Admit Card

দূরত্ব মেরেকেটে ১১০ কিলোমিটার, পরীক্ষার সাত বছর পরে পৌঁছল অ্যাডমিট কার্ড

পরিবেশবিদ্যায় স্নাতকোত্তর আশিস জানান, ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ কৃষি দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেপিএস পদে ৮১৮ জনকে নিয়োগ করার কথা জানায়। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ ছিল।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৩২
Share:

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সল্টলেক থেকে বর্ধমান শহরের দূরত্ব মেরেকেটে ১১০ কিলোমিটার। বাস, ট্রেনে বা গাড়িতে পৌঁছতে সময় লাগে আড়াই-তিন ঘণ্টা। হেঁটে পৌঁছতেও হয়তো এক বা দেড় দিন দরকার। কিন্তু সল্টলেকের রাজ্য স্টাফ সিলেকশন অফিস থেকে বর্ধমানের নারকেলডাঙায় একটি পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছতে লেগে গেল প্রায় সাড়ে সাত বছর!

Advertisement

কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক (কেপিএস) পদের জন্য ওই পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে ২০১৬ সালে। সে বছর মার্চ-এপ্রিলে ওই পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন করেছিলেন বর্ধমানের নারকেলডাঙার বছর পঁয়ত্রিশের আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ওই অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়ে হতবাক তিনি। তাঁর দাবি, কোন দফতরের গাফিলতিতে এই ভুল হল, তা জানতে আইনের দ্বারস্থ হবেন। সল্টলেকের ওই অফিসে গিয়ে এত দিন পরে কেন অ্যাডমিট কার্ড পাঠানো হল, তার তদন্ত চেয়েও আবেদন করবেন। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “ডাক বিভাগের গাফিলতিতেই নির্দিষ্ট সময়ে অ্যাডমিট পাননি ওই চাকরিপ্রার্থী।’’

পরিবেশবিদ্যায় স্নাতকোত্তর আশিস জানান, ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ কৃষি দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেপিএস পদে ৮১৮ জনকে নিয়োগ করার কথা জানায়। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ ছিল। পরীক্ষায় বসতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “অ্যাডমিট কার্ড না আসায় পরীক্ষা দিতে পারিনি। এত দিনে সে কথা ভুলেও গিয়েছিলাম। হঠাৎ ডাকযোগে পাঠানো অ্যাডমিট কার্ডটি হাতে পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছি!’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখন নিয়োগ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। আমার এই অ্যাডমিট কার্ডের বিষয়টিও কোনও দুর্নীতি বা প্রতারণার অঙ্গ কি না, বুঝতে পারছি না। তাই আইনের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

Advertisement

আশিসের বাবা, বছর সত্তরের দীপ্তিকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সময়ে অ্যাডমিট কার্ড এলে ছেলেটা পরীক্ষা দিতে পারত! চাকরি পেলে আশিসকে টিউশন করতে হত না। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা থাকত না।’’

বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরের দাবি, মঙ্গলবার তাদের কাছে চিঠিটি আসে। বুধবার বিকেলের মধ্যে সেই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়। তার আগে কোথায় সেটি আটকে ছিল, জানাতে পারেননি তাঁরা। ডাক বিভাগের বর্ধমান ডিভিশনের সিনিয়র সুপারিন্টেনডেন্ট রতিকান্ত সোয়াইনকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মেসেজেরও জবাব দেননি তিনি। ডাক বিভাগের কলকাতা ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, “বর্ধমানের মুখ্য ডাকঘর থেকে রিপোর্ট এলে, কী হয়েছিল তা নিয়মমাফিক খোঁজ নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন