অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
বাঙালির জয়গান করতে গিয়ে কবি বলেছেন, ‘আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই, নাগেরই মাথায় নাচি।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এখনও এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। নিজেকে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলতে অভ্যস্ত তিনি। কিন্তু সর্পভয়ে তাঁকে গুটিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে নানা সময়ে। তা সে ময়দানে হাঁটতে গিয়েই হোক বা ইকো পার্কে কাচঘরের বাণিজ্য-বৈঠকে। তাঁর জন্য সাপ তাড়ানোর (বা মারার) বিভিন্ন ব্যবস্থা করতে হয়েছে প্রশাসনকে।
কিন্তু আজ, মঙ্গলবার ধাপার মাঠে, যেখানে কলকাতা পুরসভার জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাবেন তিনি, সেখানে যে কেউটে-চন্দ্রবোড়ারা ঘুরঘুর করছে, মুখ্যমন্ত্রী তা জানেন কি? সেই অনুষ্ঠানের তদারকিতে গিয়ে খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সোমবারও সেখানে দু’টি সাপ দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকী এ কথাও বলেছেন, “প্রকল্পের কাজ চলাকালীন পাঁচ জনকে সাপে কামড়েছে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন।” তবু মেয়রের দাবি, অনুষ্ঠানের সময়ে সাপ যাতে ওই এলাকায় না আসতে পারে, তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য আলাদা করে অ্যাম্বুল্যান্সও রাখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা সন্ধ্যা ৬টায়। অর্থাৎ, অন্ধকার নেমে আসার পরে। তাঁর মঞ্চ মাথা ঢাকা এবং উঁচু। অভ্যাগতেরা কিন্তু বসবেন খোলা জমিতেই। যার বেশিটাই মেঠো, স্যাঁৎসেতে। ঝোপঝাড়ও আছে। সে ক্ষেত্রে সাপ তাড়ানোর কী অস্ত্র প্রয়োগ করবে পুরসভা? কার্বলিক অ্যাসিড এবং ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
কেউটে ও চন্দ্রবোড়া
তাতে কাজ হবে? সর্প বিশেষজ্ঞ কৌশিক বলেন, “জলাজমিতে কার্বলিক অ্যাসিড খুব কার্যকর নয়। এটাও মনে রাখতে হবে, এখন কলকাতার তাপমাত্রা যা, তাতে সাপেদের শীতঘুমের সময় হয়নি।”
অনেকের প্রশ্ন, প্রযুক্তিতে আস্থা রেখে যে মমতা মেদিনীপুর থেকে রিমোট কন্ট্রোলে শিলিগুড়ির প্রকল্প উদ্বোধন করতে পারেন, সেখানে এত মানুষকে জড়ো করে এতটা ঝুঁকি নেওয়ার দরকার কী?