সরকারি কাজেও দাদাগিরি, কাঠগড়ায় সিন্ডিকেট

এত দিন শহর কলকাতা ও উপকণ্ঠে বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি নির্মাণকাজে নানা ভাবে সিন্ডিকেটের জুলুমবাজির অভিযোগ উঠছিল। এ বার সরকারি কাজেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। রবিবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নিউ টাউন থানা এলাকার নবাবপুরে। অভিযোগ, টাকা দিতে রাজি না-হওয়ায় সরকারি কাজে বাধা দেন সিন্ডিকেটের এক কর্মী। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার-কর্মীকে তিনি ভয় দেখান এবং মারধরও করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৯
Share:

এত দিন শহর কলকাতা ও উপকণ্ঠে বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি নির্মাণকাজে নানা ভাবে সিন্ডিকেটের জুলুমবাজির অভিযোগ উঠছিল। এ বার সরকারি কাজেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। রবিবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নিউ টাউন থানা এলাকার নবাবপুরে। অভিযোগ, টাকা দিতে রাজি না-হওয়ায় সরকারি কাজে বাধা দেন সিন্ডিকেটের এক কর্মী। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার-কর্মীকে তিনি ভয় দেখান এবং মারধরও করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিউ টাউনের সূচনা পর্ব থেকেই সেখানে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য চলছে। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের মদতদাতা হিসেবে অভিযোগের আঙুল উঠেছে শাসক দলের দিকে। মূলত নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা কব্জায় রাখাটাই সিন্ডিকেটের লক্ষ্য। এই নিয়েই নির্মাতাদের সঙ্গে তাদের নিত্য গোলমাল। আবার এই নিয়েই এক সিন্ডিকেটের সঙ্গে অন্য সিন্ডিকেটের দ্বৈরথে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যখন-তখন। সিন্ডিকেট-রাজ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে হইচই হলে কখনও-সখনও প্রশাসন সামান্য নড়েচড়ে বসে। রাশ টানার তোড়জোড় চলে রাজনৈতিক শিবিরে। কিন্তু সিন্ডিকেট-উৎপাতের মূলোচ্ছেদ করা যায় না কেন, তার জবাব মেলে না পুলিশ-প্রশাসন বা রাজনৈতিক শিবিরের কাছে। বহাল তবিয়তে চলতে থাকে সিন্ডিকেট-রাজ। দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমজনতাকে। সেই দৌরাত্ম্য এ বার থাবা বাড়াল সরকারি কাজেও।

ঠিক কী ঘটেছে এ দিন?

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযোগকারীর নাম চন্দ্র হাতি। তাঁর অভিযোগ, হিডকোর নথিভুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্মী হিসেবে তিনি এ দিন ইকো পার্কের কাছে নবাবপুরে রাস্তার ডিভাইডারে সৌন্দর্যায়ণের কাজ করছিলেন। তাঁর কর্মীরা মাটি ফেলতে শুরু করায় ইমাদুল মোল্লা নামে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি এসে বাধা দেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত। ইমাদুল হুমকি দেন, তাঁর সরবরাহ করা মাটি ছাড়া অন্য কোথাও থেকে মাটি নেওয়া যাবে না। চন্দ্রবাবু তাতে রাজি না-হওয়ায় ইমাদুল তাঁর কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ। চন্দ্রবাবু পুলিশের কাছে বলেছেন, ইমাদুল আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখান, মারধরও করেন।

চন্দ্রবাবু বলেন, “সিন্ডিকেট এত দিন বেসরকারি কাজে ঝামেলা করত। এ বার সরকারি কাজেও নাক গলাতে শুরু করেছে তারা। এ ভাবে বাধা এলে কাজটা করব কী করে?”

চন্দ্রবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমাদুল। তিনি বলেন, “চন্দ্র হাতি আমার কাছ থেকে মাটি নিয়েই কাজ করছিল। কিন্তু পাওনা টাকা মেটাননি। এ দিন সেই টাকা চাইতেই গিয়েছিলাম।” মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ইমাদুল পাল্টা অভিযোগ করেন, টাকা চাওয়ায় তাঁকেই অপদস্থ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “টাকার কথা শুনেই ওঁরা চোটপাট শুরু করেন। মারধরের ঘটনা ঘটেনি।”

চন্দ্র হাতি তাঁদের নথিভুক্ত ঠিকাদারের কর্মী কি না, হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। দেবাশিসবাবু বলেন, “ওই নামে আমাদের কোনও ঠিকাকর্মী আছেন কি না, এখনই বলতে পারছি না। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে জানতে চাইব। তবে সিন্ডিকেট সংক্রান্ত মারধরের কোনও খবর আমার কানে আসেনি।”

পুলিশ কী বলছে?

বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, “অভিযোগ উঠেছে শুনেছি। তবে ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিধাননগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে থাকলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন