প্রতীক্ষার নতুন ঠিকানা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
অফিস কিংবা স্কুল যাওয়ার সময়, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, এত দিন দাঁড়িয়ে থাকতে হত খোলা আকাশের নীচে। এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে বাসিন্দারা আবেদন জানিয়েছিলেন স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। বাসিন্দাদের সেই আবেদনের কথা বিবেচনা করেই পুরসভার ১০ নম্বর বরো-র কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ শহরতলির উদয়শঙ্কর সরণি এবং অরবিন্দনগর ও বিজয়গড়ের মোড়ে একটি বিশ্রামাগার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনামাফিক তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সুসজ্জিত বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঋষি অরবিন্দ বিশ্রামাগার।’
১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান এবং ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত বলেন, “বিশ্রামাগারটি শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদাদেবী, স্বামী বিবেকানন্দ, মাদার টেরেজা এবং ঋষি অরবিন্দের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। রাতে আলোর ব্যবস্থাও রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এখানকার বাসিন্দারা আমার কাছে ওই জায়গায় একটি বিশ্রামাগার তৈরির আবেদন জানিয়েছিলেন। আর খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।”
তবে বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, শহর জুড়ে অনেক জায়গাতেই সুন্দর যাত্রী প্রতীক্ষালয়, বিশ্রামাগার তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই বেশ কয়েকটির হতশ্রী চেহারা। উধাও হয়ে গিয়েছে মনীষীদের ছবি। আলোর সরঞ্জামও মাস কয়েক পরে নষ্ট হয়ে যায়। কয়েকটি বিশ্রামাগার ভবঘুরেদের আশ্রয় স্থল হয়ে উঠেছে।
বাসিন্দাদের অনেকেই অবশ্য জানাচ্ছেন স্থানীয় বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজে প্রায় প্রতি সপ্তাহে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীরা আসেন। কাছেই নিরঞ্জন সদনেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য অনেক লোক আসেন যাঁদের বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। এ বার তাঁরা এখানে বিশ্রাম করতে পারবেন।
বাসিন্দা সমীরকুমার চক্রবর্তী বলেন, “এই এলাকায় এমন একটি বিশ্রামাগারের প্রয়োজন ছিল। শেষপর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হবে তো? তা যদি না হয় তা হলে এত টাকা খরচ করে বিশ্রামাগার তৈরি করেও কোনও লাভ হবে না।”
তবে বাসিন্দাদের এই সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে তপনবাবু বলেন, “ওই বিশ্রামাগার রক্ষণাবেক্ষণ করা আমার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বাসিন্দাদের আবেদনের প্রতি মর্যাদা জানিয়েই এটি তৈরি করা হয়েছে। বিশ্রামাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে লোক নিয়োগও করা হয়েছে।”