ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সম্প্রসারণে নয়ানজুলি বোজানো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র।
বৃহস্পতিবার পুরসভায় শহরের প্রাক-বর্ষা পর্যালোচনা বৈঠকের শেষে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, বাইপাস সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে দু’ধারের নয়ানজুলি বুজিয়ে। এর ফলে আগামী বর্ষায় ভাসতে পারে বাইপাসের দু’দিকের বিস্তীর্ণ এলাকা। এই অবস্থার জন্য কেএমডিএ-র বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। শোভনবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বাস্তব অবস্থা না বুঝেই এমন কথা বলেছেন মেয়র। নয়ানজুলি বুজিয়ে কোথাও বাইপাসে সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে না।
এ বারের বর্ষার মোকাবিলার জন্য পুরসভা কতটা প্রস্তুত, তা খতিয়ে দেখতে এ দিন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। এক পুরকর্তা জানান, শহরের বেশ কিছু এলাকায় খাল সংস্কারের কাজ আশানুরূপ না হওয়ায় এ বারেও জল জমার সমস্যা হতে পারে। এই পরিস্থিতির কী ভাবে মোকাবিলা করা যাবে, তাই নিয়ে এ দিন বিস্তারিত আলোচনা হয়।
পরে সাংবাদিক বৈঠকে ই এম বাইপাসের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মেয়র। গত বার বর্ষায় বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এ বারেও যে ছবিটা বদলায়নি, তা মেয়রের কথা থেকেই স্পষ্ট। তিনি জানান, বাইপাস সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ওই কাজ করছে কেএমডিএ। এর ফলে মাটি ও বর্জ্য পদার্থে বুজে গিয়েছে দু’পাশের খাল। ফলে নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই দু’ধারের এলাকা ভেসে যেতে পারে।
কিন্তু বাইপাসের রাস্তা চওড়া করতে কোনও খাল বোজানো হয়নি বলে পাল্টা দাবি করেছেন পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাস্তা সম্প্রসারণ তো করতেই হবে। তবে এর জন্য কোনও নয়ানজুলি বোজানো হয়নি। মেয়র বাস্তব পরিস্থিতি না জেনেই এমন বলেছেন। নিকাশির ব্যবস্থা করা পুরসভারই কাজ।”
তা হলে এর বিকল্প কী? পুরমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বার কেএমডিএ এবং সেচ দফতরের সঙ্গে আগে থেকে এই আলোচনা সেরে নেন মেয়র। এ বার তিনি তা করেননি।” সাধারণ ভাবে ৮ জুন বর্ষা আসে। এ বছর বর্ষা আসার সময় পিছোতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সেই হিসেবে দিন দশেক আগে প্রাক-বর্ষা নিয়ে এ দিন বৈঠক করলেন মেয়র। ফিরহাদ আরও বলেন, “মেয়রের উচিত ছিল বর্ষার ঠিক আগের মূহূর্তে এই বৈঠক না করে অনেক আগেই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প পথ খুঁজে বার করা।”
তা হলে কি এ বারও বর্ষায় ভাসবে কলকাতা? মেয়র জানান, চড়িয়াল খালে পাইপ সরানো নিয়ে এবং বাইপাসের দু’দিকের বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশি নিয়ে অবিলম্বে কেএমডিএ এবং সেচ দফতরকে রিপোর্ট দিতে বলা হবে। তবে বর্ষার আগে কেওড়াপুকুর, মহেশতলার পদিরহাটি এবং মণিখালি পাম্পিং স্টেশন চালু হয়ে যাবে। তাতে গত বারের চেয়ে সমস্যা অনেক কম হবে।