DOOARS

উত্তরবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি, ধসে বন্যা পরিস্থিতি, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিকিম-ডুয়ার্সে

গত কয়েক দিন ধরে বার বার ধসে সিকিমগামী রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেবক থেকে কালীঝোড়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি ধসপ্রবণ এলাকা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ১৪:০৩
Share:

ধস ও লাগাতার বৃষ্টিতে অবস্থা সঙ্গীন ডুয়ার্সে। —নিজস্ব চিত্র।

লাগাতার বৃষ্টিতে পাহাড়ে ধসের কারণে বিপর্যস্ত শিলিগুড়ি-গ্যাংটক যোগাযোগ। একই ভাবে ভুটান এবং ডুয়ার্সে টানা বৃষ্টিতে ফুলে ওঠা নদিগুলির জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায়, বন্ধ ডুয়ার্সের ট্রেন পরিষেবাও। ডুয়ার্সের একাধিক জায়গা জলমগ্ন। তিস্তা বাঁধ থেকে জল ছাড়াও শুরু করেছে সেচ দফতর। সংলগ্ন এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সঙ্গে ধস এবং বন্যা পরিস্থিতির জন্য বিপদে পড়েছেন অসংখ্য পর্যটক। অনেকেই আটকে পড়েছেন গ্যাংটক-সহ সিকিমের বিভিন্ন জায়গায়। আবার কেউ কেউ সিকিম যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। খারাপ আবহাওয়ার জন্য পরিস্থতি ভাল নয় দার্জিলিঙেও।

গত কয়েক দিন ধরে বার বার ধসে সিকিমগামী রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেবক থেকে কালীঝোড়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি ধসপ্রবণ এলাকা রয়েছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধস সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করলেও, ফের অন্য জায়গা ধসে পড়ছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর।

Advertisement

আরও পড়ুন: অবিলম্বে ৩৪ হাজার পদে নিয়োগ একই সঙ্গে, ঘোষণা মমতার

বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার সকালে ফের সেবক এবং কালীঝোড়ার মাঝে অন্তত তিন জায়গায় ধস নামে। ফলে আটকে পড়েন সিকিমগামী এবং সিকিম থেকে শিলিগুড়ির দিকে আসা কয়েকশো গাড়ি। যাত্রীদের মধ্যে অনেক পর্যটকও রয়েছেন। গ্যাংটক থেকে আসা এক পর্যটক সুরেশ কুমার পরিবার নিয়ে সিকিমে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ দিন বাগডোগরা থেকে তাঁর দিল্লির বিমান ধরার কথা। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় সেই বিমান তিনি ধরতে পারেননি। একই রকম ভাবে সোনম নামে পটনার এক তরুণী তাঁর বন্ধুদের নিয়ে যাচ্ছিলেন সিকিম। রাস্তা বন্ধ থাকায় তাঁরা সিকিম যাওয়ার পরিকল্পনা ত্যাগ করে দার্জিলিং যাওয়া মনস্থ করেছেন।

বিআরও এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন করে ধস না হলে বিকেল পর্যন্ত সিকিমগামী রাস্তা খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। তবে বৃষ্টি না থামায় ফের ধস হওয়ার আশঙ্কা যে যথেষ্ট রয়েছে, তা স্বীকার করেন রাস্তা মেরামতির সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। রাস্তা বন্ধ থাকায় কালিম্পং অথবা পেশকের পথ ঘুরে দার্জিলিং হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছচ্ছে কিছু গাড়ি।

আরও পড়ুন: বৈঠকে সব্যসাচী, সৌজন্যের আবহে জল মাপল দু’পক্ষ

পরিস্থিতি যথেষ্ট সঙ্গীন ডুয়ার্সেও। পাহাড়ে এবং ভুটানে ভারী বৃষ্টির জন্য উপচে পড়ছে ডুয়ার্সের নদীগুলির জল। জলসীমা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলের তোড়ে জায়গায় জায়গায় বাঁধ ভেঙে পার্শ্ববর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার যাওয়ার রেলপথে সেতু জলের তোড়ে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় রেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘিস নদীর উপর নবনির্মিত রেলওয়ে আন্ডারপাসের স্তম্ভ ধসে রেললাইনের মাটি সরে গিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই রেল সেতু মেরামতির কাজ চলছে। ওই পথের সমস্ত ট্রেন জলপাইগুড়ি দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মাল ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত করেছে এলাকা। জলবন্দি প্রায় ৭০০ পরিবার। জেলা প্রশাসন ব্লক স্তরের আধিকারিকদের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তৈরি থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।

(মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহউত্তরবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবরপড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন