মেট্রোয় বিভ্রাট চলছেই, ব্যবস্থা নিতে বাধা রাজনীতি

দিল্লি পেরেছিল। কলকাতা সে পথে হাঁটতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। ফলে মেট্রো বিভ্রাটের সমস্যাটাও রয়ে গেল সেই তিমিরেই। যার সর্বশেষ সংযোজন হল বৃহস্পতিবার। দুপুরে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই চাকা থেকে গলগলিয়ে ধোঁয়া, কটু গন্ধ, আতঙ্কে যাত্রীদের ছুটোছুটি। স্টেশন কর্মীরা চটজলদি ব্যবস্থা নেওয়ায় মিনিট দশেকের মধ্যেই সমস্যা মিটলেও আরও এক বার প্রশ্নের মুখে মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা। কোথায় গলদ তা ধরা যাচ্ছে না কেন, কেনই বা দায়ভার চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না— সেই প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৪
Share:

দিল্লি পেরেছিল। কলকাতা সে পথে হাঁটতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। ফলে মেট্রো বিভ্রাটের সমস্যাটাও রয়ে গেল সেই তিমিরেই। যার সর্বশেষ সংযোজন হল বৃহস্পতিবার। দুপুরে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই চাকা থেকে গলগলিয়ে ধোঁয়া, কটু গন্ধ, আতঙ্কে যাত্রীদের ছুটোছুটি। স্টেশন কর্মীরা চটজলদি ব্যবস্থা নেওয়ায় মিনিট দশেকের মধ্যেই সমস্যা মিটলেও আরও এক বার প্রশ্নের মুখে মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা। কোথায় গলদ তা ধরা যাচ্ছে না কেন, কেনই বা দায়ভার চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না— সেই প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা।

Advertisement

দরজা খুলে মেট্রোর দৌড়ের পরে দিল্লি এক ঘণ্টার মধ্যে তিন কর্মীকে সাসপেন্ড করে দেখিয়ে দিয়েছিল তাঁদের পরিচালন ব্যবস্থা নড়বড়ে নয়। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে গিয়েই থমকে গিয়েছে কলকাতা। লাগাতার গোলমালের জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষ নোয়াপাড়া কারশেডের কয়েক জন কর্মীকে কবি সুভাষ ডিপোয় বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তৈরি হয়েছে নতুন বিপত্তি। ইতিমধ্যেই ওই কর্মীরা মেট্রো ভবনে বিক্ষোভ দেখানোর হুমকিও দিয়ে গিয়েছেন। তৃণমূল সমর্থিত ওই ইউনিয়নের তরফে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এ দিন অভিযোগ করেছেন, “মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই কর্মীদের সঙ্গে প্রতিশোধমূলক আচরণ করছেন। এটা মানা হবে না।”

মেট্রোকর্তারা এর সরাসরি উত্তর না দিলেও তাঁদের কথায় বেরিয়ে এসেছে, কর্মীদের কাজের মধ্যে কোথাও একটা গলদ থাকার প্রমাণ মিলেছে, যা অন্তর্ঘাতও হতে পারে। আর ওই গলদ তাড়ানো যাচ্ছে না বলেই মেট্রো-বিভ্রাটের এই সব উপসর্গও সারানো সম্ভব হচ্ছে না। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও এর পিছনে অনেকাংশেই দায়ী বলে মনে করছেন কর্তারা। তবে কর্মীদের বাঁচানোর চেষ্টার পাশাপাশি মদনবাবু অবশ্য মেট্রোর সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার ব্যাপারেও চিন্তিত। এ দিন তিনি বলেন, “সুষ্ঠু পরিষেবা নিয়ে শীঘ্রই মেট্রোকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তারা।”

Advertisement

কিন্তু তদন্তে যদি নিয়মিত সুষ্ঠু পরিষেবা না দেওয়ার পিছনে কোনও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তবে তার ব্যবস্থা নিতে গেলে কেন বিপত্তি হবে? মেট্রোকর্তাদের বক্তব্য, আঁটোসাঁটো পরিচালন ব্যবস্থা নেই বলেই এই পরিস্থিতি। তাঁদের দাবি, মেট্রোর পরিচালন ব্যবস্থা যাঁর হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেই জেনারেল ম্যানেজারের পদে গত দু’বছর কোনও পাকাপাকি অফিসার নেই। ফলে মেট্রো চলছে আপন খেয়ালে। কোনও অবস্থাতেই কোনও কর্তা বা কর্মীদের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। ফলে যা ঘটার তা-ই ঘটছে বলেই মত ওই মেট্রোকর্তাদের।

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মেট্রোর লাগাতার গোলমালের পরে অন্তর্ঘাতের প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে রেল মন্ত্রক ছেড়ে বেরিয়ে আসে তৃণমূল। তার পরে কিছু দিন রেল ছিল কংগ্রেসের হাতে। এখন রেল মন্ত্রক বিজেপির হাতে। ফের সেই প্রশ্নই উঠল। তবে এ বার রেলের অভ্যন্তরে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ অবশ্য এ সব নিয়ে সরাসরি কোনও উত্তর দিতে চাননি। তাঁর কথা, “বিষয়টা শুনলাম। খতিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন