তৈরি হয়েও এ ভাবেই পড়ে রয়েছে আন্ডারপাসটি। —নিজস্ব চিত্র
শ্যামবাজার থেকে মাত্র কয়েক মিনিটেই পৌঁছনো যাবে ভিআইপি রোডে। উল্টোডাঙা মেন রোড হয়ে ঘুরে যেতে হবে না। বিধাননগর স্টেশনের নীচে একটি আন্ডারপাস গড়ে সেই পথ বানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে তৈরি হলেও ওই পথ চালু করা যাচ্ছে না স্থানীয় কিছু মানুষের আপত্তিতে, যাঁরা ওই রাস্তায় বাস করেন। তাঁদের দাবি, মনোমত জায়গায় পুর্নবাসন দিতে হবে।
কবে চালু করা যাবে ওই পথ, তা দেখতেই শনিবার এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে এবং পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ সেখানে যান। তাঁদেরও শুনতে হয়েছে, পুনর্বাসন না দেওয়া হলে পথ খালি করা হবে না। এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। কাউন্সিলর সিপিএমের বিরতি দত্ত।
পুরসভা সূত্রে খবর, বাম আমলেই ওই পথ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরিকল্পনাতেই বলা হয়েছিল ওই এলাকা জুড়ে বসবাসকারীদের পুর্নবাসন দেওয়া হবে। ক্ষমতায় থাকাকালীন অবশ্য বামেরা সেই কাজ করতে পারেনি। ২০১০-এ তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় এসেই ওই কাজে গুরুত্ব দেয়। প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্ডারপাস করা শেষ হয়েছে। কিন্তু তা চালু করা যাচ্ছে না।
বর্তমান মেয়র পারিষদ সুশান্তবাবু জানান, ওই পথে বসবাসকারী ২২টি পরিবারকে নোনাডাঙায় বাড়ি দেওয়ার কথা হয়েছিল। প্রথমে রাজি হয়েও পরে তাঁরা সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। ফের ওই এলাকায় একটি জায়গা খুঁজে বার করা হয়। সিপিএমের বিরোধী নেত্রী রূপা বাগচিও জায়গা দেখেছিলেন। পরে সেখানে ৩৯টি ঘর বানানো হয়েছে। যার মধ্যে ২২ টি ওই সব পরিবারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এখন সেখানেও যেতে রাজি নন ওঁদের কেউ কেউ।
মন্ত্রী সাধনবাবু বলেন, “স্থানীয় কাউন্সিলর বিরতি দত্তের উসকানিতেই ওঁরা পুরসভার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না। এই উন্নয়নের পিছনে রাজনীতি করছে স্থানীয় সিপিএম।” তিনি জানান, যে জায়গায় ঘরগুলি করা হয়েছে, তা ওঁদের বর্তমান বাসস্থানের ১০০ ফুটের মধ্যেই। যদিও বিরতি দত্ত বলেন, “আন্ডারপাস করার সময়ে বলা হয়েছিল ওঁদের মনমতো জায়গায় পুর্নবাসন দেওয়া হবে। তা না মেলায় এখন ওঁরাও সরতে চাইছেন না।” এখানে তাঁর কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।
তবে প্রশাসন আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়, এমনটাই জানালেন সাধনবাবু। তাঁর বক্তব্য, “প্রতিদিনই অসংখ্য রোগীকে আর জি করে যেতে হয় অনেক ঘুরপথে। তাঁদের কথা ভেবেই দ্রুত ওই রাস্তা চালু করা দরকার।” এ বার সেই পথেই এগোতে হবে বলে জানালেন মেয়র পারিষদ সুশান্তবাবুও।