প্রস্তুত জলাধার। ছবি: শৌভিক দে
এ গ্রীষ্মে দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম ও দমদম পুর-এলাকায় জলসঙ্কটের চেনা ছবিটি আর দেখা যাবে না। পুরসভাগুলির এমনই দাবি। কারণ, প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে ‘ট্রান্স মিউনিসিপ্যাল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’-এর কাজ। এর মধ্যেই এই পুর-এলাকাগুলির বেশ কিছু ওয়ার্ডে জল সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। জেএনএনইউআরএম-এর এই প্রকল্পটির রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ।
দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম এবং দমদম পুর-এলাকায় গঙ্গার জল পরিশোধন করে সরবরাহের জন্য ‘ট্রান্স মিউনিসিপ্যাল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’-এর পরিকল্পনা করা হয়। কেএমডিএ সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ৩১২ কোটি টাকা। যার ৩৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার এবং ৬০ শতাংশ রাজ্য সরকার দিয়েছে। তিনটি পুরসভা দিয়েছে বাকি পাঁচ শতাংশ। এই পাঁচ শতাংশ সংশ্লিষ্ট পুর এলাকায় প্রকল্পের খরচের উপরে ভিত্তি করে পুরসভাগুলির মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে। জলপ্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এই সব পুর-এলাকায় ভূগর্ভের জল ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এত দিন জলসঙ্কট মেটাতে এই পুরসভাগুলি নতুন পাম্প বসাতো। কিন্তু এই সব অঞ্চলের জলস্তর নেমে যাওয়ায় নতুন পাম্প বসিয়েও সঙ্কট মিটত না বলে পুরসভাগুলি সূত্রে খবর। আড়িয়াদহে তৈরি হয়েছে এই প্রকল্পের ইনটেক। সেখান থেকে বরাহনগরের ট্রিটমেন্ট প্লান্টে অপরিশোধিত জল যাচ্ছে। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে জল যাবে তিনটি পুর এলাকার জলাধারগুলিতে।
দক্ষিণ দমদম পুর-এলাকায় রয়েছে ৩৫টি ওয়ার্ড। এই পুর-এলাকার শূরের মাঠ, বাঙুর, দমদম পার্ক, দক্ষিণদাঁড়ি-সহ মোট ১২টি জায়গায় জলাধার তৈরি হয়েছে। উত্তর দমদম পুর-এলাকায় রয়েছে ৩১টি ওয়ার্ড। এখানে দুর্গানগর, নীলাচল, মধ্য নীলাচল, শিবাচল-সহ দশটি জায়গায় জলাধার তৈরি হয়েছে। দমদম পুর-এলাকার ছ’টি জলাধার তৈরি হওয়ার কথা। এর মধ্যে ব্যাঁটরা, সুলতানপুর-সহ চারটি জায়গায় জলাধার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সেন্ট্রাল জেল ও মল রোডের জলাধার দু’টির কাজ চলছে। জমি জটিলতার কারণেই এই দেরি বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এই পুরসভায় জলপ্রকল্পের সুবিধা পেতে আরও মাস দু’য়েক সময় লাগবে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রে খবর, বাড়িতে সংযোগের জন্য পুরনো পাইপ বাতিল করে নতুন পাইপ বসানোর কাজ চলছে। ৯৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। জলপরীক্ষার কাজও চলছে। এর মধ্যেই এক থেকে ছয় এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে জল সরবরাহ শুরু
হয়ে গিয়েছে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে জলের পাইপ বেদিয়াপাড়া হয়ে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় ঢোকার সময়ে রেললাইনের নীচ দিয়ে এসেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে রেল-কর্তৃপক্ষের অনুমতি দেরি হওয়ায় মাসখানেক কাজ পিছিয়ে যায়। উত্তর দমদম পুর এলাকায় রাস্তা কাটার অনুমতি পেতেও কিছুটা দেরি হয়েছিল। উত্তর দমদম পুরসভা সূত্রে খবর, জলের লাইনের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। কাজ শেষ হলে দিনে চার বার জল পাবেন উত্তর দমদমের বাসিন্দারা।