পুলিশের মনোভাবে বদল না এলে ১০০ ডায়ালে কী লাভ

আধুনিকীকরণে নিত্যনতুন ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুলিশ। কর্তারা বলছেন, বদল আনা হচ্ছে পুলিশি ব্যবস্থাতেও। কিন্তু পুলিশের মানসিকতা বদলাচ্ছে কি? রবিবার রাতে ভবানীপুরে ট্যাক্সিচালকদের হাতে দুই ব্যক্তির নিগ্রহের ঘটনার পরে ফের এই প্রশ্নটাই উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের মানসিকতা না বদলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৫
Share:

আধুনিকীকরণে নিত্যনতুন ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুলিশ। কর্তারা বলছেন, বদল আনা হচ্ছে পুলিশি ব্যবস্থাতেও। কিন্তু পুলিশের মানসিকতা বদলাচ্ছে কি? রবিবার রাতে ভবানীপুরে ট্যাক্সিচালকদের হাতে দুই ব্যক্তির নিগ্রহের ঘটনার পরে ফের এই প্রশ্নটাই উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের মানসিকতা না বদলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়েও।

Advertisement

রবিবার রাতে দিল্লি প্রবাসী সফটওয়্যার ব্যবসায়ী চন্দন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বন্ধু ইন্দ্রনীল চক্রবর্তীকে মারধর করেন একদল ট্যাক্সিচালক। অভিযোগ জানাতে ঘটনাস্থল থেকেই ‘১০০’ ডায়ালে ফোন করেন চন্দনবাবু। অভিযোগ, লালবাজারের কন্ট্রোলে বসে থাকা পুলিশকর্মী ‘১০০’ ডায়ালে ফোন ধরে তাঁকে বলেন, ট্যাক্সি সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি শোনেন না। ১০৭৩ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে হবে। এর পরে দু’বারের চেষ্টায় ১০৭৩ নম্বরে লাইন পান তিনি। সেখানেও অবশ্য কোনও সাহায্য পাননি চন্দনবাবু। বরং ওই নম্বরে বসে থাকা পুলিশকর্মী নিজেদের অসুবিধার কথা জানিয়ে তাঁকে উপদেশ দেন, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে ভবানীপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে।

শহরের বাসিন্দারা বলছেন, কলকাতা পুলিশ নাগরিকদের পরিষেবায় ঘটা করে ১০০ ডায়াল এবং ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যানের অভিযোগের জন্য ১০৭৩ নম্বরের প্রচার করে। রাস্তায় রাস্তায় হোর্ডিং দিয়ে সাহায্যের কথা বলে। কিন্তু সেই সাহায্যের আসল ছবিটা কেমন, তা রবিবার রাতেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন চন্দনবাবু। এর পরেও লালবাজারের শীর্ষকর্তারা কী ভাবে আপৎকালীন সাহায্যে জরুরি নম্বরের কথা বলবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিকেরা।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে খাস লালবাজারের অন্দরেও। পুলিশেরই একাংশ বলছেন, ১০০ ডায়াল কিংবা ১০৭৩ নম্বর জরুরি পরিষেবার অন্তর্গত। তা হলে কেন সেই নম্বরে ফোন করে কেন এক জন নাগরিক সাহায্য পেলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি, ১০৭৩ নম্বরে বসে থাকা পুলিশকর্মীরা কেন ভবানীপুর থানায় যেতে বলে দায় এড়ালেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের অনেকে।

১০০ ডায়ালের এমন বিভ্রাট অবশ্য এই প্রথম নয়। ২০১১ সালে উল্টোডাঙায় বিধান আবাসনের ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় ১০০ ডায়ালের ফোন চলে গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কন্ট্রোলে। এর পরবর্তী কালেও একাধিক বার কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়াল বিভ্রাটের অভিযোগ উঠেছে। কেন বারবার এমন জরুরি নম্বর নিয়ে অভিযোগ উঠছে? কেনই বা ট্রাফিকের জরুরি নম্বরও (১০৭৩) এ ভাবে দায় এড়াল?

এ ব্যাপারে লালবাজারের পুলিশকর্তারা বলছেন, ১০০ ডায়ালে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গেই ভবানীপুর থানার পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিষয়টি ১০৭৩ নম্বরে জানিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্রের বক্তব্য, “পুলিশের সক্রিয়তায় অভিযোগকারী সন্তুষ্ট।”

চন্দনবাবু নিজে বলছেন, “১০০ ডায়াল এবং ১০৭৩ নম্বরে ফোন করে আমি কোনও সহযোগিতা পাইনি। তবে ভবানীপুর থানায় যেতে ওখানকার পুলিশই সব রকম ব্যবস্থা নেয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন