এটাই চেনা ছবি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
বিটি রোডে সার দিয়ে রয়েছে বাতিস্তম্ভ। কিন্তু অধিকাংশেরই বেহাল দশা। উচ্চতার জন্য রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই দশা বলে জানাচ্ছে প্রশাসন। ফলে অন্ধকারে এ রাস্তায় মাঝেমধ্যেই ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা।
পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২-এ বিটি রোডে রাতে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯টি। ২০১৩-এ সংখ্যাটা বেড়ে হয় ২৬। ২০১৪-এর মে মাসের মধ্যেই তা ১৩। এর অন্যতম কারণ যে আলোর অভাব তা স্বীকার করেছেন পুলিশকর্মীরাও। সবথেকে ভয়ঙ্কর অবস্থা হেলে থাকা বাতিস্তম্ভগুলির। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝোড়ো হাওয়ায় সোদপুরে একটি বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়ে। জখম হন দু’জন। এর আগে আগরপাড়া স্টেশন মোড়ের কাছে বাতিস্তম্ভ ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। জখম হয়েছিলেন তিন জন।
অভিযোগ, বাতিস্তম্ভগুলি এতই লম্বা আলো রাস্তা অবধি ভাল ভাবে পৌঁছয় না। টিটাগড়, সোদপুর, কামারহাটিতে একটানা বেশ কয়েকটি বাতিস্তম্ভ জ্বলে না। ডানলপ থেকে ব্যারাকপুরের মধ্যে হেলে থাকা খুঁটির সংখ্যা ছ’টি। ওই জায়গায় অনেকগুলি বাতিস্তম্ভে আলোও জ্বলে না।
বাতিস্তম্ভগুলি দেখভাল ও আলো জ্বালানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পুরসভার। পুরসভার পক্ষ থেকে ঠিকমতো দেখভাল হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘বাতিস্তম্ভগুলি অতিরিক্ত উঁচু হওয়ায় রাস্তায় প্রয়োজনীয় আলো এসে পৌঁছয় না। তা ছাড়া রোদে, জলে লোহার খুঁটির গোড়াগুলি দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আলো খারাপ হলে অত উঁচুতে উঠে সারাতে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই এ বার বাতিস্তম্ভগুলিকে কেটে ছোট করে দেওয়া হচ্ছে। তাতে বিটি রোডে আলোর পরিমাণও বাড়বে, মেরামতিতেও সুবিধা হবে।’’
কামারহাটি বা পানিহাটি পুরসভার পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, আধুনিক স্বয়ংক্রিয় মই না থাকায় এত উঁচু বাতিস্তম্ভে উঠে আলো মেরামত করায় অসুবিধা হচ্ছে। তবে পথচারীদের অভিযোগ, পুরসভাগুলি আয়ের জন্য এই বাতিস্তম্ভ বিজ্ঞাপনের জন্য ভাড়া দিলেও যত্নের বেলায় উদাসীন। ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপনের টাকা থেকে বিদ্যুতের খরচই ওঠে না। তার উপর নিয়মিত দেখভালের খরচ আছে। তবে বাতিস্তম্ভগুলির দেখভালের জন্য দু’জন লোক নিয়োগ করা হয়েছে।’’