নিরাপত্তায় ফাঁক ছিল অনেক, ধরা পড়ছে এখন

প্রাথমিক তদন্তে বৃহস্পতিবারের সভার নিরাপত্তা বন্দোবস্তে অন্তত পাঁচটি ফাঁক নজরে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। রাজ্য পুলিশের এডিজি পদমর্যাদার এক জন অফিসার কলকাতা থেকে রায়গঞ্জে পৌঁছে তদন্তে নেমেছেন। এসএসইউয়ের তরফেও পৃথক তদন্ত হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

নেত্রী: বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

মুখ্যমন্ত্রীর সভার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁকফোকর ছিল একগুচ্ছ! হেমতাবাদে দুই বোনের মঞ্চে উঠে পড়ার ঘটনা সেই ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে!

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে বৃহস্পতিবারের সভার নিরাপত্তা বন্দোবস্তে অন্তত পাঁচটি ফাঁক নজরে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। রাজ্য পুলিশের এডিজি পদমর্যাদার এক জন অফিসার কলকাতা থেকে রায়গঞ্জে পৌঁছে তদন্তে নেমেছেন। এসএসইউয়ের তরফেও পৃথক তদন্ত হচ্ছে।

সরকারি সূত্রের খবর, সভাস্থলের যেখানে কন্যাশ্রী ও অন্যান্য সুবিধাপ্রাপক ছাত্রছাত্রীরা বসেছিলেন, তার সামনে বাঁশের ব্যারিকেড ছিল। রাবেয়া খাতুন ও তাঁর দিদি আসনুরা পড়ুয়াদের টপকে বাঁশের ব্যারিকেডের ফাঁক গলে সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় ঢুকে পড়েছিলেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রথম ফাঁক সেখানেই। বাঁশের ব্যারিকেডের সামনে জেলা ও রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার-কনস্টেবলদের জনতার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে নজর রাখার কথা। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে না বলে পড়ুয়ারা হইচই করেন। গোয়েন্দারা খানিকটা সরে গিয়েছিলেন বলেই এমন হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

দ্বিতীয়ত, সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ঢুকে দুই বোন দু’দিকে যখন যাচ্ছেন, সে সময়ে মঞ্চে ও দু’পাশে থাকা অফিসার, গোয়েন্দাদের তা নজর পড়ার কথা। সেটা হয়নি কেন, তা দেখছেন তদন্তকারীরা। তৃতীয়ত, মঞ্চে ওঠার দু’টি সিঁড়ির মুখে দু’দিকে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তা, উত্তরবঙ্গের আইজি-সহ প্রথম সারির অফিসারদের সাধারণত দাঁড়াতে দেখা যায়। ঘটনার সময়ে উত্তরবঙ্গের প্রথম সারির অফিসারেরা দু’দিকে সিঁড়ির মুখে কে কোথায় ছিলেন, তা-ও দেখা হচ্ছে। চতুর্থত, দু’দিকের দু’টি সিঁড়িতে এসএসইউয়ের দু’জন করে মহিলা কম্যান্ডো থাকার কথা। অচেনা কেউ সিঁড়িতে ওঠার চেষ্টা করলেই তাঁদের রোখার কথা। যে দিকে রাবেয়া উঠেছিলেন, সে দিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন কী করছিলেন, তা-ও তদন্তের আওতায়।

গত বছরের জুন মাসে দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী চিড়িয়াখানার সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে ওই রাস্তায় আচমকা বিমল গুরুঙ্গ কনভয় নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুরক্ষা বন্দোবস্ত নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার কয়েক দিন পরে তৎকালীন নিরাপত্তা অধিকর্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ বার উত্তরবঙ্গের কোন পুলিশকর্তা বা কর্মীদের উপরে খাঁড়া নামতে পারে, তা নিয়ে পুলিশের মধ্যেই চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি থেকে বাগডোগরা যাওয়ার সময়ে নজরদারি ছিল কয়েক গুণ বেশি। গোটা যাত্রাপথে দাঁড়ানো লোকজনের স্থির ছবি ও ভিডিও ফুটেজ তোলা হয়েছে। উত্তরকন্যার অদূরে এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করতে যাবেন বলে বায়না করছিলেন! তাঁকে সঙ্গে সঙ্গেই সরিয়ে দেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন