নকল চেক দিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ১৫ লক্ষ

চেক রয়েছে চেক-বইয়েই। তবু সেই চেক দিয়েই ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা! মঙ্গলবার বিকেলে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে ডালহৌসি এলাকার এক ব্যবসায়ীর। তাঁর অভিযোগ, চেক-জালিয়াতি করেই তাঁর বিজ্ঞাপন সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি নিয়ে থানা ও ব্যাঙ্ক, দু’জায়গাতেই অভিযোগ দায়ের করেছে ওই সংস্থা। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০১
Share:

চেক রয়েছে চেক-বইয়েই। তবু সেই চেক দিয়েই ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা! মঙ্গলবার বিকেলে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে ডালহৌসি এলাকার এক ব্যবসায়ীর। তাঁর অভিযোগ, চেক-জালিয়াতি করেই তাঁর বিজ্ঞাপন সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি নিয়ে থানা ও ব্যাঙ্ক, দু’জায়গাতেই অভিযোগ দায়ের করেছে ওই সংস্থা। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

ওই বিজ্ঞাপন সংস্থার অন্যতম কর্ণধার সমীরণ দাস জানান, মঙ্গলবার বিকেল তিনটে নাগাদ তাঁদের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে একটি এসএমএস পান তাঁর ভাই সঞ্জীব (তিনি সংস্থার আর এক কর্ণধার এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের জন্য সই করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত)। তাতে দেখা যায়, একটি চেক মারফত বিজ্ঞাপন সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ লক্ষ টাকা একটি অচেনা নির্মাণ সংস্থার অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এসএমএসটি পেয়েই সন্দেহ হয় সঞ্জীবের। তিনি অফিসে বিষয়টি জানালে সমীরণ ও অন্য কয়েক জন কর্তা অনলাইনে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দেখেন। সেখান থেকে চেক নম্বর নিয়ে অফিসের নথিতে তল্লাশি করতেই মাথায় হাত তাঁদের।

সমীরণের কথায়, “লেনদেনে যে চেক নম্বর দেওয়া রয়েছে, সেই নম্বরের চেক অফিসে রয়েছে। তার আগের কয়েকটি ক্রমিক সংখ্যার চেকও ব্যবহার করা হয়নি।” সমীরণের অফিসের উল্টো দিকেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সদর দফতর। ওই শাখাতেই তাঁদের সংস্থার অ্যাকাউন্ট। ঘটনার কথা জানতে পেরেই মঙ্গলবার বিকেলে ব্যাঙ্কের শাখায় যান সমীরণেরা। ব্যাঙ্কও ওই চেক দিয়ে টাকা লেনদেনের কথা স্বীকার করে। ওই ব্যাঙ্কের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার জয়প্রকাশ পাণ্ডে বলেন, “আমাদের ব্যাঙ্কের সালকিয়া শাখার একটি অ্যাকাউন্টে ওই টাকা গিয়েছে। চেক জালিয়াতি করেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে সন্দেহ। আমরা নিজেদের মতো করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।” মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছেন সমীরণবাবুরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটেছে আধ ঘণ্টারও কম সময়ে। সমীরণদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর কিছুক্ষণের মধ্যে সেই টাকার একটি বড় অংশ ব্যাঙ্ক থেকে অনলাইন মারফত অন্য একটি অ্যাকাউন্টে সরানো হয়েছে। পরে ওই নির্মাণ সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি কিছু টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে। সমীরণবাবুদের প্রশ্ন, চেক যদি ব্যবহার না-ই করা হবে, তা হলে টাকা উধাও হয়ে গেল কী করে?

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, এটি চেক-জালিয়াতির ঘটনা। এর আগেও শহরে এমন ঘটনা ঘটেছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, জালিয়াতেরা একটি চেক হাতিয়ে তাতে নানা রকম কারসাজি করে নকল চেক তৈরি করে। বছরখানেক আগে এমনই একটি জালিয়াতি চক্রকে ধরেছিল লালবাজারের ব্যাঙ্ক-জালিয়াতি দমন শাখা। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই চক্রটি চেকের নম্বর ও লেখা তুলে তাতে অন্য নাম ও নম্বর বসিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, “মানুষের শরীরে যেমন প্লাস্টিক সার্জারি করে ভোল বদলে দেওয়া হয়, তেমনই চেকেও কার্যত প্লাস্টিক সার্জারি করত ওই জালিয়াতেরা।” এই ঘটনার ক্ষেত্রেও একই রকমের আঁচ পেয়েছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন