ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে ব্যবহৃত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র বি বা দী বাগের লালদিঘির কাছে রাখা যাবে কি না, তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই রাজ্য সরকার জানাবে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রকল্প নিয়ে মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে ওই কথা জানানো হয়।
প্রথমে হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, পরে বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়ার আদালতে এত দিন এই প্রকল্পের মামলা চলছিল। শীতের ছুটির পরে মামলাটি গিয়েছে বিচারপতি সৌমিত্র পালের আদালতে। সেখানেই এ দিন শুনানি ছিল।
কী ভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও গড়ে দেন বিচারপতি পাথেরিয়া। সেই কমিটি ইতিমধ্যেই একটি বৈঠক করেছে।
কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন (কেএমআরসি) সূত্রের খবর, বৈঠকে রাজ্যের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে যন্ত্রটি হাওড়া ময়দান থেকে হুগলি নদীর তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে খুঁড়তে কলকাতায় আসবে, সেটি ব্রেবোর্ন রোডের বদলে লালদিঘির কাছে মাটির তলায় রাখা যেতে পারে। হাওড়া ময়দান থেকে কলকাতা পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খুঁড়তেও প্রায় দেড় বছর লেগে যাবে। প্রকল্পের রুট বদল হবে কি না, তত দিনে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে। তাই লালদিঘির কাছে ওই যন্ত্র রাখা যায় কি না, রাজ্য তা বিবেচনা করে দেখুক।
ওই মেট্রো প্রকল্পে রাজ্যের কোনও অংশীদারি না থাকলেও, হকার সমস্যা, ট্রাফিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে ব্রেবোর্ন রোড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে রাজ্য সাহায্য করছে না বলে আদালতে অভিযোগ করেছে কেএমআরসি ও প্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থা। কাজ বন্ধ থাকায় সুড়ঙ্গ খোঁড়াও শুরু হয়নি। রাজ্য আগে আদালতে জানিয়েছিল, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রুট বদল হোক। তা হলে ব্রেবোর্ন রোডের কাছে মহাকরণ স্টেশন করতে হবে। অসুবিধাও হবে না। এ দিন শুনানিতে ঠিকাদার সংস্থার আইনজীবী জানান, বিচারপতি পাথেরিয়া চেয়েছিলেন, হাওড়া ময়দান থেকে ব্রেবোর্ন রোড পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে শুরু হোক।
রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্ত আদালতে জানান, প্রকল্পের কাজ শুরুর ব্যাপারে গড়া কমিটি ২৮ জানুয়ারি বৈঠকে বসবে। সেখানেই রাজ্য জানিয়ে দেবে, লালদিঘির কাছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র রাখতে দেওয়া যাবে কি না। লক্ষ্মীবাবু আরও জানান, আইনি জটিলতার বদলে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হোক। কেএমআরসি-র আইনজীবী রাজকুমার বসু জানান, ব্রেবোর্ন রোডের বদলে লালদিঘির কাছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র রাখা হলে তাতেও প্রকল্পের খরচ বাড়বে। সেই খরচ কে, কী ভাবে মেটাবে কমিটির আগামী বৈঠকে সে নিয়েও আলোচনা হবে।