শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের কাজে নেওয়ার নাছোড় ‘আবদার’, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নতুন নয়।
দুর্গাপুরের প্রতাপপুর এলাকায় স্টার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে কাগজ কলটি অবশ্য শুধুই তৃণমূল নয়, সিপিএম এবং এসিউসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রিফলা চাপে উৎপাদনও বন্ধ করে দিয়েছিল। সে কারখানা এ দিনও খোলেনি।
কারখানা খোলার ব্যাপারে স্থানীয় বিধায়ক তথা শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের আশ্বাস সত্ত্বেও তা যে কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ভরসা জোগাতে পারছে না সোমবার তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন ওই কারখানার ম্যানেজার অর্ধেন্দু হাজরা।
গত ২২ অগস্ট ওই কারখানার গেটে বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে ছিলেন কর্তৃপক্ষ। তার দিন তিনেক পরে নবান্নে কারখানার কর্তাদের ডেকে বৈঠক করে কারখানা খোলার বার্তা দিয়েছিলেন মলয়বাবু। সেই আশ্বাস পেয়ে রবিবারই কারখানা খুলতে গিয়ে ফের নিয়োগ নিয়ে অশান্তির মধ্যে পড়েন অর্ধেন্দুবাবুরা। এরপরেই কারখানা মালিক বাবুভাই খাণ্ডেলওয়াল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “এ ভাবে ঝামেলা নিয়ে কারখানা চালানো সম্ভব নয়। ভাবছি রাজ্য থেকে কারখানা সরিয়ে নেব।”
এ দিন মলয়বাবু স্থানীয় পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার থেকেই কাগজকলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।” তবে এ দিন তাঁর দাবি, “আমাদের দলের ছেলেরা সমস্যা তৈরি করছে না। সমস্যা করছে এসইউসি। কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলেছি, পুলিশে নির্দিষ্ট অভিযোগ করতে।”
অর্ধেন্দুবাবু বলেন, “আমরা পুলিশে অভিযোগ জানাব। তবে কি জানেন, মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন বলেই যে এক দিনে সব ঠিক হয়ে যাবে, তেমন আশাও করছি না।”
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নেব। তবে অশান্তি এড়াতে এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।”
কাজ কারা পাবেন, সে নিয়ে অবশ্য এ দিনও চাপানউতোর চলে কাগজকল চত্বরে। এ দিন সকাল থেকে কারখানার গেটে শাসকদল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা হাজির ছিলেন। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষের কেউ ছিলেন না।
এই সময়ে কারও অনুমতি ছাড়াই তৃণমূলের ৬ জন এবং এসইউসি-র ৫ শ্রমিক কারখানায় ঢুকে পড়েন। দিনভর মাটি কাটার কাজও করেন তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানস মণ্ডলের দাবি, তাঁদের ছয় শ্রমিককেই মজুরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এসইউসি নেতা বিপ্লব মণ্ডলের দাবি, “আমাদের লোকেরাও কাজ করেছে। তাঁদেরও মজুরি দিতে হবে।” যা শুনে অর্ধেন্দুবাবু বলেন, “কাজই হয়নি, মজুরি দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?”