লিকুইডেশন নোটিস ঝুলল ডানলপে

অবশেষে লিকুইডেশনের নোটিস ঝুলল হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানায়। কারখানায় উৎপাদন বন্ধ আজ বহু দিন। বকেয়া রয়েছে কর্মীদের বেতন। এই পরিস্থিতিতে কারখানার সম্পত্তি বেচে তা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য লিকুইডেশনের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সাহাগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

নজরে: ডানলপ সাহাগঞ্জ কারখানার গেটে ঝোলানো নোটিস। খুঁটিয়ে পড়ে দেখছেন জনৈক কর্মী। ছবি: সুশান্ত সরকার।

অবশেষে লিকুইডেশনের নোটিস ঝুলল হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানায়।

Advertisement

কারখানায় উৎপাদন বন্ধ আজ বহু দিন। বকেয়া রয়েছে কর্মীদের বেতন। এই পরিস্থিতিতে কারখানার সম্পত্তি বেচে তা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য লিকুইডেশনের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ নিয়ে শ্রম দফতর নিযুক্ত সার্টিফিকেট অফিসারের শুনানিতে কর্মীরা এলেও, কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিনিধি আসেননি। তারই জেরে কারখানার গেটে ওই নোটিস।

বকেয়া না-মেলায় কর্মীদের একাংশের হয়ে বছর কয়েক আগে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্র। সেই সূত্রে বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই কারখানাকে লিকুইডেশনে পাঠানোর জন্য। লক্ষ্য ছিল সেখানকার সম্পত্তি বেচে শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো। রাজ্য সরকার তাতে নড়েচড়ে বসে। সরকার নিযুক্ত সার্টিফিকেট অফিসার অমল সাহার কাছে শুনানিতে আসেন শ্রমিকেরা। সোমবার চুঁচুড়ায় ছিল নবম তথা শেষ দফার শুনানি। কিন্তু তাতে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ হাজির হননি। আর সেই কারণেই লিকুইডেশনের এই নোটিস।

Advertisement

ইতিমধ্যে অবশ্য ওই কারখানা অধিগ্রহণের জন্য বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছে রাজ্য সরকার। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকও জানিয়েছিলেন, বিলে রাষ্ট্রপতির সই হলেই সব কাজ শেষ হবে। এখন রাষ্ট্রপতির দফতরে কিছু প্রক্রিয়াগত কাজ চলছে।

কর্মীরা এত জটিলতায় ঢুকতে চান না। তাঁরা বকেয়ার দাবিতে অনড়। এখন সেখানকার ৩৫৪ জন কর্মী মাসে ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পাচ্ছেন। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত অন্তত দেড় হাজার শ্রমিক কারখানা থেকে তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির টাকা পাননি।

কর্ণধার পবন রুইয়া এখন জেল-হাজতে। কর্তৃপক্ষের তরফে কারখানা দেখভালের কেউ নেই। সই হচ্ছে না অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশনের কাগজও। কারখানার সিটু সম্পাদক বিতান চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। অনেক কর্মী মারা গিয়েছেন। তাঁদের পরিবারও বকেয়া পাননি। ডানলপের সম্পত্তি বেচে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর কথা বলেছে আদালত। কিন্তু কারখানায় আছেটা কী? সব যন্ত্রপাতি তো চুরি হয়ে গিয়েছে। বেচে দেওয়া হয়েছে শ্রমিক আবাসন পর্যন্ত।”

লিকুইডেশন প্রসঙ্গে জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, “কর্মীরা দ্রুত বকেয়া পেলেই মঙ্গল।” চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে কর্মীরা যাতে তাড়াতাড়ি বকেয়া পান, সেটাই কাম্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন