সম্প্রতি মেট্রোয় বেড়েছে ছিনতাইকারীদের সংখ্যা। পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে কয়েক জন। এই অপরাধীদের জেরা করে পুলিশের হাতে উঠে এসেছে নতুন কিছু তথ্য। যা নিয়ে মেট্রো-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ।
জেরায় ওই অপরাধীরা পুলিশকে জানিয়েছে, স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তিগত ভাবে আধুনিক হওয়ায় ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই তারা টোকেন ব্যবহার করে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মেট্রোয় রোজ প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। এর মধ্যে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেন প্রায় তিন লক্ষ। যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বলছে, স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেরোতেই হয়। না হলে কার্ড ‘লক’ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু টোকেন দিয়ে মেট্রো চালু থাকাকালীন যে কোনও সময়ে বেরনো যায়। পুলিশের মতে, এর সুযোগ নিয়ে ছিনতাইবাজ ও কেপমারেরা সারা দিন ধরে বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে কাজ হাসিল করে। মূলত অফিসের ব্যস্ত সময়ে জনবহুল স্টেশনগুলিতেই যাতায়াত করে তারা। ভিড়ের সুযোগে স্মার্ট গেটের সামনের মেটাল ডিটেক্টরও এড়িয়ে যায়।
পুলিশকর্তাদের মতে, মেট্রোয় অন্যান্য অপরাধের তুলনায় মোবাইল চুরির ঘটনাই বেশি। প্রতি মাসে গড়ে ১০-১১টি মোবাইল চুরির অভিযোগ জমা পড়ে। তবে পুলিশের একাংশের দাবি, সব অভিযোগ ঠিক মতো মেলে না। তাই এই চুরির প্রকৃত সংখ্যা মাসে গড়ে ২০-২৫ বলেই মত তাদের। সম্প্রতি যাত্রীদের চেনানোর জন্য বিভিন্ন স্টেশনে এই মোবাইল চোরদের পোস্টার লাগিয়েছিলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে লালবাজারের কর্তাদের মত, যাত্রী সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টার পাশাপাশি মেট্রোর নিজস্ব পদ্ধতিতেই ‘গলদ’ রয়ে গিয়েছে। তাঁদের দাবি, স্মার্ট কার্ডে যেমন নির্দিষ্ট সময়ে পেরিয়ে গেলে জরিমানা দিতে হয়, টোকেনেও তা চালু হওয়া উচিত। পুলিশকর্তাদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এমন ঢিলেঢালা নিরাপত্তার সুযোগ নিয়ে বড় কোনও নাশকতা ঘটতে পারে।
গাফিলতির কথা স্বীকার করেছেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষও। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “টোকেনের এই ক্রটি ধরার পরিকাঠামোয় আমাদের নেই। তা খতিয়ে দেখা হবে।” মেট্রোয় অপরাধ দমনে পুলিশের পরামর্শ ও সহযোগিতাও আবেদন করেন তিনি।