দমদম ক্যান্টনমেন্ট

পুর অনুমোদনে প্রতিরক্ষা দফতরের জমিতেই বহুতল

দমদম পুরসভার অন্তর্গত দমদম ক্যান্টনমেন্ট মৌজার অধিকাংশ বহুতল বাড়ি গড়ে উঠেছে প্রতিরক্ষা দফতরের জমির উপরে। অভিযোগ, এই তথ্য জানা সত্ত্বেও গত ১০ বছর ধরে কমপক্ষে ৯৫টি প্লটে প্রতিরক্ষা দফতরের জমিতে বাড়ির নকশা অনুমোদন করেছে দমদম পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০২:০৬
Share:

দমদম পুরসভার অন্তর্গত দমদম ক্যান্টনমেন্ট মৌজার অধিকাংশ বহুতল বাড়ি গড়ে উঠেছে প্রতিরক্ষা দফতরের জমির উপরে। অভিযোগ, এই তথ্য জানা সত্ত্বেও গত ১০ বছর ধরে কমপক্ষে ৯৫টি প্লটে প্রতিরক্ষা দফতরের জমিতে বাড়ির নকশা অনুমোদন করেছে দমদম পুরসভা। সেই সব জায়গায় গড়ে উঠেছে বহুতল। চড়া দামে তা বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। এখন কেনা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করাতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন ক্রেতারা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ইঙ্গিত দেয়, পুরসভার এই বেআইনি কাজের ফলে শেষ পর্যন্ত অনেক বাড়ি ভাঙতে হতে পারে। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ দমদম পুর-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে জানায়, পুরসভাকে শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ১৫ দিনে হলফনামা জমা দিতে হবে। তাতে কতগুলি প্লটে তাঁরা বাড়ির নকশার অনুমোদন দিয়েছেন বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। সঙ্গে জানাতে হবে, জে এল নম্বর ও মৌজার নাম।

ক্যান্টনমেন্টের ৫৭ নম্বর মনুজেন্দ্র দত্ত রোডের একটি বহুতলের বাসিন্দা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা করে জানান, ফ্ল্যাট কেনার পরে বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। ওই জমির যে দলিল দেখানো হয়েছে তা জাল। সেই দলিলের উপরে ভিত্তি করেই পুরসভা ওই এলাকায় অসংখ্য বহুতল নির্মাণের নকশা অনুমোদন করেছে।

Advertisement

ডিভিশন বেঞ্চ এই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে প্রকৃত তথ্য জানতে চায়। আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ১৮৩৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তত্‌কালীন গভর্নর জেনারেল ওই সব জমি প্রতিরক্ষা দফতরের হাতে তুলে দেন। কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, ওই জমি প্রতিরক্ষা দফতরের। কেন্দ্র কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে ওই জমি হস্তান্তর করেনি। ২০০৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয়, ওই জমি, তার দাগ নম্বর ১১৩০, ১১৩১, ১১৪০-সহ খতিয়ান নম্বর-১ সবই প্রতিরক্ষা দফতরের। রাজ্য এগুলি হস্তান্তরের অনুমোদন দেয়নি। ব্যারাকপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সমীরণ দাস হাইকোর্টে জানান, পুরোটাই ‘খাসমহল জমি’। তাই তা হস্তান্তরের প্রশ্নই ওঠে না।

শুনানিতে সুব্রতবাবু হাইকোর্টে জানান, অনেক মানুষ মাথা গোঁজার আশ্রয়ের জন্য এই ফাঁদে পা দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে এত খোঁজ নেওয়া সম্ভব নয়। পুরসভার অনুমোদন, জাল দলিল এই সব দেখেই তাঁরা বিশ্বাস করেছেন। এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, প্রায় ৬৬ বিঘা জমি এই ভাবে পুরসভার সহায়তায় অনুমোদিত হয়েছে।

ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, জুলাই মাসের প্রথমে তারা মামলার চূড়ান্ত রায় দেবে। এ দিন পুরসভার ভূমিকায় ডিভিশন বেঞ্চ ক্ষোভ প্রকাশ করে। কয়েক দিন আগেই মুম্বইতে হাইকোর্টের নির্দেশে এমনই অনেক বহুতল ভেঙে ফেলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement