেকটাই শপিং মলমুখী। ধর্মশালা থেকে আসা দলদীপ রাজ জানান, এখন ক্রেতারা ব্র্যান্ড খোঁজেন। ভাল দামী জিনিস আনলেও ক্রেতারা নিতে চান না। বিক্রির জন্য অগত্যা মাঝারি, কম দামী শীতবস্ত্র ভরসা।

মৌলালি থেকে ছেলের জন্য পুলওভার কিনতে এসে প্রতীক রায় বলছিলেন “বেশি দাম দিয়ে কিনতে হলে শপিং মলে যাব। এখানে সস্তার জিনিস খুঁজি।” মানিকতলার সুনেত্রা চৌধুরী জানালেন, বহু ক্ষেত্রে আসল উলের বদলে ক্যাশমিলন চলছে।

ক্রেতার পাশাপাশি বিক্রেতারাও পাল্টে গিয়েছেন। আগে মূলত ভুটিয়া, নেপালি এবং হিমাচল অঞ্চলের বিক্রেতারা বসতেন। এখন তাঁদের পাশাপাশি আসছেন কলকাতা এবং বিহারের বিক্রেতারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন