বৃষ্টি-সুখের উল্লাস। —নিজস্ব চিত্র।
ইঙ্গিত মিলেছিল ভোরেই। অবশেষে রাতে বৃষ্টি এল । সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। ৩৯ দিন পর।
লাগাতার গরমে নাজেহাল শহরবাসী গোটা এপ্রিল মাস জুড়েই চাতকের মতো বসেছিলেন। কিন্তু এক ফোঁটা বৃষ্টিও জোটেনি কপালে। উল্টে এপ্রিলের শেষ লগ্নে টানা পাঁচ দিন তাপপ্রবাহ সইতে হয়েছে। শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সেই দাপট না মিললেও শহরে রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে।
ঝড়বৃষ্টি যে হতে পারে, রেডার চিত্র ঘেঁটে সন্ধ্যাবেলাতেই সে ইঙ্গিত পেয়েছিলেন হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরাও। রাত সওয়া আটটা নাগাদ অবশেষে হাজির হয় বৃষ্টি-ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টি হয় প্রায় ১ মিলিমিটার। আলিপুরে এ দিন হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬ কিলোমিটার। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মধ্য ও দক্ষিণ, উত্তর কলকাতা ও উত্তর শহরতলিতেই ঝড়বৃষ্টির দাপট ছিল বেশি। হাওড়াতেও ঝোড়ো হাওয়া-সহ অল্পবিস্তর বৃষ্টি হয়েছে বলে খবর।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া ও সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডে একটি মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তা বয়ে আসে কলকাতা ও সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনার দিকে। তার সৌজন্যেই এই ঝোড়ো হাওয়া-বৃষ্টি।
আবহবিদেরা বলছেন, উত্তরবঙ্গে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্তের জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। এ দিন ভোরের মেঘলা আকাশও ঘূর্ণাবর্তেরই ফল। হাওয়া অফিস বলছে, মেঘলা আকাশ এবং দমকা হাওয়ার জেরেই এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি।
বৃষ্টি আসতেই শহরবাসীকে কিছুটা আশার কথা শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। তারা বলছে, গোটা রাজ্য জুড়েই ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আজ, শনিবার মূল কলকাতায় নিশ্চিত ভাবে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিতে না পারলেও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহবিদদের পূর্বাভাস। গোকুলবাবু বলছেন, “হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।”
এই ঝোড়ো হাওয়া-বৃষ্টির প্রভাব পড়তে পারে আগামী কয়েক দিনের তাপমাত্রার উপরেও। তার ফলে আপাতত গরমের কষ্ট থেকে কিছুটা নিস্তার মিলবে শহরবাসীর।
আগামী কয়েক দিন কেমন থাকবে শহরের পারদ?
“কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকবে।” —পূর্বাভাস গোকুলবাবুর।