ভোটে যথেষ্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলবে কি, সংশয়

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পত আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন, গত বারের তুলনায় এ বার পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটে দ্বিগুণ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে। কিন্তু ভোটের সময়ে খাস কলকাতায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর অভাব শেষ পর্যন্ত মেটানো যাবে কি না, সেই সম্পর্কে এখনও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কমিশন-ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৯
Share:

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পত আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন, গত বারের তুলনায় এ বার পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটে দ্বিগুণ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে। কিন্তু ভোটের সময়ে খাস কলকাতায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর অভাব শেষ পর্যন্ত মেটানো যাবে কি না, সেই সম্পর্কে এখনও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কমিশন-ই।

Advertisement

এ বার লোকসভা ভোটে কলকাতা পুলিশ তার আওতাধীন এলাকার অনুপাতে অর্ধেক কেন্দ্রীয় বাহিনীও যে পাচ্ছে না, সেই তথ্য সম্পতের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের ফুল বেঞ্চকে জানিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর। কমিশন আগেই জানিয়েছিল, কলকাতা পুলিশের আওতাধীন এলাকায় ষোড়শ লোকসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হবে ৫০ কোম্পানি। যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ৪৩ শতাংশ বলে কলকাতা পুলিশের দাবি। লালবাজার এ বার লোকসভা ভোটের জন্য ১০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল। কারণ, গত লোকসভা ভোটের তুলনায় কলকাতা পুলিশের এলাকা এখন বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

একই কথা সিইও-র দফতর থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়। সিইও-র দফতর সূত্রের খবর, গত ৬ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকদের বৈঠকে রিটার্নিং অফিসার (উত্তর কলকাতা) দুর্গাদাস গোস্বামী এই প্রসঙ্গ তুলে এ ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য কমিশনের কাছে পেশ করেন। কমিশন অবশ্য বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে বলে সিইও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার রিটার্নিং অফিসার শেখর দত্ত বলেন, “২০০৯-এর তুলনায় কলকাতা পুলিশের এলাকা এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা যে অনেকটাই বেড়েছে, সে কথা আমরা কমিশনকে জানিয়েছি। কমিশন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি দেখছে।”

Advertisement

গত বার, ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও কলকাতা পুলিশের আওতাধীন এলাকার জন্য ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লালবাজারের বক্তব্য, ২০১১-র সেপ্টেম্বরে সংযোজিত এলাকার ১৭টি থানা অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরে কলকাতা পুলিশের এলাকার কলেবর যতটা বেড়েছে, তাতে ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নেহাতই অপ্রতুল।

লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ন্যূনতম আধ সেকশন কেন্দ্রীয় বাহিনী অর্থাত্‌ চার জন জওয়ান মোতায়েন করতে হবে। ১০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী না পেলে সেটা সম্ভব নয়।”

লালবাজার সূত্রের খবর, ২০০৯-এ কলকাতা পুলিশের এলাকা যেখানে ছিল ১০৯ বর্গকিলোমিটার, এখন তা বেড়ে হয়েছে ২৪৩ বর্গকিলোমিটার। গত বার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের জায়গায় এ বার বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৭। গত লোকসভা ভোটে কলকাতা পুলিশের আওতায় যেখানে ৭৮৮টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল, এ বার তার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪৯২। আর বুথের সংখ্যা গত বার যেখানে ছিল ২৬৩৫, সেখানে এ বার ৪৬৪৪।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ অফিসারের কথায়, “আমরা হিসেব করে দেখেছি, যে সংযোজিত এলাকা কলকাতা পুলিশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাতে ২০০৯-এর লোকসভা ভোটে ১৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল। সেই হিসেবে আমাদের অন্তত ৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া উচিত। তা-ও দেওয়া হচ্ছে না।”

চাহিদা মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি শেষ পর্যন্ত না পাওয়া যায় তবে কী হবে?

লালবাজারের ওই কর্তা বলেন, “যে সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাবে না, সে সব জায়গায় আমরা সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন