জনসভার মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় আপনাদের প্রবল রাগ হয়েছিল। সেই রাগই আমাদের শক্তি জুগিয়েছে। যারা পহেলগাঁও ঘটিয়েছে, তাদের সিঁদুরের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। কল্পনাই করতে পারেনি পাকিস্তান। অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি। তিন বার ঘরে ঢুকে মেরেছি। হামলা হলে শত্রুদের আবার বড় মূল্য দিতে হবে।’’
মোদী বলেন, ‘‘আদিবাসীদের কথা ভাবে না তৃণমূল সরকার। আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করার কথা ভাবা হয়েছিল, প্রথম তৃণমূলই সরকারই তার বিরোধিতা করেছিল।’’
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মোদী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের অনেক বড় বড় প্রকল্প এ রাজ্যে কার্যকর করা হয় না। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এখানে চালু হতে দেওয়া হয়নি। এখানকার লোকেরা বাইরে গেলে ওই প্রকল্পের সুবিধা পান না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ বাড়ি পেতে পারতেন। কিন্তু এখানে তা হতে দেওয়া হল না। তা করতে দিল না এখানকার নির্মম সরকার।’’
শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের দুর্নীতির জন্য এখানকার বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এঁরা নিজেদের ভুল মানতেই চাইছেন না। উল্টে আদালতকে আক্রমণ করছেন এঁরা। তৃণমূল সরকার অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। বিজেপি এটা হতে দেবে না।’’
বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় মারাত্মক দুর্নীত চলছে। এখানকার শাসকদল গরিব মানুষ প্রাপ্য ছিনিয়ে নিতে চাইছে। বাংলা অনেকগুলি সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এক, হিংসা ও অরাজকতা। দুই, মায়েদের উপর অত্যাচার। তৃতীয়, কর্মহীনতা। চতুর্থ, দুর্নীতি। এখানে গরিবের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে রাজনীতি করছে শাসকদল।’’
আলিপুরদুয়ারের জনসভায় বলতে শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ-মালদহে যা হয়েছে, তা বর্তমান সরকারের নির্মমতার উদাহরণ। এখানকার সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত। প্রতি বার আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। এ ভাবে কি কোনও সরকার চলতে পারে?’’
রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের ঘটনার মিল রয়েছে। এই সরকারকে আমাদের উৎখাত করতেই হবে। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই তা হবে।’’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জনসভায় বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনে তৃণমূল সরকারকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে চাই বিজেপির সরকার। নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আজ দেশের জন্য বাংলাকে বাঁচাতে হবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপোর সরকারকে উপড়ে ফেলতে হবে। এটাই এই সভার সংকল্প হওয়া উচিত। এই বাংলার তিন জনকে পহেলগাঁওয়ে খুন করা হয়েছে ধর্ম দেখে। নরেন্দ্র মোদী তার বদলা নিয়েছেন।’’
গ্যাস প্রকল্পের শিলান্যাস করে আলিপুরদুয়ারের জনসভার মঞ্চে পৌঁছোলেন নরেন্দ্র মোদী।
আলিপুরদুয়ারে সিটি গ্যাস বিতরণ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র। এই প্রকল্পের জন্য ১০১৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এতে রাজ্যের আড়াই লাখ পরিবার উপকৃত হবে। দেশের ৫৫৫টি জেলা সিটি গ্যাস প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়। দেশের কোটি কোটি মানুষ এর সুবিধা পান।
আলিপুরদুয়ারে জনসভার আগে সিকিমে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে বাগডোগরা বিমানবন্দরে তিনি অবতরণ করার পর দেখা যায়, আবহাওয়া খারাপ। সেই কারণেই সিকিম যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। বাগডোগরা থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিকিমের কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর আবহাওয়া অনুকূল হলে কপ্টারে রওনা দেন আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশে।
আলিপুরদুয়ারে দুপুর ২টো নাগাদ পৌঁছোনোর কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা আগেই তিনি সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুরে’র পরে বিজেপি যখন জাতীয়তাবাদের আবেগ উস্কে সর্বত্র প্রচার চালাচ্ছে, তারই মধ্যে উত্তরবঙ্গে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে তিনি জনসভা করতে চলেছেন। তার আগে একটি সরকারি অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।