রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেনকে তৃণমূল প্রার্থী করার পরই সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এ বিরোধ দেখা দিয়েছে।
আদিবাসী সংগঠনের নেতার স্ত্রীকে ঝাড়গ্রাম লোকসভায় প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর তাতেই অসন্তোষ সেই আদিবাসী সংগঠনে। যদিও তৃণমূলের দাবি, ভোটের অঙ্কে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।
সংগঠনের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেনকে তৃণমূল প্রার্থী করার পরই সাঁওতালদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এ বিরোধ দেখা দিয়েছে। সংগঠনের ঝাড়গ্রাম তল্লাটের নেতাদের একাংশ অবিলম্বে রবিনকে ‘জেলা পারগানা’র পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। রবিনও মানছেন, ‘‘স্ত্রীর হয়ে প্রচারে গেলে আমাকে সামাজিক পদ ছাড়তে হবে। ২১ মার্চ সংগঠনের বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’
বৃহস্পতিবার গোপীবল্লভপুরের ছাতিনাশোলে সংগঠনের ঝাড়গ্রাম তল্লাটের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসেছিলেন। হাজির ছিলেন ৮০ জন ‘মাঝি বাবা’ (গ্রাম, অঞ্চল ও ব্লক স্তরের সামাজিক নেতা)। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েই রবিনকে অপসারণের কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার মাঝি পারগানা মহলও রবিনকে অপসারণের দাবিতে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে লিখিত বার্তা দিয়েছে।
তবে তৃণমূলের দাবি, এই বিরোধ ভোটে কোনও প্রভাব ফেলবে না। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার কথায়, ‘‘চরম হতাশা থেকে কিছু মানুষ বিরুদ্ধ প্রচার করছেন। যাঁরা এখন বিরোধিতা করছেন, ভোটের পরে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’
আদিবাসী সমাজের আপত্তিটা ঠিক কোথায়? আদিবাসী নেতারা জানান, মাঝি পারগানা মহল বরাবর রাজনীতির ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলেছে। আদিবাসীদের দাবি নিয়ে আন্দোলনও হয়েছে অরাজনৈতিক ভাবেই। সংগঠনের ঝাড়গ্রাম তল্লাটের নেতা সূর্যকান্ত মুর্মু বলেন, ‘‘জেলা পারগানার স্ত্রী যদি শাসকদলের রাজনীতি করেন, তাহলে সমাজের কী হবে! বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায় না। আমরা তাই রবিনবাবুর পদত্যাগ দাবি করছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ব্যক্তিস্বার্থেই এ সব হচ্ছে। তবে শুক্রবার দিনভর চেষ্টা করেও মাঝি পারগানা মহলের সর্বভারতীয় সুপ্রিমো (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল।