নিখোঁজ যুবকের মৃতদেহ মিলল গুদামে, চাঞ্চল্য

নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পরে এলাকারই একটি গুদাম থেকে পাওয়া গেল এক যুবকের মৃতদেহ। বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কোল বার্থ রোডে। মৃত অমিতকুমার শাহের (২৬) বাড়ি ওই এলাকারই কার্ল মার্কস সরণিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পরে এলাকারই একটি গুদাম থেকে পাওয়া গেল এক যুবকের মৃতদেহ। বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কোল বার্থ রোডে। মৃত অমিতকুমার শাহের (২৬) বাড়ি ওই এলাকারই কার্ল মার্কস সরণিতে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, শনিবার রাত থেকে অমিত নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর পরিবারের তরফে দক্ষিণ বন্দর থানায় একটি নিখোঁজ-ডায়েরিও করা হয়েছিল। কিন্তু অমিতের কোনও হদিস মেলেনি। বুধবার সকালে পচা গন্ধ পেয়ে ওই গুদামের কর্মীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, অমিত একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে বন্দর এলাকায় মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ দেখাশোনা করতেন। যে গুদামে তাঁর দেহ মেলে, সেটি ওই সংস্থারই। একটি বড় এলাকা জুড়ে থাকা ওই গুদামে এক কন্টেনারের নীচে তাঁর দেহ চাপা পড়ে ছিল। মৃতদেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্নও মিলেছে।

মৃতের ভাই রবিশঙ্কর শাহ জানান, রোজকার মতো শনিবারও রাতের খাওয়া সেরে কাজে যান অমিত। কিন্তু কাজের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও রবিবার সকালে তিনি বাড়ি ফেরেননি। বাড়ির লোকজন অমিতের মোবাইলে বারবার ফোন করলেও কোনও সাড়া মেলেনি। উপরন্তু প্রথমে রিং হলেও কিছুক্ষণ পরে তাঁর ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলেও ওই যুবকের কোনও খোঁজ মেলেনি। এর পরেই তিনি থানায় নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বলে রবিশঙ্কর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বুধবার সকালে থানা থেকে মোবাইলে ফোন করে জানানো হয়, একটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। শনাক্তকরণের জন্য থানায় যেতে হবে। গিয়ে দেখি দেহটি অমিতেরই।”

Advertisement

রবিশঙ্করের অভিযোগ, গত তিন দিন ধরে বারংবার পুলিশের কাছে নিখোঁজের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হলেও ঘটনার তদন্তে তেমন কোনও উত্‌সাহ দেখায়নি পুলিশ। ওই গুদামে গিয়ে তল্লাশি চালালে অনেক আগেই অমিতকে খুঁজে পাওয়া যেত বলে মনে করেন তিনি। এমনকী, যে বেসরকারি সংস্থার হয়ে অমিত কাজ করতেন, তাঁরাও পরিবারকে কোনও খবর দেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। পাশাপাশি রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, ওই গুদামে প্রচুর কর্মী কাজ করেন। গুদামের ভিতরে কেউ পড়ে রয়েছে, অথচ কারও চোখে পড়বে না, এমনটা অসম্ভব। কী করে সকলের নজর এড়িয়ে এই ঘটনা ঘটল এবং এই ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত— তা পুলিশি তদন্তে উঠে আসবে বলে তাঁর আশা। বুধবার রাতে পরিবারের তরফে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ডিসি (বন্দর) ইমরান ওয়াহেব বলেন, “এই গুদামটি অনেকটা এলাকা জুড়ে। পাশাপাশি দেহ চাপা পড়েছিল কন্টেনারের নীচে। ফলে কর্মীদের নজর এড়িয়ে যেতেই পারে। তবে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল এবং এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে। গুদামটির সিসিটিভি ফুটেজও চেয়ে পাঠানো হয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের অনুমান, মাল ওঠানো-নামানোর সময়েই কোনও ভাবে কন্টেনারের নীচে চাপা পড়েন অমিত। তাঁর দেহে এই ধরনের অসংখ্য আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন