এলাকার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে গেলে জাতীয় সড়ক পেরোতেই হবে। আর ঝুঁকি নিয়ে সেই রাস্তা পেরোতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটছে বালির দু’নম্বর জাতীয় সড়কের বামুনডাঙা এলাকায়। সোমবারও রাস্তা পেরোতে যাওয়া এক মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে একটি গাড়িকে ধাক্কা মারে সরকারি বাস। মারা যান ওই মহিলা-সহ তিন জন। এর পরেই নড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন। পরিকল্পনা হয়েছে, যত্রতত্র রাস্তা পেরোনো আটকাতে রেলিং লাগানো হবে।
মঙ্গলবার সকালে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও বালি ট্রাফিক গার্ডের আইসি কল্যাণ চক্রবর্তী বামুনডাঙার ‘জিরো পয়েন্ট’ থেকে নিবেদিতা সেতু টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় এক কিমি রাস্তা ঘুরে দেখেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে, ওই এক কিমি রাস্তার ডিভাইডারের উপরে প্রায় সাড়ে ৬ ফুট উঁচু লোহার রেলিং বসবে। সেটি এমন ভাবে তৈরি হবে যাতে রেলিংয়ের দু’টি রডের মাঝখান দিয়েও কেউ যেতে না পারেন। পুলিশকর্তারা জানান, এই ব্যবস্থা হলে বামুনডাঙা সেতুর নীচ দিয়ে কিছুটা ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে। ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার জায়গাটি ঘুরে দেখলাম। মনে হচ্ছে, রেলিং বসালে সমস্যার সমাধান হতে পারে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব পাঠাচ্ছি।’’
পুলিশ জানায়, কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশকর্তারা দেখেছেন, প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই আচমকা সামনে চলে আসা পথচারীকে বাঁচাতে গিয়েই ঘটেছে দুর্ঘটনা। ডানকুনির দিক থেকে কলকাতামুখী গাড়িগুলি তীব্র গতিতে আসে। সামনে দিয়ে আচমকা কেউ রাস্তা পেরোতে গেলে গাড়ি থামানোর উপায় থাকে না। ঘটে দুর্ঘটনা। আবার অনেক সময়ে পথচারীকে বাঁচাতে জোরে ব্রেক কষেন চালক। ফলে কখনও উল্টে যাচ্ছে গাড়ি, আবার কখনও পিছনের গাড়ি এসে ধাক্কা মারছে। তাই রেলিং বসালে সমস্যা মিটবে বলেই মত পুলিশের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বালি-জগাছা ব্লকের এই জাতীয় সড়কের উত্তর দিকে দুর্গাপুর-অভয়নগর পঞ্চায়েত এলাকা। দক্ষিণে জয়পুর বিল, বামুনডাঙা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। আগে দুই এলাকার মানুষ এখনকার জাতীয় সড়ক দিয়েই যাতায়াত করতেন। কিন্তু ২০ বছর আগে বামুনডাঙার কাছে নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ার পর থেকেই দুই এলাকার মধ্যে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। অগত্যা সব সময়েই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তা পারাপার করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ষষ্ঠী গায়েন বলেন, ‘‘এ ভাবে জাতীয় সড়ক পার হওয়া খুবই বিপজ্জনক। যাতায়াতের সুবিধার্থে রাজচন্দ্রপুরের মতো বামুনডাঙাতেও সাবওয়ে তৈরি করে দিলে উপকার হয়।’’ পাশাপাশি, স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, জাতীয় সড়কে সার দিয়ে লরি দাঁড়িয়ে থাকার ফলেও রাস্তা সরু হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। যদিও পুলিশের দাবি, বেআইনি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।