সুমন্তিকা।
বিষাক্ত গ্যাসেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। তবে ঠিক কোন গ্যাসের বিষক্রিয়ায় সুমন্তিকার মৃত্যু হয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি। লালবাজার সূত্রের খবর, এক মাস ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েও গ্যাস বৃত্তান্ত জানাতে পারেননি রাজ্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
এই অবস্থায় এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, “বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর কথা মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। কিন্তু কোন গ্যাসের ফলে এমন অবস্থা হল, সেটা জানাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।” সেই উদ্দেশ্যপূরণ না হওয়ায় আপাতত এই রহস্য অধরাই থেকে গেল বলে লালবাজারের একাংশ জানাচ্ছে।
গত ৪ জানুয়ারি কলেজ স্ট্রিট এলাকার আরপুলি লেনের একটি বাড়ির একতলার ঘর থেকে সুমন্তিকার প্রাণহীন দেহ উদ্ধার করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় মেলে তাঁর বন্ধু সুবর্ণা লামাকে। প্রাথমিক ভাবে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়। ময়না-তদন্তের পরে চিকিৎসকেরা জানান, দমবন্ধ হয়েই মারা গিয়েছিলেন সুমন্তিকা। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন সুবর্ণা। লালবাজারের তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেও রহস্যের জট কাটাতে পারেননি।
সুমন্তিকার মৃত্যু রহস্য নিয়ে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের পাইপলাইনের দিকেও। ওই এলাকায় মাটির নীচ দিয়ে তাদের পাইপলাইন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সেই পাইপলাইনে কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা না পড়লেও পরে সুমন্তিকার জানলার নীচে থাকা পাইপলাইনে ফাটল ধরা পড়েছিল। তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ ছিল, ওই গ্যাসই সুমন্তিকার ঘরে ঢুকে এই বিপদ ঘটিয়েছিল। সুমন্তিকার ঘরের থেকে গ্যাসের নমুনাও সংগ্রহ করেছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাইয়ের গ্যাসই সুমন্তিকার মৃত্যুর কারণ কি না, তা নিশ্চিত করতে গ্যাসের রাসায়নিক বিশ্লেষণ ও সুমন্তিকার ভিসেরা রিপোর্ট দরকার ছিল। এমনই মত তদন্তকারীদের একাংশের। কিন্তু সেই দু’টি রিপোর্ট এখনও মেলেনি। কবে মিলবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা।