নিখোঁজ ব্যবসায়ীর দেহ খালে, কর্মী ধৃত

নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দিন দশেক আগে। রবিবার সকালে সেই নিখোঁজ ব্যবসায়ীর মৃতদেহ পাওয়া গেল দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলা-নোয়াপাড়ার একটি খালে। নিজের বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে। পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীর নাম আদিত্য মণ্ডল (৪০)। প্রাথমিক তদন্তের পরে তাদের ধারণা, অপহরণ করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে মেরে তাঁকে খালে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০২:০২
Share:

নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দিন দশেক আগে। রবিবার সকালে সেই নিখোঁজ ব্যবসায়ীর মৃতদেহ পাওয়া গেল দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলা-নোয়াপাড়ার একটি খালে। নিজের বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীর নাম আদিত্য মণ্ডল (৪০)। প্রাথমিক তদন্তের পরে তাদের ধারণা, অপহরণ করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে মেরে তাঁকে খালে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় আদিত্যবাবুর এক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী ভাবে তার মনিবকে খুন করা হয়েছে, শেখ ফিরোজ নামে ওই কর্মী জেরায় তা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানায়।

আদিত্যবাবু মাছ ও ইমারতি সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন থেকেই অফ ছিল তাঁর মোবাইলের সুইচ। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরে তাঁর পরিবার থানায় ডায়েরি করে। আদিত্যবাবুর অন্তর্ধানের সঙ্গে আব্দুর রহমান ওরফে রাজা নামে এলাকার এক দুষ্কৃতীর যোগসাজশ রয়েছে বলে তাঁর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, আদিত্যবাবু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে রাজাকেও এলাকায় দেখা যাচ্ছিল না। আদিত্যবাবুর একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। শেখ ফিরোজ নামে কর্মীটি ছিল ওই ব্যবসায়ীর ছায়াসঙ্গী। তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। তার উপরে বিশেষ ভাবে নজরদারি শুরু হয়।

Advertisement

এ দিন সকালে স্থানীয় চিতলখালে একটি মৃতদেহ ভাসতে দেখে ওই এলাকার বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। তাতে পচন ধরে গিয়েছিল। দেহটি আদিত্যবাবুর বলে শনাক্ত করেন তাঁর আত্মীয়পরিজন। তার পরে ফিরোজকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক তদন্তকারীর কথায়, রাজার বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ ছিল আদিত্যবাবুর পরিজনদের। ফিরোজের মোবাইলের কললিস্ট পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই ব্যবসায়ীর অন্তর্ধানের দিন রাজার সঙ্গে একাধিক বার কথা হয়েছিল ফিরোজের। সেই সূত্র ধরে ফিরোজকে চেপে ধরে পুলিশ। জেরায় ভেঙে পড়ে আদিত্যবাবুকে খুন করার কথা কবুল করে ফিরোজ। তার পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় তোলাবাজি ও পুলিশের গাড়ির উপরে হামলার মামলায় বেশ কয়েক বছর জেলে ছিল রাজা। সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পায় সে। রাজার সঙ্গে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল আদিত্যবাবুর। কিন্তু রাজা ফিরে আসার পরে তিনি তাকে এড়িয়ে চলছিলেন। রাজা টাকা চাইত। কিন্তু আদিত্যবাবু দিচ্ছিলেন না। তার পরেই তাঁকে খুনের ছক কষে রাজা।

ফিরোজকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, অন্তর্ধানের দিন অর্থাৎ ১৩ মার্চ সন্ধ্যাতেই ওই ব্যবসায়ী খুন হন। ফিরোজ পুলিশকে বলেছে, রাজা তার মাধ্যমেই ফোনে চিতলখালের কাছে একটি ফাঁকা মাঠে আদিত্যবাবুকে ডেকে পাঠায়। তার পরে রাজা এবং তার কয়েক জন শাগরেদ গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে শ্বাস রোধ করে মেরে খালে ফেলে দেয়।

আদিত্যবাবুর বিরুদ্ধেও অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগ ছিল মহেশতলা থানায়। প্রায় সাত বছর আগে একটি তোলাবাজির ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীকে ধরা হয়। তখন তাঁর কাছ থেকে ওই বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পুলিশ সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন