মজে গিয়েছে খাল, বর্ষায় রাস্তা যেন নদী

জলমগ্ন রাস্তায় পড়ে গিয়ে উঠতে পারছেন না এক মাঝবয়সি মহিলা। তিনি উঠে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই পড়ে গেলেন আর এক বৃদ্ধ। পায়ের জুতো ছিটকে ভাসতে লাগল। কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই এমন হাল হয় হরিদেবপুরের মহাত্মা গাঁধী রোডের একাংশের। বাসিন্দারা জানান, ভারি বর্ষার সময় রাস্তা-সহ গোটা এলাকাই জলবন্দি হয়ে পড়ে। পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।

Advertisement

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৪২
Share:

জলমগ্ন রাস্তা দিয়েই যাতায়াত। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

জলমগ্ন রাস্তায় পড়ে গিয়ে উঠতে পারছেন না এক মাঝবয়সি মহিলা। তিনি উঠে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই পড়ে গেলেন আর এক বৃদ্ধ। পায়ের জুতো ছিটকে ভাসতে লাগল। কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই এমন হাল হয় হরিদেবপুরের মহাত্মা গাঁধী রোডের একাংশের। বাসিন্দারা জানান, ভারি বর্ষার সময় রাস্তা-সহ গোটা এলাকাই জলবন্দি হয়ে পড়ে। পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।

Advertisement

ফি-বর্ষায় হরিদেবপুর থেকে ঠাকুরপুকুর পর্যন্ত বিস্তৃত মহাত্মা গাঁধী রোডের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভারি বৃষ্টি হলে কোমর সমান জল জমে যায়। জল নামতে দীর্ঘ সময় লাগে। জমা জলের দুর্গন্ধে টেকাই দায়। স্থানীয় বাসিন্দা সমীর লাহা বলেন, “বর্ষা আমাদের কাছে আতঙ্ক। বিভিন্ন মহলে দরবার করেও এই সমস্যা থেকে আমাদের রেহাই মেলেনি।”

মহাত্মা গাঁধী রোড কবরডাঙা, ঠাকুরপুকুর-সহ বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করছে। এই রাস্তা দিয়ে প্রতি দিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। যানাবাহনের চাপও বেশি থাকে। দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা এটি। ফলে এই রাস্তায় জল জমলেই এলাকার স্বাভাবিক জীবন যাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

Advertisement

পুরসভার নিকাশি বিভাগ সূত্রে খবর, এই এলাকার জল সরার বিষয়টি টালিনালা এবং কেওড়াপুকুর খালের জোয়ার, ভাটার উপরে নির্ভরশীল। সংস্কার না হওয়ায় কেওড়াপুকুর খাল দিয়ে জল নামে না। ফলে টালিনালায় ভাটা হলেই জমা জল নামাতে পারে।

১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শূর বলেন, “মহাত্মা গাঁধী রোডের কিছু অংশ নিচু। তাই এই সমস্যা। তবে জল দাঁড়ালেও বেশি ক্ষণ থাকে না। সরে যায়।” ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমা চক্রবর্তী বলেন, “কেওড়াপুকুর খালের সংস্কার না হলে এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে না। তাই খাল সংস্কারের জন্য সেচ দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছি।”

বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষা এলেই সংস্কারের কথা শোনা যায়। কিন্তু বছরের পরে বছর সমস্যার কোনও নিরসন হয় না। জমা জলের জন্য প্রতি বছর বর্ষায় এই এলাকায় জল ও মশা বাহিত রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। এই রাস্তার দু’পাশের নিকাশি ব্যবস্থাও খুব দুর্বল বলে বাসিন্দারা জানান। তাঁদের বক্তব্য, নর্দমা থেকে জল সরে না।

১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ (বুয়া) জানান, রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। সংশ্লিষ্ট দফতরের যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা ঠিকমতো কাজ করছেন না বলেই রাস্তায় জল জমে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, “আমাদের না জানিয়েই রাস্তা খুঁড়তে অনুমতি দেয় পুরসভা। তাই বার বার মেরামত করেও রাস্তা ঠিক রাখা যাচ্ছে না।”

সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বর্ষার পরেই কেওড়াপুকুর খালের সংস্কারের কাজ শুরু হবে। টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। আমরা বর্ষা থামার অপেক্ষা আছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন