বেলঘরিয়ার বাসিন্দা কাজল ভট্টাচার্যের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চিন্ময় নাথককে মঙ্গলবার ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত দিল ব্যারাকপুর আদালত। গত রবিবার যতীন দাস নগরে পুকুরে জামা ধোয়াকে ঘিরে কাজলবাবুর ভাই প্রদীপের সঙ্গে বচসা হয় চিন্ময়ের। অভিযোগ, বচসা থামাতে গিয়ে কাজলবাবু প্রশ্ন করেন, চিন্ময় প্রতিদিন কেন মত্ত অবস্থায় ঝামেলা করবে। এর পরেই তাঁকে মাটিতে ফেলে বুকে ঘুষি, লাথি মারে চিন্ময়। তাতেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কাজলবাবুর।
এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে চিন্ময়ের দিদি শম্পা গোটা ঘটনার পিছনে চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “ওই পুকুরে মাছ চাষ হয় বলে ভাই প্রদীপবাবুকে জামা ধুতে বারণ করছিল।” তাঁর দাবি, ওই পুকুরে মাছ চাষ থেকে আয়ের হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তোলার অপরাধেই চিন্ময়কে ফাঁসানো হয়েছে। কাজলবাবুর আগেই হৃদ্রোগ ছিল বলে জানান শম্পা। এলাকাবাসী অবশ্য মাছ চাষ নিয়ে গণ্ডগোলের কথা মানতে চাননি।
পাশাপাশি, চিন্ময় কোনও দিনই তৃণমূল করেনি বলেও দাবি করেন শম্পা। তিনি বলেন, “আমরা সারা জীবন সিপিএমের হয়েই কাজ করেছি। দল যখন যে ভাবে খুশি চিন্ময়কে ব্যবহার করেছে। এখন আমরা রাজনীতি করি না। তাই ওরা ফাঁসিয়ে দিল। তৃণমূল করলে দলের কেউ এ সময়ে পাশে আসতেন।” সমস্তই অস্বীকার করেছেন কাজলবাবুর দাদা সিপিএম কাউন্সিলর প্রিয়ব্রতবাবু। তবে কামারহাটির চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা গোপাল সাহা বলেন, “আগেও বলেছি, এখনও বলছি, ওই ব্যক্তি সিপিএমের হয়ে কাজ করতেন। আজ ওঁর দিদির কথায় তা স্পষ্ট হয়ে গেল।”
চিন্ময়ের স্ত্রী চন্দ্রা নাথক জানান, ঘটনার পর থেকেই তিনি ভয়ে ঘর ছাড়া। তিনি বলেন, “বাড়ি ফিরলেই এলাকার লোকজন ফের হামলা করবে, ভাঙচুর চালাবে।” যদিও ব্যারাকপুরের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ওঁরা বাড়ি ফিরতেই পারেন। কোনও সমস্যা হবে না।”
কাজলবাবুর পাড়ায় এ দিনও ছিল শোকের ছায়া। তাঁর একমাত্র ছেলে পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, “বাবা দেখিয়ে গেলেন কী ভাবে প্রতিবাদ করতে হয়। আর কোনও দিনই কিছুতে ভয় পাব না।”
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রীতি পটেল।
মঙ্গলবার বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।