পাতাল এবং মর্ত একই সঙ্গে আবারও ভোগালো শহরবাসীকে। শনিবারের পরে রবিবার, ছুটির দিনেও।
সারদা-কাণ্ডে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল শুক্রবার। তার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ ও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। শুক্রবার রাতেও উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় পথ অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। শনিবার দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তার দখল নেয় শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কেউ পথে নেমেছিলেন মদন মিত্রের গ্রেফতারের প্রতিবাদ করতে। কেউ আবার মুখ্যমন্ত্রীকে জেরার দাবিতে। এরই সঙ্গে সে দিন যোগ হয়েছিল মেট্রোয় বিভ্রাট।
শনিবার বিরোধীরা রাস্তায় নামলেও রবিবার অবশ্য তাঁদের কাউকেই রাস্তায় দেখা যায়নি। এ দিন গোষ্ঠ পালের মূর্তির নীচে অবস্থান মঞ্চে এবং তার সামনেও তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। কিন্তু দুপুরের দিকে ভবানীপুর এলাকায় মদন মিত্রের সমর্থনে রাস্তায় নামা তৃণমূল সমর্থকদের মিছিল মানুষকে ফের দুর্ভোগে ফেলে। বেলা ১২টা নাগাদ ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজার থেকে শুরু হওয়া ওই মিছিলের জেরে হাজরা মোড় থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত অংশে থমকে যায় যানবাহন। মিছিল শেষ হওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পরেও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
এ দিনই দুপুর পৌনে একটা নাগাদ মেট্রো চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। দমদমমুখী যে ট্রেনটির কালীঘাট স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল দুপুর দেড়টা নাগাদ, সেটি পৌঁছয় প্রায় আড়াইটেয়। মেট্রোর তরফে ঘোষণা করা হয়, ওই ট্রেনটিতে প্রচণ্ড ভিড়। যাত্রীরা যেন পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ট্রেনটিতে দমবন্ধ করা ভিড় ছিল। তাই তাতে ওঠা যায়নি। দুপুর ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ পরবর্তী ট্রেনটি কালীঘাট পৌঁছলে যাত্রীরা তাতে ওঠেন। মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত আধ ঘণ্টা অন্তর ট্রেন চলে। ২টোর পর থেকে তা ১৫ মিনিট অন্তর দেওয়া হয়। কিন্তু কী কারণে এ দিনের বিভ্রাট, মেট্রোর তরফে অবশ্য কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়াও মদন মিত্রের গ্রেফতারের প্রতিবাদে হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ হয়। তার জেরেও কলকাতায় আসা যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। রেল সূত্রের খবর, হাওড়ার রসুলপুর, মেমারি এবং তারকেশ্বরে সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ট্রেন অবরোধ করা হয়। অন্য দিকে, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ঘুটিয়ারি শরিফ এবং তালদি স্টেশনের মাঝে ১১টা থেকে আধ ঘণ্টা ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থকেরা। এর জেরে ওই শাখাগুলিতে বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।