বেসুরো রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা দলীয় বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়!
বুধবার বিধানসভার অধিবেশনের প্রথমার্ধে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত বাজেটের আলোচনায় রবিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টা চোখে পড়ছে না। যা হচ্ছে, তা ন্যাক। সেটা ইউজিসি’র। রাজ্য সরকার কী করছে! টাকা খরচ করাই সরকারের একমাত্র কাজ নয়। টাকা তো সরকারকে দিতে হবে, কিন্তু উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন না করা গেলে তার কোনও অর্থ হয় না। শিক্ষামন্ত্রী চেষ্টা করলেও সুফল দেখতে পাচ্ছি না।’’
বেশকিছু ক্ষেত্রে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘটনা তাঁকে ‘ব্যথিত’ করেছে বলেও দাবি রবিরঞ্জনের। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উদ্ধৃত করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার প্রাক্তন অধ্যাপক বলেন, ‘‘শিক্ষক হিসাবে দুঃখ-কষ্ট পাই। শুধু মনকে সান্ত্বনা দিই এই বলে যে এ আমার, এ তোমার পাপ।’’ উক্তিটি কার উদ্দেশে? রবিরঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ যাঁদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আমিও তাই বলেছি। বুঝে নিন।’’ সরকার পক্ষের ‘অস্বস্তি’ বাড়াতে চেয়ে সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘স্যারের (রবিরঞ্জন) বক্তৃতা শুনে মনে হচ্ছিল, উনি আমাদের কথাই বলছিলেন।’’ তৃণমূল বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদারের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘শিক্ষাবিদ রবিরঞ্জনবাবু কিছু কথা বলেছেন, আমজাদ হোসেন অন্য পথে চালিত করে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন।’’
পরে এ প্রসঙ্গে রবিরঞ্জনের দাবি, ‘‘সমালোচনা নয়, দলকে শক্তিশালী করতেই বলেছি।’’ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও পরে বলেন, ‘‘উনি খারাপ কিছু বলেননি।’’ তবে সবকিছুর জন্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন রবিরঞ্জন। কারণ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্বশাসিত সংস্থা। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলমালের বিষয়টি উল্লেখ করেন কল্যাণীর তৃণমূল বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসও।
জবাব দিতে গিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘটনা কার্যত মেনে নেন শিক্ষামন্ত্রী। নিজেকে ছ’সাত বছরের ‘যুবক’ আখ্যা দিয়ে পার্থের মন্তব্য, ‘‘৩৪ বছরের যুবকের সঙ্গে লড়তে বলছেন ছ-সাত’বছরের যুবককে। দু-চারটে কলেজে ঘটনা ঘটছে। আর আপনারা ভাবছেন সারা রাজ্য জুড়ে হচ্ছে! কড়া হতে চাই। আপনাদের (বিরোধী দলগুলির উদ্দেশে) পাশে পেতে চাই।’’ যদিও শিক্ষামন্ত্রীর মতে, সব কিছুতেই ছাত্রদের দোষারোপ করা ঠিক নয়!