প্রাতর্ভ্রমণকারীদের ‘কল্যাণে’ রবীন্দ্র সরোবরে সিসিটিভি

রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণ করার সময়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বিক্ষোভের মুখে পড়ার পরেই তড়িঘড়ি সেখানে সিসিটিভি বাসানোর সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। খুব দ্রুত এই কাজ শেষ করা হবে বলে দাবি করেছে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০১:৪২
Share:

রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণ করার সময়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বিক্ষোভের মুখে পড়ার পরেই তড়িঘড়ি সেখানে সিসিটিভি বাসানোর সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। খুব দ্রুত এই কাজ শেষ করা হবে বলে দাবি করেছে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট। সম্প্রতি এই ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরা রবীন্দ্র সরোবরে একটি সমীক্ষা চালান। তবে কোথায়, কী ভাবে এই সিসিটিভিগুলি লাগানো হবে, প্রকল্পে মোট খরচ কত এ সব নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পাঁচ দিনের মাথায় রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণ করতে গিয়ে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন কল্যাণবাবু। তাঁর অভিযোগ ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে অপপ্রচার ও কুত্‌সা করছিলেন ওই প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। তিনি তার প্রতিবাদ করেছেন মাত্র। পরে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের এ কথাও জানান, সকালে রবীন্দ্র সরোবরে ‘আরএসএস’-এর কার্যকলাপ চলছে। তাঁদের উপর নজরদারি করতেই তড়িঘড়ি সিসিটিভি বসানোর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন অনেকে।

কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবরে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। সেই প্রকল্পে অবশ্য সিসিটিভি বসানোর কোনও পরিকল্পনা আগে ছিল না। সপ্তাহ দুয়েক আগে সিসিটিভি বসানোর আর্জি জানিয়ে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয় কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষকে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল রবীন্দ্র সরোবর পর্যবেক্ষণ করার পরে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টকে রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করবে। তবে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট সূত্রের খবর, সরোবরের সুরক্ষা জোরদার করতেই এই প্রকল্প। বর্তমানে সেখানে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া পুলিশও মোতায়েন করা থাকে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পূর্ব) দেবব্রত দাস বলেন, “কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টকে সিসিটিভি বসানোর ব্যাপারে আর্জি জানানো হয়েছে। এত বড় সরোবরের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা আরও বেশি নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে সিসিটিভি বসানো হচ্ছে বলে আমার অন্তত জানা নেই।” তবে পুলিশের একাংশের দাবি, বর্তমানে রবীন্দ্র সরোবরে ছিনতাই বা দুষ্কৃতী-হামলা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু পুলিশ থাকলেও এত বড় জায়গায় নজরদারি ঠিক মতো রাখা কার্যত অসম্ভব। তাই সিসিটিভি থাকলে অনেকটাই সুবিধা হবে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এত দিন এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না করে সাংসদ বিক্ষোভের মুখে পড়ার পরেই সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন?

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সিসিটিভি বসানোর পরিকল্পনা অনেক দিন আগেই করা হয়েছিল। সাংসদের বিক্ষোভের মুখে পড়া একটি স্বতন্ত্র ঘটনা। যে কোনও ব্যক্তিই যে কোনও সময়েই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে পারেন। বিক্ষোভের মুখেও পড়তে পারেন। তার সঙ্গে সিসিটিভির কোনও সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না। চুরি, ছিনতাই বা দুষ্কৃতীর হামলা থেকে নিরাপত্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়নের সঙ্গে ধাপে ধাপেই এই কাজ করা হচ্ছে।”

মন্ত্রীর দাবি, রবীন্দ্র সরোবর ছাড়াও সুভাষ সরোবর এবং নবদিগন্তেও এই ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন