বাদল দিনে অঝোরধারা এসি মেট্রোর কামরাতেও

ফের রক্ষণাবেক্ষণেরই ত্রুটি। আর তার জেরে ফের যাত্রী-ভোগান্তি মেট্রোয়। কারশেডে ট্রেনগুলির মেরামতি যে ঠিক মতো হচ্ছে না, তা শুক্রবারের ঘটনায় আবার স্পষ্ট হয়ে গেল। এ দিন বেলা গড়াতেই বৃষ্টির দাপট বেড়েছিল। কিন্তু মেট্রোর কামরার ভিতরেও কেন বৃষ্টির মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩৭
Share:

অঙ্কন: সুমিত্র বসাক

ফের রক্ষণাবেক্ষণেরই ত্রুটি। আর তার জেরে ফের যাত্রী-ভোগান্তি মেট্রোয়। কারশেডে ট্রেনগুলির মেরামতি যে ঠিক মতো হচ্ছে না, তা শুক্রবারের ঘটনায় আবার স্পষ্ট হয়ে গেল।

Advertisement

এ দিন বেলা গড়াতেই বৃষ্টির দাপট বেড়েছিল। কিন্তু মেট্রোর কামরার ভিতরেও কেন বৃষ্টির মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের? দুপুর ১২টা ৪৬-এর বাতানুকূল মেট্রো রেকটি মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে ঢোকার পরে ট্রেনে উঠেই চমকে যান যাত্রীরা। কামরার ভিতরে জল থই-থই। শুধু মেঝে নয়, ছাদ দিয়ে ঝরঝর করে জল পড়ছে, বসারও উপায় নেই। কোনও মতে মাথা বাঁচিয়ে কয়েক জন বসলেন। কিন্তু চালক গিয়ার বদল করতেই ফের ছাদ থেকে ঝরঝর করে জল পড়তে শুরু করল। কয়েক জন যাত্রী আসন ছেড়ে অন্য কামরার দিকে এগোনোর চেষ্টা করলেন। অনেকে আবার কামরারই অন্য দিকে সরে দাঁড়াতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু সর্বত্রই জল। ঠাঁই নেই কোথাও।

এক যাত্রীর কথায়, ঘর বন্ধ করে উপর থেকে পাইপে জল ছিটিয়ে দিলে যেমন হয়, কামরায় তেমন অবস্থা হচ্ছিল। এক মহিলাকে দেখা গেল পোশাক বাঁচাতে ছাতা খুলে বসেছেন। আর এক মহিলা যাত্রী মন্তব্য করলেন, “একটা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে দিলে ভাল হয়।” মন্তব্যটি বোধহয় কানে গিয়েছিল চালকের। এর পরে চালকের কেবিন থেকে এক মেট্রোকর্মী কামরায় থাকা যাত্রীদের কাছে এসে বারংবার অন্য কামরায় চলে যেতে অনুরোধ জানাতে থাকেন। কিন্তু চলন্ত মেট্রোয় ভিড় লোক ঠেলে কয়েক জন এগোলেও বাকিরা প্রায় ভিজতে ভিজতেই যাত্রা করেন এ দিন।

Advertisement

মেট্রোর রেকে নানা সমস্যার জন্য যাত্রীদের ভোগান্তি এখন নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই রেক দিয়ে ধোঁয়া বেরোয়, দরজা বন্ধ হয় না, সঙ্গে রয়েছে জল পড়ার সমস্যা। বৃহস্পতিবার মেট্রো সূত্রে বলা হয়েছিল, মূলত রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটিতেই বারবার বিপত্তি ঘটছে। শুক্রবার মেট্রো চলাচলের বিপত্তি না হলেও জল পড়ার ওই ঘটনা ফের দেখিয়ে দিল রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না। মেট্রো সূত্রেও এ কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। মেট্রোকর্তারা বলেছেন, সম্ভবত ছাদে রাখা বাতানুকূল যন্ত্রের নিকাশি পাইপ পরিষ্কার না থাকায় ঘটনাটি ঘটছে।

কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি মেরামত করতে মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই তো ব্যবস্থা নিতে হবে। মেট্রোকর্তাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, কর্মীরা কাজ না করলে তা দেখা দায়িত্ব অফিসারদের। জেনারেল ম্যানেজার না হয় অস্থায়ী, কিন্তু বাকি স্থায়ী অফিসারেরা কী করছেন? রেলের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুর বলেন, “এ সব ত্রুটি মোটেই বড় কিছু নয়, খুব সাধারণ। একটু নজর দিলেই কমে যাওয়ার কথা।”

টানেলের ভিতরে মেট্রো আটকে পড়ার ঘটনার দিন কোনও খবর পাননি বলে দায় এড়িয়েছিলেন মেট্রোকর্তারা। এর পরে আবার জল পড়ার মতো ‘ছোটখাটো ত্রুটি’। মেট্রোকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, গোলমালের জন্য শুধু কর্মী নয়, অফিসারদেরও দায় নিতে বাধ্য করতে হবে। তবেই কমবে মেট্রোর ত্রুটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন