বাড়ানো হবে না আসন, জানিয়ে দিল প্রেসিডেন্সি

রাজ্যের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি নিয়ে জট পাকিয়েছে। অবস্থান-আন্দোলন হয়েছে। তবে সেখানে স্নাতক নয়, জটিলতার মূলে আছে স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের চাপের কাছে মাথা নত করছেন না। স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবিতে রাতভর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেছিলেন প্রেসিডেন্সির এক দল পড়ুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৬
Share:

রাজ্যের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি নিয়ে জট পাকিয়েছে। অবস্থান-আন্দোলন হয়েছে। তবে সেখানে স্নাতক নয়, জটিলতার মূলে আছে স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের চাপের কাছে মাথা নত করছেন না।

Advertisement

স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবিতে রাতভর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেছিলেন প্রেসিডেন্সির এক দল পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া জানিয়ে দিয়েছেন, আসন বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কোনও আবেদন জানাবে না বিশ্ববিদ্যালয়। যে-নিয়মে স্নাতকোত্তরে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার শুরু হয়েছিল, সেই পদ্ধতিতেই ভর্তির প্রক্রিয়া চলবে। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য আলাদা করে আর ভর্তি কমিটির কোনও বৈঠক ডাকা হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি সুমাল্য মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানান, তাঁরা এই বন্দোবস্ত মানছেন না। প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে আজ, শুক্রবার বৈঠকে বসবে ছাত্র সংসদ।

Advertisement

গত ২১ জুলাই স্নাতকোত্তরে আসন বাড়ানোর দাবিতে এক দল ছাত্রছাত্রী রাতভর অবস্থান করেন প্রেসিডেন্সিতে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, স্নাতকোত্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য ন্যূনতম নম্বর পেয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না ২২ জন। তাঁদের ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানায় ছাত্র সংসদ। অনুরাধাদেবী তখন জানিয়েছিলেন, আসন বাড়ানোর কোনও ক্ষমতা তাঁর নেই। তবে ছাত্রছাত্রীদের দাবির প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির বৈঠক ডেকে এই বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ। বৈঠকের পরে অনুরাধাদেবী বলেন, “ভর্তি শুরু হওয়ার আগে যে-পদ্ধতির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল, মাঝপথে কোনও ভাবেই তা বদলানো হবে না।” সেই ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম মেধা-তালিকার ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে সব আসন পূরণ না-হলে দ্বিতীয় মেধা-তালিকা থেকে ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তি করা হবে। অনুরাধাদেবী জানান, এ দিনের বৈঠকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই নিয়ম বদলের প্রয়োজন নেই। সর্বসম্মত ভাবে এই সিদ্ধান্ত হওয়ায় ভর্তি কমিটির বৈঠক ডাকার আর কোনও দরকার নেই। আসন বাড়াতেও তাঁরা সরকারের দ্বারস্থ হবেন না বলে এ দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ।

যে-সব ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করে নেওয়াার জন্য ছাত্র সংসদ দাবি জানিয়েছে, তাঁরা সকলেই দ্বিতীয় মেধা-তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের সকলেরই ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। তা হলে আর এই দাবি কেন?

ছাত্র সংসদের অভিযোগ, স্নাতকোত্তরে বারবার আসন বাড়ানোর কথা বলা হলেও কর্তৃপক্ষ তা কানে তোলেননি। স্নাতকের তুলনায় স্নাতকোত্তরে ৯১টি আসন কম। এই ফারাক দূর করতেই হবে বলে দাবি তুলেছে ছাত্র সংসদ।

ছাত্রছাত্রীদের রাতভর অবস্থানের সময় ওই আন্দোলনের সমালোচনা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “এটি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমি এই বিষয়ে কিছু বলব না। তবে আমার বিশ্বাস, প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-সহ সকলেই ওই প্রতিষ্ঠানের গৌরব ও ঐতিহ্যের কথা মাথায় রাখবেন। এমন কিছু করবেন না, যাকে লোকে বেআইনি বলে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন