জমি কিনতে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছিল না বলে প্রথমে চুক্তির শর্ত শিথিল করা হয়েছিল। পরে পেশাদারি দক্ষতায় বিভিন্ন বণিকসভা ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছিলেন অফিসারেরা। এ সবের নিট ফল হল, টালিগঞ্জ ও বেলগাছিয়ায় ট্রাম কোম্পানির উদ্বৃত্ত জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজের ভিত্তিতে নিতে আগ্রহ দেখাল বেশ কয়েকটি নামী সংস্থা।
বছরখানেক আগে বাস ও ট্রাম ডিপোর অতিরিক্ত জমি লিজ দিয়ে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করে রাজ্য পরিবহণ দফতর। সেইমতো গত নভেম্বরে ট্রামের ছ’টি ডিপোর উদ্বৃত্ত জমি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে লিজ দেবে বলে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল দফতর। ওই ছ’টি ডিপো হল, টালিগঞ্জ (২৪১ কাঠা), কালীঘাট (১২ কাঠা), বেলগাছিয়া (৫২ কাঠা), শ্যামবাজার (৩১ কাঠা), গ্যালিফ স্ট্রিট (১৫ কাঠা) এবং খিদিরপুর (২২ কাঠা)। বিজ্ঞাপনের মেয়াদ শেষে দেখা যায়, টালিগঞ্জ এবং বেলগাছিয়া ডিপোর জমি নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে মাত্র দু’একটি সংস্থা।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “যে ছ’টি ডিপোর জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ওই দু’টি ডিপোতেই জমির পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। এত পরিমাণ জমি নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তিতে ৯৫% অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল বেশির ভাগ সংস্থাই।”এই অবস্থায় কৌশল বদলে লিজচুক্তিতে মূলত এই শর্তটি শিথিল করে নতুন করে বিজ্ঞাপন দেয় পরিবহণ দফতর।
সোমবারই ছিল আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করার পরে দেখা যায়, এ বার টালিগঞ্জ ডিপোর জমি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে সাতটি সংস্থা। পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, আবেদনকারী প্রতিটি সংস্থাই নামী। রয়েছে মার্লিন গ্রুপ, যৌথ ভাবে টাটা হাউজিং ও কেভেন্টার্স গ্রুপ, সাপুরজি-পালোনজি, অম্বুজা, এনবিসিসি, টেকনো ইলেকট্রিক এবং ইউনিমার্ক রিজেন্ট কনসোর্টিয়াম। বেলগাছিয়া ডিপোর জন্য আবেদন জানিয়েছে তিনটি সংস্থা। তারা হল মার্লিন গ্রুপ, মডার্ন ব্যাপার এবং জুপিটার ইন্টারন্যাশনাল।
কিন্তু শুধুই কি শর্ত শিথিল করে সাড়া মিলল?
পরিবহণ দফতরের কর্তারা বলছেন, “স্রেফ একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে আমরা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকিনি। বরং জমি দেওয়ার যাবতীয় তথ্য ও শর্ত বিজ্ঞাপনে জানানো হলেও বিভিন্ন বণিকসভা ও বড়বড় সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেছি। তাদের সুবিধা-অসুবিধা জেনে প্রতিকারের চেষ্টা করেছি। এ সব কারণেই এ বার ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ওই দুই ডিপোর জন্য আবেদনকারী সংস্থার নাম জানা গেলেও শেষ পর্যন্ত জমির দখল কে পাবে, তা চূড়ান্ত হবে ভোট মিটলে।