বাগুইআটিতে ফের চুরি, প্রশ্নে আইন-শৃঙ্খলা

কখনও নিরাপত্তারক্ষীর হাত-পা বেঁধে মোটরবাইক চুরি, কখনও বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে বাড়ির দামি জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেওয়ার ঘটনা। বিধাননগর কমিশনারেটের বাগুইআটি এলাকায় বারবার চুরির ঘটনা এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আগেই। এ বার শনিবার গভীর রাতে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির একটি বাড়িতে ঘরের দরজার ছিটকিনি ভেঙে দুষ্কৃতীরা চুরি করে নিয়ে গেল বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না, পনেরো হাজার টাকা, চারটি মোবাইল ও হাতঘড়ি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

চুরির পরে বাগুইআটির বাড়িতে গৃহকর্ত্রী। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও নিরাপত্তারক্ষীর হাত-পা বেঁধে মোটরবাইক চুরি, কখনও বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে বাড়ির দামি জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেওয়ার ঘটনা। বিধাননগর কমিশনারেটের বাগুইআটি এলাকায় বারবার চুরির ঘটনা এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আগেই। এ বার শনিবার গভীর রাতে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির একটি বাড়িতে ঘরের দরজার ছিটকিনি ভেঙে দুষ্কৃতীরা চুরি করে নিয়ে গেল বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না, পনেরো হাজার টাকা, চারটি মোবাইল ও হাতঘড়ি। দুষ্কৃতীরা এখনও অধরাই। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কমিশনারেট এলাকায় টহলদারি বেড়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব এলাকায় ক্রমশই বাড়ছে। শনিবার মধ্যরাতে বাড়ির লোকের উপস্থিতিতে এই চুরি ফের তা প্রমাণ করল সপ্তাহখানেক আগেই চিনার পার্ক লোকনাথ মন্দিরের কাছে একটি আবাসনে রক্ষীকে বেঁধে দু’টি মোটরবাইক চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। তার জের কাটতে না কাটতেই অ্যাথলিট পিঙ্কি প্রামাণিকের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এর পরে ফের শনিবার বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লিতে প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী সর্বার্থ দত্তগুপ্তের বাড়িতে এই চুরির ঘটনা। প্রশ্ন উঠেছে, কমিশনারেট হওয়ার পরে আদৌ কি কোনও লাভ হয়েছে এলাকার? যদিও বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকরের দাবি, “পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, আগের থেকে চুরি-ডাকাতির সংখ্যা কমেছে। বেশ কয়েকটা ঘটনার কিনারাও হয়েছে।”

Advertisement

তবে কমিশনারেটের কর্তারা অবশ্য স্বীকার করছেন, এই এলাকায় এত বেশি অলিগলি রয়েছে যে, সব জায়গায় প্রতি রাতে পুলিশি টহল দেওয়া কার্যত অসম্ভব।

শনিবারের ঘটনায় দুষ্কৃতীরা যখন চুরি করে পালাচ্ছিল তখন এক বাসিন্দার ঘুম ভেঙে যায়। চিৎকার করে আশপাশের বাসিন্দাদের ডাকার আগেই অবশ্য চম্পট দেয় চোরেরা। বাসিন্দারা দেখেন, বাড়ির তিনটি আলমারিতে রাখা টাকা উধাও। নেই চারটি মোবাইল ও একটি হাতঘড়ি। গৃহকর্ত্রী রাণু দত্তগুপ্ত বলেন, “যে ঘরে আমি, মেয়ে ও নাতনি ঘুমোচ্ছিলাম, সেই ঘরের আলমারি থেকে গয়না ও টাকাপয়সা নিয়ে গিয়েছে চোরেরা। আট গাছা সোনার চুড়ি, সোনার হার, চারটে কানের দুল ও একটা আংটি খোয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় দশ ভরির গয়না।” ঘটনার পরে এখনও আতঙ্ক কাটেনি পরিবারের সদস্যদের। এমনকী, ছ’বছরের একটি শিশুকন্যাও দিনভর আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে। ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একটি বিয়েবাড়ি উপলক্ষে গয়নাগাঁটি এনে আলমারিতে রাখা হয়েছিল। আজ, সোমবারই ওই গয়না ব্যাঙ্কে রাখতে যাওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া, একটি ল্যাপটপ প্রথমে খোয়া গিয়েছে বলে মনে করা হলেও পরে সেটি পাওয়া যায় রান্নাঘরের চাতালে।

Advertisement

শেষরাতেই ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা। পুলিশের অনুমান, বাড়িতে কোথায় কী রয়েছে, সে সম্পর্কে দুষ্কৃতীরা ওয়াকিবহাল। আলমারির চাবি কোথায় রাখা ছিল, তা তাদের জানা ছিল বলেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বাড়িতে দুষ্কৃতীরা ঢুকে দরজার ছিটকিনি ভাঙল, ঘরের আলমারি খুলল, তবু কেউ কিছু টের পেলেন না কেন? তবে কি ঘুমের ওষুধ স্প্রে করা হয়েছিল? চুরির কিছুক্ষণ আগে কয়েক জন দুষ্কৃতী এলাকার ট্রান্সফর্মার বন্ধ করে এলাকায় আলো নিভিয়ে দেয়। তাদের অবশ্য পুলিশ ধরে ফেলেছে। চুরির সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিধাননগরের এসিপি অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কয়েকটি সূত্র পাওয়া গিয়েছে। আশা করা যায়, দুষ্কৃতীরা শীঘ্রই ধরা পড়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন