বর্ণময় সন্ধ্যায় আভিজাত্যের আনন্দ যাপন

এক উজ্জ্বল অভিযাত্রার সাক্ষী রইল শহর। ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার মিশেলে গড়া চার দশকের যাত্রাপথ। উজ্জ্বলতর ভবিষ্যৎ যার নিশ্চিত গন্তব্য। শুক্রবার গ্র্যান্ড হোটেলে পি সি চন্দ্র জুয়েলার্স-এর সহযোগিতায় ‘আনন্দ’-এর চল্লিশ বছর পূর্তির উৎসব সেই বার্তা ছড়িয়ে দিল।

Advertisement

সুচন্দ্রা ঘটক

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:০৪
Share:

‘শো স্টপার’ আমান আলি খান। উপলক্ষ ‘আনন্দ’-এর চল্লিশ বছর পূর্তি। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এক উজ্জ্বল অভিযাত্রার সাক্ষী রইল শহর। ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার মিশেলে গড়া চার দশকের যাত্রাপথ। উজ্জ্বলতর ভবিষ্যৎ যার নিশ্চিত গন্তব্য।

Advertisement

শুক্রবার গ্র্যান্ড হোটেলে পি সি চন্দ্র জুয়েলার্স-এর সহযোগিতায় ‘আনন্দ’-এর চল্লিশ বছর পূর্তির উৎসব সেই বার্তা ছড়িয়ে দিল।

নানা রঙের মায়াবী আলো, সাবেক শ্যান্ডেলিয়র, নতুন-পুরনো সুরের মিশেল। ৪০ বছরের ইতিহাসও তো তেমনই। ঐতিহ্যের ভিতের উপরে আধুনিকতার চলন।

Advertisement

চল্লিশের উদযাপনে সেই পথ চলার ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনতে পাঁচ তারা হোটেলের র্যাম্প কখনও ঝলমলে হয়ে উঠল জরির পোলকা ডট শিফনে, কখনও আবার লাস্যময়ী মডেল-কন্যাদের সাজ শাড়িকে তুলে ধরল রোজের জিন্স-শার্টের বিকল্প হিসেবে। ‘আনন্দ’-এর ডিজাইনারদের ছোঁয়ায় বাঙালি শাড়ি এখন পার্টি ওয়্যারও বটে। ফ্যাশন শো-এর প্রথম দুটো রাউন্ড এ ভাবেই উঠে এল শাড়ির সঙ্গে বঙ্গ ললনাদের চিরন্তন সম্পর্কের গল্পটা।

ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে চলা ফাস্ট মিউজিক মনে করাচ্ছে এ কালের জীবনযাপনের ছন্দ। র্যাম্পে মডেল-কন্যাদের পরনে তখন ফ্লুরোসেন্ট সবুজ-উজ্জ্বল গোলাপি, কমলা ক্রেপ, কখনও জরিপাড় কোটা। রোজ সকালে অফিস হোক বা সন্ধের কিটি পার্টি, শাড়ির মতো মানানসই সঙ্গী যে এখনও নেই বাঙালি মহিলাদের। শুধু বেছে নিতে হবে সময়ের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঠিক মেজাজের মোটিফ, টেক্সচার আর রং। বঙ্গনারীদের স্বার্থে সে কাজই এতদিন ধরে করে চলেছে ‘আনন্দ’। একঘেয়ে সাজকে সরিয়ে দিয়ে শিল্পের ছোঁয়া এনেছে রোজের জীবনে।

এক কালে তাঁতের শাড়ি ছিল যেন শুধুই বয়স্কদের পোশাক। সেই শিল্পকে স্টাইল আইকন করে তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু হয়েছিল ফ্যাশন বিপ্লব। ফুলিয়া-ধনেখালির তাঁতিদের পরিচিত সুতো দিয়েই তৈরি হয় অভিনব মোটিফ। আবার সেকেলে সুতির শাড়িতে আনা হয় ইংরেজ মেজাজের গ্ল্যামারাস রং। কর্মশালা থেকে শুরু। তার পরে তিলে তিলে বেড়ে উঠে এ দেশের বুটিক ইতিহাসে আজ অন্যতম নাম ‘আনন্দ’।

এ দিনের ফ্যাশন শো-এর আবহ বারবার সেই পরিচয়ই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। তৃতীয় রাউন্ডে র্যাম্প আরও উচ্ছ্বল হয়ে ওঠে ‘আনন্দ’-এর আসল স্টাইল আইকনদের উপস্থিতিতে। এতকাল যাঁদের সাজিয়ে তুলেছে এখানকার ডিজাইন, শহরের বিভিন্ন বনেদি বাড়ির সেই মহিলারা ‘আনন্দ’-এর সাজে অংশ নিলেন এই উদ্যাপনে। তাঁদের প্রায় সকলেরই র্যাম্পে হাঁটার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। ‘আনন্দ’-এর সাজ তাঁদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি হতে দেয়নি।

শেষে বিয়েবাড়ির সাজ। কনে থেকে আত্মীয়— ‘আনন্দ বেনারসী’ বহু বাড়িতে এখনও শুভদিনের প্রথম পছন্দ। অনুষ্ঠানের এই পর্বে ‘আনন্দ’-এর ধুতি-পাঞ্জাবীতে জামাই বেশে র্যাম্পে এলেন শো স্টপার আমান আলি খান। সঙ্গে উজ্জ্বল রঙা বেনারসী, কাঞ্জিভরমে মডেল-কন্যারা। আবহে তখন সানাইয়ের সুর। ঐতিহ্যের এই পোশাকেও যে আধুনিকতার ছোঁয়া রাখতে ভোলেননি ডিজাইনারেরা, দেখাল ফ্যাশন শো। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল রূপঙ্করের গান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন