সাজছে বেহালার ১৪ নম্বর বাস টার্মিনাস

প্রায় অন্ধকার। ভাঙাচোরা ছোট ঘর। জবরদখল হয়ে যাওয়া খালি জমি। যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এত দিন এই পরিস্থিতিতেই পড়েছিল বাস টার্মিনাসটি। যাত্রী প্রতীক্ষালয় তো দূর অস্ত্। সাধারণের ব্যবহারের কোনও শৌচাগারও ছিল না। বেহালার ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের এই দুরবস্থার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:০৩
Share:

তৈরি হচ্ছে বাস টার্মিনাস। ছবি:অরুণ লোধ

প্রায় অন্ধকার। ভাঙাচোরা ছোট ঘর। জবরদখল হয়ে যাওয়া খালি জমি। যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এত দিন এই পরিস্থিতিতেই পড়েছিল বাস টার্মিনাসটি। যাত্রী প্রতীক্ষালয় তো দূর অস্ত্। সাধারণের ব্যবহারের কোনও শৌচাগারও ছিল না। বেহালার ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের এই দুরবস্থার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

Advertisement

নিত্যযাত্রী থেকে বাসকর্মী সকলেরই অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই বাসস্ট্যান্ডটি অনেক দিন ধরেই চরম অবহেলায় পড়ে ছিল। এর জেরে কর্মী ও বাসযাত্রী সকলেই নিত্য সমস্যার সম্মুখীন হতেন। এক বাসকর্মীর দাবি, তাঁদের সমস্যা সব থেকে বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে থাকার পরে ডিউটির ফাঁকে কিছু ক্ষণ জিরিয়ে নেওয়ার ন্যূনতম পরিকাঠামোও ছিল না এখানে। নাম কাওয়াস্তে একটা ক্যান্টিন। ব্যাস ওই পর্যন্তই।

সিএসটিসি দফতর সূত্রে খবর, দোতলা ভবনটির কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। উপরে মূলত প্রশাসনিক দফতর থাকবে। নীচে থাকছে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, সাধারণের ব্যবহারের শৌচাগার এবং রেস্তোরা।ঁ সিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভীষ্মদেব দাশগুপ্ত বলেন, “প্রকল্পের পুরো টাকাই দিচ্ছে পরিবহণ দফতর। আশি লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে ভবন তৈরিতে। দোতলায় স্টার্টারের ঘর, অ্যাকাউন্টস-সহ কর্মীদের অফিসঘর থাকবে। নীচে থাকছে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা।”

Advertisement

এই মুহূর্তে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এক মাসের মধ্যে বাকী কাজ শেষ করার আশ্বাস দিচ্ছে সিএসটিসি দফতর। নিত্যযাত্রীদের দাবি, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি বাস পরিষেবার উন্নয়নে নজর দিক সিএসটিসি। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখান থেকে সিএসটিসি-র ১৪ নম্বর রুটের বাস প্রায় ছাড়েই না।

সারা দিনে খুব বেশি হলে দু’টি ছাড়ে। থ্রি এ বাই ওয়ান রুটের সরকারি বাসটি কাঁকুড়গাছি পর্যন্ত এখন চলছে। তাও অনেকটাই বাসকর্মীদের মর্জি মাফিক। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, বেলা বারোটার পর থেকে দু’ ঘণ্টার জন্য অলিখিতভাবে বন্ধ থাকে এই পরিষেবা। বাস ঢুকলেও গ্যারাজ করে দেওয়া হয়। অথচ তখন দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় যাত্রীদের। তাঁদের প্রশ্ন, বাস টার্মিনাস তৈরির আগে থেকেই এই সব সমস্যা রয়েছে। কাজ শেষের পরে ১৪ নম্বর-এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাস পরিষেবার মান উন্নত করার ক্ষেত্রে কী উদ্যোগী হবে প্রশাসন।

এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভীষ্মদেববাবু জানান, এখন সিএসটিসি-র বিভিন্ন ডিপোয় বাস অদলবদল হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা মিটে গেলেই বেলায় বাস বন্ধের সমস্যা মিটবে। ১৪ নম্বর বাসের ক্ষেত্রে সমস্যাটা অন্য। সিএসটিসি-র নতুন বাসগুলি ১২ মিটারের হয়। ১৪ নম্বর বাস যায় রায়বাহাদুর রোড দিয়ে। সেই রাস্তা দিয়ে ১২ মিটারের বাস চালানোর জায়গা নেই। তাই ওখানে পুরনো বাসই চলবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিভিন্ন রুটের পুরনো বাস তুলে নতুন বাস দেওয়ার কাজ শেষ হবে। তখন অতিরিক্ত পুরনো বাসগুলিকে প্রয়োজন মতো রুটে দেওয়া যাবে। এর মধ্যে ওই রুটও পড়বে। কাজ শেষ হলে আরও তিন-চারটি রুটের বাস চলবে। এখান থেকে আর কোন কোন রুটের বাস চলবে সেটা নির্দিষ্ট হবে কাজ শেষ হলে। তবে উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কথা মাথায় রেখেই নতুন রুটের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। যদিও জায়গার অভাবের কারণে এক সঙ্গে চারটির বেশি বাস কখনওই পার্ক করা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন