ভি আই পি রোডের উপরে বাগুইআটির নতুন উড়ালপুল চালু হয়ে যাবে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই। কলকাতা থেকে দমদম বিমানবন্দর হয়ে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার এই ব্যস্ত রাস্তায় যানজট ছিল নিত্যসঙ্গী। বিশেষত, কেষ্টপুর ও বাগুইআটিতে তীব্র যানজটে থমকে যেত গাড়ির গতি। যানজট কমাতে উড়ালপুলের পাশাপাশি কেষ্টপুর, বাগুইআটি এবং তেঘরিয়ায় তিনটি আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হয়।
সম্প্রতি কেষ্টপুর এবং বাগুইআটির আন্ডারপাস দু’টি লোক চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে যানজট অনেকটাই কমেছে। তবে তেঘরিয়ায় জোড়ামন্দিরের কাছে আন্ডারপাস তৈরির কাজ শেষের পথে। ওটি চালু হলেই যান-সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে বলে মনে করছেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূণের্র্ন্দু বসু।
কেষ্টপুর থেকে তেঘরিয়া পর্যন্ত ২১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বাম আমলেই। উড়ালপুল তৈরির জন্য নকশা-সহ সব খুঁটিনাটি কাজ করেছিল বাম সরকার। কিন্তু তারা উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু করতে পারেনি। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার উড়ালপুল তৈরির কাজে হস্তক্ষেপ করে। ইউপিএ-২ সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী থাকার সুবাদে দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জেএনএনইউআরএম পরিকল্পনায় টাকা বরাদ্দ করেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের দেয় ৩৫ শতাংশ টাকা ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে। রাজ্যের দেয় ৬৫ শতাংশ টাকার বেশির ভাগই দফায় দফায় দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই দ্রুত কাজ হচ্ছে বলে জানান পূর্ণেন্দুবাবু।
রাজ্যের বর্তমান কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবু রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার বিধায়ক। তাঁরই এলাকার মধ্যে পড়ে ভি আই পি রোড।
শ্রমমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি উদ্যোগী হয়ে কেষ্টপুর থেকে তেঘরিয়া পর্যন্ত অংশে সব বেআইনি দোকান, হকার ও জবরদখল সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করেন। এ ছাড়াও টেলিফোন পোস্ট, বিদ্যুতের লাইন এবং কেষ্টপুর খাল সংস্কার করে রাস্তা চওড়া করার কাজও শেষ হয়। পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, “এই উড়ালপুল তৈরির ব্যাপারে দমদমের সাংসদ সৌগতবাবুর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার সুবাদে সরকারের থেকে টাকা আনতে সাহায্য করেছেন। সমস্ত বাধা কাটাতে তিনি আমাদের সঙ্গে সব সময়ে পাশে থেকেছেন। তাঁর চেষ্টার জন্যই দ্রুত গতিতে উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়।”
পূর্ণেন্দুবাবু আরও জানান, ভি আই পি রোড থেকে হকার সরানো হলেও সব হকারের পুনর্বাসন করা হয়েছে। কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। ২১২ কোটি টাকার এই প্রকল্পে উড়ালপুল তৈরি ছাড়াও আন্ডারপাস এবং রাস্তা চওড়া করার কাজও হচ্ছে। দমদম পার্কের কাছে রাস্তা চওড়া করার কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে। তখন উড়ালপুল গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেই মতোই কাজ এগোচ্ছে। উড়ালপুল চালু হলে কলকাতা থেকে বিমানবন্দর যেতেও সময় কম লাগবে। পূর্ণেন্দুবাবু জানান, দমদম বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করার কাজ দ্রুত শেষ হলে যাতায়াতের অনেক সুবিধা হবে। দলের জেলা পর্যায়ের বৈঠকে তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।