ভ্যাটের বদলে জিএসটি, আয় সেই তলানিতেই

জিএসটি চালু হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। নীতিগত আপত্তি না থাকলেও তাড়াহুড়োয় নতুন কর চালু নিয়ে প্রথম দিন থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৬:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছিল ভ্যাট, বদলে হল জিএসটি। কিন্তু বদলালো না রাজ্যের রোজগারের রাস্তা।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের পেশ করা ২০১৮-১৯ সালের বাজেট বলছে, বছর শেষে জিএসটি বাবদ যে পরিমাণ আয় হবে, তা আগেকার ভ্যাটের চেয়ে বেশি কিছু নয়। বরং ভ্যাট জমানায় রাজ্যের আয় রাজ্যের ঘরেই থাকত, জিএসটির একটি বড় অংশ আটকে থাকছে কেন্দ্রের ঘরে। ফলে সবমিলিয়ে ভুগতে হচ্ছে রাজ্যকে।

জিএসটি চালু হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। নীতিগত আপত্তি না থাকলেও তাড়াহুড়োয় নতুন কর চালু নিয়ে প্রথম দিন থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছ’মাসের মধ্যে সেই করব্যবস্থার বহুবিধ পরিবর্তন হয়েছে। এখন রাজ্যের ঘরে গড়ে আসছে মাসে ১৭০০/১৮০০ কোটি টাকা। কিন্তু আগামী অর্থ বর্ষের বাজেট পেশ করে অমিত মিত্র যে হিসাব দেখিয়েছেন তাতে জিএসটি বাবদ মোট আয় হতে পারে ২৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ সালে ভ্যাট বাবদও প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা রোজগার হয়েছিল। এর উপরে ছিল মদের কারখানা থেকে অতিরিক্ত বিক্রয় কর। পেট্রল-ডিজেল থেকেও বছরে অন্তত ৫০০০ কোটি টাকা বিক্রয় কর আদায় করেছে রাজ্য।

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, তা হলে নতুন কর ব্যবস্থা করে লাভ কী হল? অর্থ কর্তাদের মতে, ভ্যাট হোক বা জিএসটি করের আদায় নির্ভর করে রাজ্যের আর্থিক কারবার এবং সামগ্রিক অর্থনীতির বহরের উপর। এ রাজ্যে বড় শিল্প-বিনিয়োগ নেই। ফলে বিরাট অঙ্কের আয় হবে এমন ভাবা অমূলক। তাছাড়া সামগ্রিক আর্থিক পরিস্থিতির যা অবস্থা, তাতে গড়ে ৮/৯ শতাংশ কর-বৃদ্ধি যথেষ্ঠ। সেই কারণেই জিএসটি চালু হওয়ার পর আহামরি বৃদ্ধি হবে না ধরে নেওয়া হচ্ছে। বরং পরিত্রাণের একমাত্র উপায় থাকছে ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্রের থেকে
প্রাপ্য টাকা।

অথচ জিএসটির শুরুতে রাজ্যে অতিরিক্ত দেড় লক্ষ ব্যবসায়ী পঞ্জিকরণ করেছিলেন। তাঁদের থেকে বাড়তি কর পাওয়ার আশা জেগেছিল। এ রাজ্যে উৎপাদন শিল্প কম, কিন্তু পরিষেবামূলক কর্মকাণ্ড বেশি বলে জিএসটির সুফল পাওয়া যাবে ধরা হয়েছিল। সেটাও বা মিলছে না কেন?

নবান্নের খবর, অন্য রাজ্য থেকে পণ্য আমদানি করে এনে এ রাজ্যে বিক্রি হলে তার জেরে রাজস্ব আদায় (আইজিএসটি) বাড়ার কথা ছিল। বাজেটে ২০১৮-১৯ সালে এই খাতে মাত্র ৯৯৬৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার অর্থ, পরিষেবা ক্ষেত্রেও রাজ্যের আর্থিক পরিসর ততটা
পোক্ত নয় বলেই ধরে নিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী।

অমিতবাবু অবশ্য বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আইজিএসটি-র টাকা আটকে রেখে নিজেদের কোষগার সামাল দিচ্ছে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যকে। জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের প্রাপ্য
প্রায় ৯০০ কোটি টাকা এখনও মেটায়নি দিল্লি। করকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, আইজিএসটি বাবদ প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা নানাবিধ কারণে কেন্দ্রের একটি বিশেষ তহবিলে পড়ে রয়েছে। সেই টাকার একাংশ রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি হলেই রাজ্যের ভাঁড়ার ভরবে। জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে সব রাজ্যই সেই
দাবি জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement