ঝুঁকির পারাপার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
রেলিংয়ের ফাঁক গলে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করাটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডে। দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম ব্যস্ত এই রাস্তার সুকান্ত সেতুর মোড় থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত অংশ রেলিং দিয়ে দুই লেনে ভাগ করা রয়েছ। কিন্তু বিভিন্ন অংশে রেলিং ভেঙেই তৈরি হয়েছে রাস্তা পারাপারের বিপজ্জনক ফাঁক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলিং থাকলে কিছুটা ঘুরে রাস্তা পারাপার করতে হয় বাসিন্দাদের। তাই বাসিন্দাদের একাংশই রেলিং গলে এই ‘শর্টকাট’ যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা বুলা রায় বলেন, “রেলিং থাকলে অনেকটা ঘুরে রাস্তা পারাপার করতে হয়। রেলিংয়ের ফাঁক গলে ‘শর্টকাট’-এ যাতায়াত করা যায়। সময়ও কম লাগে। আমাদের সুবিধাও হয়।”
রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের পাশেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক সরকারি, বেসরকারি অফিস, হাসপাতাল এবং স্কুল রয়েছে।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তায় সারা দিনই গাড়ির চাপও খুব বেশি। সেই রাস্তায় এ ভাবে রেলিংয়ের ফাঁক গলে পারাপার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্থানীয় ট্রাফিক গার্ডের কর্তারাও স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের এক কর্তা বলেন, “রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডে গাড়ির যা চাপ তা সামলে উঠতেই আমাদের হিমসিম খেতে হয়। তার উপরে যদি পথচারীরা নিজেরাই এই রকম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন তা
সামাল দেওয়া খুব কঠিন। সচেতনতা ছাড়া এই ধরণের সমস্যা নিরসনের উপায় নেই।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার দু’পাশে দখলদারির জন্য এই রাস্তার অনেক অংশ এখনও সংস্কার হয়নি। পুরসভা এবং পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, এই রাস্তা সংস্কারেরে বিভিন্ন জটিলতায় আটকে রয়েছে। সেই জট কবে খুলবে তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিতও মেলেনি।
স্থানীয় পুলিশের একাংশের অবশ্য দাবি, অনেক সময় ভবঘুরে এবং মাদকসক্তরাও রাস্তার রেলিংয়ের অংশ খুলে বিক্রি করে দেয়। এই রাস্তার বিভিন্ন অংশে একাধিক অটোস্ট্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড এবং বাজার রয়েছে। যা রাস্তাকে আরও সঙ্কীর্ণ করে তুলেছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দারাই জানান, ছোটখাটো দুর্ঘটনা এই রাস্তাতে লেগেই থাকে। রেলিং গলে যাতায়াত করতে গিয়েও বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনও প্রাণহানি না হওয়ায় তা নিয়ে তেমন হইচই হয়নি। ‘শর্টকাট’-এ যাতায়াতের জন্য পথচারীরা শিশুদের নিয়েও রেলিংয়ের ফাঁক গলে যাতায়াত করেন বলে বাসিন্দাদের একাংশই জানান।
এই সমস্যার কথা শুনে স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, “আমি রেলিংয়ের ওই ফাঁক বন্ধের জন্য পুলিশ এবং পূর্ত দফতরের কাছে খুব শীঘ্রই আর্জি জানাব।”